ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপির সঙ্গে জঙ্গিদের সম্পর্ক খতিয়ে দেখছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র


প্রকাশ: 23/11/2022


Thumbnail

সাম্প্রতিক সময় আদালত পাড়া থেকে প্রকাশ্য দিবালোকে দুই জঙ্গি ছিনতাইয়ের ঘটনা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। হলি আর্টিজনের পর বাংলাদেশ এ ধরনের একটি ঘটনা কীভাবে ঘটল তা নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলো আতঙ্কিত। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের যেন নতুন করে উত্থান না হয় সে ব্যাপারটি নিয়ে সবসময় সচেষ্ট বলে জানিয়েছে। আর এর প্রেক্ষিতে আদালত পাড়ার ঘটনার পর জঙ্গিবাদের উত্থান জঙ্গিদের বর্তমান অবস্থান এবং জঙ্গিদের সঙ্গে মূল ধারার রাজনৈতিক দলগুলোর সম্পর্ক কোন পর্যায়ে তা নিয়ে বিভিন্ন মহলের সঙ্গে মার্কিন দূতাবাসের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হচ্ছে, তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। আর এই সমস্ত তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে জঙ্গিদের সঙ্গে বিএনপির যোগসূত্র আছে কিনা সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে নিশ্চিত করেছে।

উল্লেখ্য যে এর আগেও বিএনপির সঙ্গে জঙ্গিবাদের সম্পৃক্ততার অভিযোগ পাওয়া যায়। ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অন্তত পাঁচটি ক্ষেত্রে বিএনপির সঙ্গে জঙ্গিদের সম্পর্কের প্রমাণ পেয়েছিল এবং সে সম্পর্কে তৎকালীন রাষ্ট্রদূত পররাষ্ট্র দপ্তরে বার্তাও পাঠিয়েছিলেন। যে পাঁচটি ক্ষেত্রে সেই সময়ে জঙ্গিদের সঙ্গে সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছিল তার মধ্যে রয়েছে:

১. জামায়াতের সঙ্গে জোট: জামাতকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি জঙ্গী সংগঠন মনে করে। বিশেষ করে জামায়াতের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবির মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী সংগঠন।

২. বাংলা ভাই এবং শায়খ আব্দুর রহমানের উত্থান: সেই সময় বাংলাদেশে জেএমবি এবং বিভিন্ন ইসলামি জঙ্গি সংগঠনগুলোর উত্থানের ঘটনার সঙ্গে বিএনপির সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া পেয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং একটি প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্র বলেছিল যে আওয়ামী লীগকে দমন করার জন্যই জঙ্গিদেরকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে বিএনপি।

৩. ১০ ট্রাক অস্ত্রের ঘটনা: ১০ ট্রাক অস্ত্রের ঘটনার সম্পর্কে ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পৃথক পৃথক প্রতিবেদন তৈরি করেছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদনে বলা হয় জঙ্গি এবং বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সহযোগিতা করার জন্যই এই অস্ত্র আমদানি করা হয়েছে এবং এই অস্ত্র আমদানির ঘটনার পিছনে ক্ষমতাসীন বিএনপি জামায়াতের মদদ ছিল বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছিল।

৪. তারেকের জঙ্গি কানেকশন: তারেককে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিসা দেয়নি। সেই সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল যে, তারেকের সঙ্গে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের যোগাযোগ রয়েছে।

৫. বিএনপির ভেতরে উগ্র মৌলবাদীদের আস্তানা: উগ্র মৌলবাদী বিভিন্ন ব্যক্তিরা বা বিএনপিতে জোরেশোরে আছে বলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছিল। বিশেষ করে সেইসময় যুদ্ধাপরাধের দায়ে দণ্ডিত সাকা চৌধুরী ও তার ভাই সহ বেশকিছু জঙ্গি ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর নাম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের প্রতিবেদনে দেয়া হয়েছিল।আবার ২০১৮ সালেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সঙ্গে জঙ্গিদের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পায়। এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলেছিল যে, জামায়াতের ২০ জনকে বিএনপি তার প্রতীক ছেড়ে দেয়ার মধ্যে দিয়ে প্রমাণ করেছে যে, বিএনপি জঙ্গি এবং সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোকে মদদ দিচ্ছে। তাছাড়া সেই সময় জঙ্গি সংগঠনগুলোর সঙ্গে বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ যোগাযোগের খবরও পাওয়া গিয়েছিল। এখন যখন আদালত পাড়া থেকে দুইজন জঙ্গিকে ছিনতাই করা হয়েছে, তখন এই ঘটনাটি বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট এর সাথে সম্পর্কিত কিনা, বিশেষ করে বিএনপি যখন আন্দোলন করছে তখন সরকারকে চাপে ফেলার জন্য জঙ্গিরা নতুন কোন নাশকতার ছক আঁকছে কিনা সে বিষয়টিও খতিয়ে দেখছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭