ইনসাইড পলিটিক্স

১০ ডিসেম্বর: আওয়ামী লীগের সামনে ৫ চ্যালেঞ্জ


প্রকাশ: 01/12/2022


Thumbnail

আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশ ডেকেছে বিএনপি। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যেকোনো মূল্যে তারা পল্টনে সমাবেশ করবে। আর এ নিয়ে রাজনীতিতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ছে। আওয়ামী লীগের জন্য ১০ ডিসেম্বর একটি চ্যালেঞ্জিং সময়। এই ১০ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগ কিভাবে মোকাবেলা করবে, তার ওপর বাংলাদেশের রাজনীতির গতি-প্রকৃতি এবং ভবিষ্যৎ অনেকখানি নির্ভর করছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। আওয়ামী লীগের সামনে যে পাঁচটি চ্যালেঞ্জ রয়েছে তাহলো-

১. বিএনপির রাজনৈতিক উত্থান: বিএনপি যদি শেষ পর্যন্ত সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে না করে নয়াপল্টনে মহাসমাবেশ করতে পারে সেটি হবে বিএনপির আন্দোলনের একটি নৈতিক বিজয়। এর ফলে বিএনপি সরকারের ওপর আরও বড় ধরনের চাপ দিতে পারবে। আবার অন্যদিকে শেষ পর্যন্ত যদি সমাবেশ না করতে দেওয়া হয় এবং কোনো সহিংসতা হয়, সেটির দায়ও পড়বে আওয়ামী লীগের ওপর। ১০ ডিসেম্বর নিয়ে বিএনপি একটি রাজনৈতিক সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছে। বিএনপির এই রাজনৈতিক অবস্থান কিভাবে আওয়ামী লীগ মোকাবেলা করবে, সেটি এখন দেখার বিষয়।

২. সন্ত্রাস ও সহিংসতা মোকাবেলা করা: ১০ ডিসেম্বরকে ঘিরে সন্ত্রাস এবং সহিংসতার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে শেষ পর্যন্ত যদি নয়াপল্টনে বিএনপি তার সমাবেশ করার বিষয়ে অটল থাকে তাহলে রাজধানী ঢাকা শহরে বিভিন্ন রকম সন্ত্রাস-সহিংসতা ছড়িয়ে পড়তে পারে। এই সন্ত্রাস এবং সহিংসতা আওয়ামী লীগ সরকার কিভাবে মোকাবেলা করবে সেটি দেখার বিষয়।

৩. পশ্চিমা দেশগুলোর চাপ: ১০ ডিসেম্বরের কর্মসূচি শুধু নয়, বাংলাদেশে রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ করার অধিকার, রাজনৈতিক দলগুলোকে কর্মসূচি পালনের অধিকার দেয়া ইত্যাদি বিষয় নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর এক ধরনের চাপ রয়েছে. বিশেষ করে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য রাজনৈতিক সহাবস্থানের নীতি অনুসরণ করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো। এই প্রেক্ষিতেই পশ্চিমা দেশগুলো এই মহাসমাবেশ কিভাবে হয় বা মহাসমাবেশের ব্যাপারে সরকারের অবস্থান, প্রতিক্রিয়া কি সেটি প্রত্যক্ষ করছে। এই বাস্তবতায় ১০ ডিসেম্বর সরকার পরিস্থিতি কিভাবে মোকাবেলা করে, সেটির ব্যাপারে পশ্চিমা দেশগুলো নজর রাখছে। এটি সরকারের ওপর একটি বড় ধরনের চাপ বলে অনেকে মনে করছেন। কারণ, শেষ পর্যন্ত যদি কোনো ধরনের সহিংসতা ঘটে তাহলে সেই অজুহাতে পশ্চিমা দেশগুলো সরকারের ওপর নতুন কোনো চাপ সৃষ্টি করতে পারে বলেও বিভিন্ন মহল মনে করছেন।

৪. আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মনোবল: ১০ ডিসেম্বর যদি বিএনপি বড় ধরনের সমাবেশ করে বা নয়াপল্টনে সমাবেশ করতে পারে পুলিশের ব্যারিকেড-বাধা উপেক্ষা করে, সেটি বিএনপির নেতাকর্মীদের চাঙ্গা করবে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মনোবলের একটা চিড় ধরাবে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এতদিন দেখে আসছিলো যে ঢাকায় বিএনপি কখনোই কোনো সফল কর্মসূচি পালন করতে পারেনি। সেক্ষেত্রে ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ সফল হলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর একটি বাড়তি চাপ তৈরি হবে।

৫. জনমত: যেকোনো রাজনৈতিক দলের জন্য জনমত একটি বড় বিষয়। ১০ ডিসেম্বর যদি শেষ পর্যন্ত বিএনপি সফল সমাবেশ করতে পারে সেটি নির্বাচনের আগে জনগণের ওপর একটি প্রভাব ফেলবে এবং এটি আওয়ামী লীগের জন্য কিছুটা হলেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

কাজেই, এই চ্যালেঞ্জগুলো ১০ ডিসেম্বর কিভাবে আওয়ামী লীগ সরকার মোকাবেলা করবে সেটি দেখার বিষয়। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সোহারাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বিএনপি আসলে একটি রাজনৈতিক কৌশল অবলম্বন করছে। সেই কৌশলটি হলো পল্টনে সমাবেশ করতে দিলেও বিএনপির লাভ, না করতে দিলেও বিএনপির লাভ। এরকম একটি অবস্থা থেকে সরকার কিভাবে তার সুবিধাজনক অবস্থানটি গ্রহণ করবে, সেটি হলো দেখার বিষয়।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭