ইনসাইড থট

অর্থনীতিবিদদের অর্থনৈতিক জ্ঞান শূণ্য


প্রকাশ: 22/11/2022


Thumbnail

আমাদের দেশের গ্রামে প্রথম কথাটির খুব প্রচলন শুনেছি। এখন আসলে দেখছি শুধু গ্রামে নয়, ঢাকা শহর থেকে শুরু করে সবজায়গায় কথাটা কোনো না কোনোভাবে প্রচলিত। গ্রামে প্রতিবেশীর কোন সন্তান খুব জোরে লেখাপড়া করলে শব্দ আসে। তখন আওয়াজ শুনে প্রতিবেশী হিংসাবসত বলে যে, যতই লেখাপড়া করুক পরীক্ষায় পাশ করবে না। শেষে পরীক্ষা আসলো। পরীক্ষায় বেশ ভালো নাম্বার নিয়ে পাশ করল। পরে আরও লেখাপড়া করলো। তারপরে বলে লেখাপড়া করলে কি হয়, এরকম অনেকেই ডিগ্রী নিয়ে থাকে কিন্তু তারা চাকরী পায় না। ওই প্রতিবেশীর ছেলে বা সন্তান চাকরীও পেলো। তখন বলে চাকরী পেলেই কি হবে বেতন পাবে না। শেষে দেখা গেলো বেতন পেলো। তখন বলে বেতন পেলে কি হয়, ওই টাকা দিয়ে জিনিস কিনতে পারবেনা। তারপরে দেখা গেলো একসময় গরীব বাবার জন্যে একটু নতুন ঘর তুলে দিলো। অর্থাৎ প্রতিবেশীর কোনো ভবিষ্যতবাণী কাজে আসলো না। আমাদের দেশের বুদ্ধিজীবী অর্থনীতিবিদরা মোটামুটি ওই গ্রামের প্রতিহিংসাপরায়ণ প্রতিবেশীদের মতো। পাঠক লক্ষ করবেন, আমি বুদ্ধিজীবী অর্থনীতিবিদদের কথা বলছি। তাদের হয় কি, মগজে বুদ্ধি বিশেষ করে কু-বুদ্ধি বেশী রাখতে গিয়ে অর্থনীতির জ্ঞ্যান টা চাপা পরে গেছে। আছে শুধু কি করে এই দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার অর্থনীতিরি বিরুদ্ধে কথা বলা যায়।

একটু উদাহরণ হিসেবে বলি, সম্প্রতি আমাদের দেশে যখন আইএমএফ এর প্রতিনিধি দল আসে তার আগে দুটি পত্রিকা এবং এই সকল বুদ্ধিজীবী অর্থনীতিবিদরা বিভিন্নভাবে এবং অর্থনীতি যারা বুঝেনা তারাও অনেক লেখালেখি করলো যে, আইএমএফ শেষ পর্যন্ত আসবে না। আসলে পরেও কঠিন কঠিন শর্ত দিবে। তারা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত কোনো লোন দিবেনা। শেষ পর্যন্ত দেখা গেলো বাংলাদেশের সাথে আলাপ করে উভয় পক্ষের কাছে গ্রহণযোগ্য সেরকম একটি ব্যবস্থায় আইএমএফ লোন দিলো। এখন আবার ওয়ার্ল্ড ব্যাংকও আসছে। অর্থাৎ, এই অর্থনীতিবিদদের ভবিষ্যতবাণী খুব একটা কাজে লাগেনি। তারপরে যখন লোন দেয়া হলো, তখন যা বললো তা শুনেও একটু হাসি লাগে। তারা বললো, প্রথম কিস্তি শোধ দিতেই অসুবিধা হবে। আরে, লোন পেয়েছে, প্রথম কিস্তি কখন ডিউ হবে- আগে তো আমরা প্রথম কিস্তি পাই তারপর না প্রথম কিস্তি শোধ দেয়ার প্রশ্ন উঠবে। মানে এদের হয়তো মাথা খারাপ হয়ে গেছে। যে কেনো তারা দার্শনিক শেখ হাসিনাকে কোনোভাবে দমিয়ে রাখতে পারছেনা। যখন দেখা গেলো রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হতে যাচ্ছে, স্বাভাবিকভাবে বিশ্ববাসীর সাথে বাংলাদেশেও এর প্রভাব পড়বে। যেমন আমাদের গার্মেন্ট যারা কিনবে তাদের যদি নিজেদেরই অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো না থাকে তবে তারা স্বাভাবিক এর চেয়ে কম ক্রয় করবে। তাতে আমাদের ফরেন এক্সচেঞ্জ কমতে বাধ্য। আমাদের যেসকল প্রবাসী কর্মীরা বিদেশে কাজ করে, সেখানে যদি অর্থনীতির মান কমে যায় তাহলে তারা আগের মত কর্মীও নিতে পারবেনা। এসকল তো স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। সেখানে দার্শনিক শেখ হাসিনা কি করলেন? দেখা গেলো অত মারফতি কথায় না গিয়ে যেটা সরকার প্রধান হিসবে বলা উচিত সকল দেশবাসীর উদ্দেশে বিশ্বের অবস্থা কি, বাংলাদেশের কি অবস্থা হবার সম্ভাবনা আছে সে কথা বিস্তারিত বললেন। এটি হচ্ছে তার রাষ্ট্র পরিচালনার পদ্ধতি। যে জনগণকে সাথে নিয়ে এবং জনগণের সহায়তা নিয়েই গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র চালাতে হয়। তিনি একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা বললেন। গুরুত্বপূর্ণ কথাটি হচ্ছে, ‘’এক ইঞ্চি জায়গাও ফাঁকা রাখবেন না। সেখানে আপনারা চাষাবাদ করুন।‘’ যাতে আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ থাকি এটার উপর জোর দিলেন তিনি। অর্থাৎ, যদি ভবিষ্যতে কোণরুপ এমন কোনো বিপদে বিশ্ববাসী পরে, তখন যেনো আমরা কোনরকম খাদ্য ঘাটতিতে না পরি কিংবা কিছুটা ঘাটতিতে পরলেও আমরা যেনো খেয়ে-পড়ে বাচতে পারি। এটার অর্থ এই না যে দেশে দুর্ভীক্ষ হয়ে যাচ্ছে।

খাদ্যের দিক থেকে বাংলাদেশে আমাদের যে খাদ্যাভ্যাস- আমি আগেও লিখেছি এবং বলেছি যে যেভাবে দার্শনিক শেখ হাসিনা তার দর্শন দিয়ে দেশ চালাচ্ছেন তাতে খাদ্য ঘাটতিতে পড়ার সম্ভবানা একদম নাই বললেই চলে। যেমন সম্প্রতিকালে আমি কমিউনিটি ক্লিনিকের কর্মী নিয়োগ দিয়েছি। নেত্রী নির্দেশ দিয়েছিলেন, কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়া যেনো শতভাগ সৎ হয়। ৯৯.৯৯% না, শতভাগ সৎ হতে হবে। আমি অত্যন্ত গর্বের সাথে বলতে পারি, আমার সকল সহর্কমীরা অনকে পরশ্রিম করছেনে। বিশেষ করে স্বাস্থ্য সচিব সেবা . আনোয়ার থেকে শুরু করে আমাদের এমডি তুলসি রঞ্জন সাহা এবং আরো আমার সকল সহকর্মীৎ অত্যন্ত দক্ষতা এবং সততার সাথে নেত্রীর কথা অনুযায়ী সব করতে পেরেছি। এটার করার কারণ হচ্ছে দার্শনিক শেখ হাসিনার নির্দেশনা। এর সাথে তিনি পদ্ধতিগত কিছু বিষয়েও আলোচনা করেছেন। আমার সাথে তার যখন দেখা হয়, তিনি বলেছিলেন যে শুধু নিজে সৎ থাকলে চলবেনা। কার্যপদ্ধতি এবং আপনার অধীনে যারা কাজ করছেন তারাও সততার সাথে কাজটা করলো কি না সেই দায়িত্বও আপনার ঘারে পড়ে। সেইটাই মনে রেখেছি। এই নিয়োগ পরীক্ষার আগেই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে আমাদের যেহেতু আমাদের প্রায় ১৪ হাজারের বেশী কমিউনিটি ক্লিনিক আছে এবং কমিউনিটি ক্লিনিকের সিস্টেম টাই এমন যে একজন কমিউনিটি ক্লিনিকে থাকে আরেকজন বাড়ি-বাড়ি গিয়ে তাদের বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবা কিংবা পরিবার পরিকল্পনা নিয়ে উপদেশ দেয়। সুতরাং প্রত্যেক বাড়ির আনাচে-কানাচে কোনো জায়গা আছে কি না যেখানে খাদ্য উৎপাদন করা যায় সেখানে আমরা গাছ লাগাবো। এই দার্শনিক শেখ হাসিনার বক্তব্য অনুযায়ী আমরা একটা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি যে কমিউনিটি ক্লিনিকে শুধু সেবা দিবোনা, যারা যারা কমিউনিটি ক্লিনিকের বিভিন্ন বাড়ি বাড়ি যায় সেখানে যদি কিছু জায়গা ফাঁকা থাকে সেখানে আমরা এই কাজটি করবো। আমরা ঠিক করেছি এই কর্মসূচি শুরু করার আগে আমরা টুঙ্গিপাড়া যাবো। সেখানে সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যেখানে ঘুমিয়ে আছেন সেখানে শ্রদ্ধা জানিয়ে আমাদের কাজটি টুঙ্গিপাড়ার কাছেই যে কমিউনিটি ক্লিনিকটা দার্শনিক শেখ হাসিনা প্রথম উদ্বোধন করেছিলেন সেখানে যেয়ে লোককে উদ্বুদ্ধ করবো, সেখানে যদি কোনো ফাঁকা জায়গা থাকে তাহলে সেখানে গাছ লাগাবো। তারপর বঙ্গমাতার নামে যে হাসপাতাল শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব চক্ষু হাসপাতাল প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান সেখানেও স্টাফ কোয়ার্টারের এখানেও জায়গা রয়েছে। সেখানকার পরিচালকের সাথে আমার কথা হয়েছে। তারা সেখানেও আমাদের জন্য জায়গা মার্ক করবেন এবং তারাও এটাকে আন্দোলন হিসেবে গ্রহণ করবেন। শেখ আশিনা টিএনও কে বলেছেন তারা করবেন, যুবলীগকে আহ্বান করেছেন, ছাত্রলীগরা করবেন। তাদের পাশাপাশি আমরা যারা কমিউনিটি ক্লিনিকে আমরাও করবো। সকলে মিলে এই যে দেশবাসীকে একতাবদ্ধ করতে পারছেন যাতে আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ থাকি। বিশ্বের একটা কঠিন পরিস্থিতিতেও এই দর্শনটা তিনি যদি আগে থেকেই আমাদের মাঝে না জাগিয়ে দিতেন,  আগের থেকে না পরিষ্কার ভাবে এবং উনিতো নির্দেশ দিয়েছেন এক ইঞ্চি জায়গা যেনো ফাঁকা না থাকে। উনার কথার ভেতরে কোনো গ্যাপ নাই। আমাদের বুদ্ধিজীবী অর্থনীতিবিদদের মত না। যে তারা সবই বুঝেন আল্লাহর রহমতে, শুধু অর্থনীতিটা একটু কম বুঝেন।

আমার মনে হয় বাস্তব অর্থনীতির সাথে এদের কোনো যোগাযোগও নেই। কারণ হলো, এসি রুমে বসে বক্তব্য দেন। বিদেশ থেকে টাকা আসে, বড় বড় কথা বলেন এবং উনারা ভালো রিপোর্ট লেখতে পারেন। দেশের ক্ষতি করার জন্যে আবার তারা আলাদা পিএইচডি পাবার অধিকারী। তারা নিশ্চয়ই ডক্টরেট পাবেন। যেমন পদ্মা ব্রীজ বন্ধ করার জন্য চেষ্টা করেছিলেন। কেনো দেশে দূর্ভীক্ষ হচ্ছেনা এইটা নিয়ে তাদের ঘুম হচ্ছনা। কেনো নির্বাচনের আগে দেশে বিরোধী দলকে মাঠে এই দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ব্যবস্থা নিলেন যাতে তারা নির্দ্বিধায় সভা-সমিতি করতে পারে, জনগণকে তাদের কথা জানাতে পারে। নির্বাচনে যেনো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড হয় সেই ব্যাপার নিশ্চিত করা অবশ্যই ইলেকশন কমিশনের দায়িত্ব। কিন্তু তার সাথে সরকারেরও দায়িত্ব আছে। সরকারের দায়িত্ব কিন্তু সরকার পালন করে যাচ্ছে সরকারপ্রধান দার্শনিক শেখ হাসিনার নের্তৃত্বে। আমরা পত্র-পত্রিকায় দেখেছি ইলেকশন কমিশনও তাদের দায়িত্ব পালনে তাদের সাধ্য অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন। সুতরাং আগামী নির্বাচন সঠিক সময়ে ও সঠিকভাবেই হবে। এবং আমি আগেও বলেছি , এখনো বিশ্বাস করি পরিশেষে সব দলই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। আর যদি কেউ কারো অন্য কোনো মতলবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে সেটা অবস্যই তাদের নিজস্ব দলের সিদ্ধান্ত। তবে সেই সিদ্ধান্তের সম্ভাবনা কম কারণ হল তারা দলের নামে না হলেও অনেকেই দল থেকে বের হয়ে কিংবা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে দাড়াবেন। নির্বাচন এইবার প্রতিদ্বন্দ্বীতামূলক হবে। অনেকের ধারণা ছিলো যে নৌকা প্রতীক পেলেই নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে যাবো সেটা আর সম্ভব না। জনগণ কাকে নির্বাচিত করবে সেটার মালিক। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক বার বার এবং খুবই স্পষ্টভাবে তার দলের লোক থেকে শুরু করে সমস্ত দেশবাসীকে জানিয়ে দিয়েছেন। এখানে শুধু আওয়ামী লীগ সীমাবদ্ধ না। স্বতন্ত্র হউক কিংবা অন্য যে কোনো দল, নির্বাচনের পূর্বশর্ত হচ্ছে জনগণের আস্থা অর্জন করা। সেটা না হলে হবেনা। সুতরাং আমি মনে করি, এই সকল বুদ্ধিজীবি যে অর্থনীতিবিদ তাদের কুবুদ্ধিটা কমিয়ে অর্থনীতি সম্পর্কে একটু ঝালাই করে নেয়া দরকার। তারা তো আল্লাহর রহমতে খেয়ে পড়ে ভালোই আছেন, স্বাস্থ্যও ভালোই দেখা যায়। সুতরাং তারা যেনো তাদের বুদ্ধি কিছুটা হলেও দেশের কাজে ব্যবহার করেন। তারা যেহেতু বিদেশ থেকে টাকা পান  সেহেতু হয়তো একটা শর্ত থাকে যে সরকারকে যদি তারা সমালোচনা না করেন তাহলে তাদের অর্থ কমে যাবে।  তোমাদের দায়িত্ব হচ্ছে সরকারকে ভালো কাজে প্রশংসা করা না। তোমার দায়িত্ব হচ্ছে ছিদ্র খোঁজা। তো ছিদ্র তারা খোঁজ করুক ক্ষতি নেই। কিন্তু তার সাথে দেশ যে কঠিন সময়ে এগিয়ে যাচ্ছে এবং বিশ্বের অনেক দেশের চেয়ে ভালো অবস্থায় আছে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একথাটাও জনগণকে সবাই যেনো জানায় এবং সবারই এটা দায়িত্ব।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭