ইনসাইড পলিটিক্স

টুকুকে ‘স্টুপিড’ বললেন তারেক


প্রকাশ: 28/09/2022


Thumbnail

কদিন আগে রাজধানীর হাজারীবাগে বিএনপির সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেই সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল মাহমুদ টুকু। ওই অনুষ্ঠানে ইকবাল মাহমুদ টুকু কিছু গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য বলেন। তিনি বলেছেন যে, তাহলে কি আওয়ামী লীগের সাথে জামায়াতের পরকীয়া চলছে? এই বক্তব্য অনুষ্ঠানের সভাস্থলেই অনেকের মধ্যে অস্বস্তির কারণ হয়ে দাড়ায়। কেউ কেউ তখনই মুখ চাওয়া চাওয়ি করে এবং একে অন্যের সঙ্গে এই নিয়ে কথাবার্তা বলে। মঞ্চে উপস্থিত বিএনপির কয়েকজন নেতাও এর প্রতিবাদ করেন। এই বক্তব্যের পরপর জামায়াতের পক্ষ থেকে একটি আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়া হয়েছে এবং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যের ওই বক্তব্যকে অশালীন বলে অভিহিত করা হয়েছে। বিএনপির মধ্যে যারা জামায়াতপন্থী আছেন, তারাও এই বক্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তারা ইকবাল মাহমুদ টুকুকে টেলিফোন করে এ ধরনের বক্তব্যে না রাখার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। এ ধরনের বক্তব্য কেন রাখা হয়েছে এ ব্যাপারে জানতে চেয়েছেন। 

বিএনপিতে জামায়াতপন্থী নেতাদেরই কেউ কেউ টুকুর এই বক্তব্য লন্ডনে পাঠিয়েছেন। অবশ্য বিএনপির কোন কোন নেতা বলছেন কোন নেতাকে লন্ডনে বক্তব্য পাঠানোর প্রয়োজন নেই। বরং তারেক জিয়া নিজেই  কোথায় কি হচ্ছে সে সম্পর্কে খোঁজখবর রাখেন এবং তিনি নিজেই টুকুর বক্তব্য সম্পর্কে জেনেছেন। জানার পর তিনি গতকাল ইকবাল মাহমুদ টুকুকে টেলিফোন করেছেন বলে একাধিক বিএনপির সূত্র নিশ্চিত করছে। টেলিফোনে টুকুর সঙ্গে তারেক জিয়ার ১৫ মিনিট কথবার্তা হয় এবং এই ১৫ মিনিটের আলাপচারিতায় তিনি টুকুকে তীব্র ভাষায় গালমন্দ করেছেন এবং এক পর্যায়ে ষ্টুপিড বলেছেন। বিএনপির একাধীক সূত্র নিশ্চিত করেছে। এই ধরনের বক্তব্য ভবিষ্যতে রাখা হলে তাকে স্থায়ী কমিটিতে রাখা হবে কিনা এ ব্যাপারেও সতর্ক করেছেন তারেক জিয়া। উল্লেখ্য যে ১৯৯৭ সাল থেকেই জামায়াত বিএনপির রাজনৈতিক অংশীদার। ২০০১ এর নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বে চার দলীয় জোট অংশগ্রহন করেছিল। ওই নির্বাচনের পর  জামায়াতকে নিয়েই মন্ত্রীসভা গঠন করে বিএনপি। দুইজন যুদ্ধাপরাধীকে মন্ত্রিসভার দুটি পদ দেয়া হয়। 

২০০৬ পর্যন্ত ওই সরকারে আমলে জামায়াতের ব্যাপাক উত্থান ঘটে। ওয়ান ইলেভেনের পর বিএনপির নেতারা নানা রকমভাবে হয়রানি এবং গ্রেফতারের মুখোমুখি হলেও সেই সময় জামায়াতের কোন নেতার গায়ে আচরণ পড়েনি। বরং এই সময় জামায়াত নিজেদের সংগঠনকে আরও  নিস্তৃত করে। এরপর ২০০৮ এর নির্বাচনে জামায়াত বিনপির জোট অব্যাহত থাকে। ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিএনপির পদাঙ্গ অনুস্মরণ করে জামায়াত নির্বাচন বর্জন করে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া একাধিকবার বক্তৃতায় বলেছেন যে, জামায়াতের সঙ্গে তাদের রক্তের সম্পর্ক। বিনপির আরেক নেতা বলেছেন জামায়াত আর বিএনপি হল আপন দুই ভাইয়ের মত। সাম্প্রতিক সময়ে নানা কৌশলগত কারণে বিএনপির সাথে জামায়াতের টানা-পোড়েন চলছে। তবে অনেকেই মনে করেন যে, এটি একটি রাজনৈতিক কৌশল। জামায়াতের ব্যাপারে বিভিন্ন মহলের আপত্তির কারণেই এখন বিএনপি জামায়াতের থেকে প্রকাশ্যে দূরে রয়েছে। কিন্তু গোপনে তাদের সম্পর্ক রয়েছে। এরকম পরিস্থিতিতে বিএনপির একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতার এ ধরনের বক্তব্য দুই ভাইয়ের সম্পর্কের মধ্যে একটি বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি করছে। এই অবস্থায় জামায়াতের নেতারা বিএনপির মুরুব্বিদের কাছে নালিশ করেছেন। তার ফলেই টুকুকে তারেক জিয়ার গালমন্দ শুনতে হল বলে বিএনপির বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭