ইনসাইড পলিটিক্স

১০ ডিসেম্বর নিয়ে আওয়ামী লীগের কৌশল কি?


প্রকাশ: 29/11/2022


Thumbnail

আগামী ১০ ডিসেম্বর নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তাপ-উত্তেজনা ক্রমশই বাড়ছে। এই উত্তাপ-উত্তেজনার মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ কি কৌশল গ্রহণ করবে সেটাই এখন রাজনীতিতে বড় প্রশ্ন। লক্ষণীয় বিষয় হলো, আওয়ামী লীগ সভাপতির চিন্তাভাবনার সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতাদের চিন্তাভাবনার বিস্তর ফারাক পাওয়া যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি সুস্পষ্টভাবে বলে দিয়েছেন, সমাবেশে বাধা দেওয়া হবে না এবং ঢাকায় বিএনপির সমাবেশের আগে যেন পরিবহন ধর্মঘট না হয় সেটিও তিনি নিশ্চিত করতে বলেছেন। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী তাদের মহাসমাবেশ করার সুযোগ করে দেওয়ার জন্যই ছাত্রলীগের সম্মেলন দুইদিন এগিয়ে নিয়ে এসেছে যেন ছাত্রলীগের সম্মেলনের মঞ্চ ভাঙ্গাসহ মাঠ প্রস্তুত করার কাজের জন্য যথেষ্ট সময় পায় বিএনপি। কিন্তু বিএনপি এখন পর্যন্ত নয়াপল্টনে তাদের সভা করার জন্য অটল অবস্থানে রয়েছে। তারা বলেছে যে, পুলিশ অনুমতি না দিলেও তারা নয়াপল্টনেই তাদের মহাসমাবেশ করবে। এ নিয়ে রাজনীতিতে উত্তেজনা রয়েছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এই পরিস্থিতিতে তিনটি ভিন্ন ভিন্ন কৌশল নিয়েছে।

প্রথমত, আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুস্পষ্টভাবে চাইছেন যে, সমাবেশে যেন কোনো রকম বাধা না দেওয়া হয়, রাজনৈতিক সমাবেশ থেকে যেন কোনো অনভিপ্রেত ঘটনা না ঘটে যেখানে তৃতীয় শক্তি বা বিরাজনীতিকরণের শক্তি কোনো সুযোগ পায়। এজন্য তিনি রাজনীতির কর্মসূচি-পাল্টা কর্মসূচিকে সামনে আনতে চাইছেন। ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী যশোরে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন। আগামী ৪ ডিসেম্বর তিনি চট্টগ্রামের সমাবেশে ভাষণ দিবেন। ৭ ডিসেম্বর তার কক্সবাজারের সমাবেশে ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে। পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জেলা এবং বিভাগীয় শহরে প্রধানমন্ত্রীর যাবেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। প্রধানমন্ত্রী বিরোধীদলের কর্মসূচিতে বাধা দেওয়া নয় বরং রাজনৈতিক কর্মসূচির মাধ্যমে জনগণকে সচেতন করা এবং বিএনপি-জামায়াত জোটের সময় যে দুর্নীতি, অনিয়ম এবং সন্ত্রাস হয়েছে সেটি জনগণকে মনে করিয়ে দিতে চেয়েছেন। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী গত ১৪ বছরে যে বাংলাদেশের উন্নয়ন সেই উন্নয়নের একটা চিত্র জনগণকে আবার স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন। এটি হলো আওয়ামী লীগের প্রধান কৌশল।

কিন্তু ১০ ডিসেম্বরকে নিয়ে আওয়ামী লীগের ভিন্ন চিন্তাও রয়েছে। আওয়ামী লীগের মধ্যে যে দ্বিতীয় চিন্তাটি ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে রয়েছে শেষ পর্যন্ত যদি বিএনপি গায়ে পড়ে সংঘাত-সহিংসতা করতে চায়, নয়াপল্টনে সমাবেশ করতে চায় সেখানে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা কঠোর অবস্থানে যাবে এবং কোনো অবস্থাতেই নয়াপল্টনে সভা করতে দেয়া হবে না, এরকম একটি সিদ্ধান্ত সরকারের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে। সরকার কোনোভাবেই নতি স্বীকার করবে না। সরকারের একজন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী বলেছেন যে, বিএনপির অবস্থানটা খুব পরিষ্কার। তারা নয়াপল্টনে সমাবেশ করছে দুরভিসন্ধি বাস্তবায়নের জন্য। এটির পেছনে তাদের অন্য কোনো লক্ষ্য রয়েছে। আর এ কারণেই তারা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মত জনসভার মাঠ ছেড়ে পল্টনের রাস্তায় আসতে চাইছে।

তৃতীয়ত, আওয়ামী লীগের মধ্যে একটি কৌশল রয়েছে যে জনগণকে আগে থেকেই সচেতন করা এবং পাড়ায়-মহল্লায় পাল্টা কর্মসূচির মাধ্যমে একটি অবস্থান তৈরি করে রাখা যাতে করে বিএনপি মহাসমাবেশের নামে এক ধরনের অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে না পারে। বরং এই মহাসমাবেশের পাশাপাশি পাড়ায়-মহল্লায় এবং বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের শক্তি প্রদর্শনের জন্য সচেষ্ট রয়েছে ক্ষমতাসীন দলটি। তবে আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় কৌশল হলো কোনো অবস্থাতে যেন ১০ ডিসেম্বর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে না যায় এবং সহিংস না হয়ে ওঠে। আওয়ামী লীগ সহিংসতা এড়িয়ে রাজনৈতিক কর্মসূচির মধ্যেই ১০ ডিসেম্বরকে সীমিত রাখতে চায়।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭