ইনসাইড বাংলাদেশ

আ'লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করলো ময়মনসিংহ


প্রকাশ: 01/12/2022


Thumbnail

আর একদিন পরেই ময়মনসিংহে দীর্ঘ ৬ বছর পর ৩ ডিসেম্বর  অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন। এ নিয়ে ময়মনসিংহের আওয়ামী নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক উচ্ছ্বাস-উদ্দীপনা এবং উৎসবের আমেজ পরিলক্ষিত হচ্ছে। রাজনীতির মাঠ রয়েছে সরগরম। সব মহলে বয়ছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় চলছে শেষ মূহর্তের চুলচেরা বিশ্লেষণ কাদের কাঁধে যাবে আগামী ৩ বছরের দল পরিচালনার দায়িত্বভার।

ময়মনসিংহের ঐতিহ্যবাহী সার্কিট হাউস মাঠের প্রবেশদ্বারসহ বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ এবং তাদের অনুসারীদের পোস্টার প্যানায় শহর ছেয়ে গেছে। আগামী ৩ ডিসেম্বর সার্কেট হাউজ মাঠের আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনকে ঘিরে ইতিমধ্যে সভায় জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে মঞ্চ এবং অন্যান্য কাজ। সম্মেলন কে ঘিরে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী শনিবার সার্কিট হাউজ মাঠের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এম.পি।

নির্বাচন সামনে রেখে এই সম্মেলনকে এবং এ সময় গঠিত সম্ভাব্য জেলা ও মহানগর কমিটিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে দেখছেন স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ।

বিশেষতঃ বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তৃণমূলে দলকে গোছানো এবং আগামীর নির্বাচনে দলকে নেতৃত্ব দিয়ে জিতিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে হবে এ কমিটিকে। ময়মনসিংহে নেতাকর্মীদের সাথে আলাপকালে কমিটির কাছে এমনটিই প্রত্যাশা করছেন তৃণমূলের নেতৃবৃন্দ। সেই সাথে তাদের প্রচার প্রচারণায় জেলা কমিটির সভাপতি পদে বর্তমান কমিটির সভাপতি জহিরুল হক খোকা,জেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক জ্বালাল উদ্দিন খান এবং জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ফারুক আহমেদ খান এর নাম শোনা যাচ্ছে। বর্তমান সভাপতি জহিরুল হক খোকা দক্ষতার সাথেই দল পরিচালনা করেছেন বলে অনেক নেতা-কর্মী মনে করছেন। বর্ষিয়ান রাজনীতিবিদ হিসেবে নেতাকর্মীদের কাছে তার আলাদা গ্রহণযোগ্যতাও। জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক পদে বর্তমান সম্পাদক এডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম এ কুদ্দুস, সাংগঠনিক সম্পাদক আহাম্মদ আলী আকন্দ,সাধারণ সম্পাদক শওকত জাহান মুকুল,সাংগঠনিক সম্পাদক শরীফ হাসান অনু,জেলা কমিটির অন্যতম নেতা আহসান মোঃ আজাদ,মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মহিতুর রহমান শান্ত,জেলা কমিটির যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক রেজাউল হাসান বাবু এর নাম নেতাকর্মীদের প্রচার
প্রচারণায় পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়াও বর্তমান গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী বলে গুঞ্জণ রয়েছে। অনেকর মতে ভাষা সৈনিক ও সাবেক এমপি মরহুম শামসুল হকের পুত্র হিসেবে দল পরিচালনায় শরীফ আহমেদেরও নেতাকর্মীদের কাছে একটি পৃথক অবস্থান রয়েছে।

মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের দাবি বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল এর নেতৃত্বে সমন্বয়ের ঘাটতি থাকলেও একজন ত্যাগী ও কারানির্যাতিত নেতা হিসেবে তারও নেতাকর্মীদের কাছে পৃথক অবস্থান রয়েছে । তবে,জেলার সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী নেতাদের অনেকের বিরূদ্ধেই এলাকার সাথে যোগাযোগ না রাখার বিষয়টি উঠে এসেছে। দলীয় প্রয়োজনে সময় না দেওয়ার এবং এমনকি,কারো কারো নামে দলকে দ্বিধাবিভক্ত করার অভিযোগও নেতাকর্মীদের করতে দেখা গেছে। এছাড়াও,প্রার্থীদের কারো করো বিরূদ্ধে আর্থিক অনিয়ম,চোরাচালান এবং মাদক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত থাকারও অভিযোগ রয়েছে।

এদিকে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে বর্তমান কমিটির সভাপতি এহতেশামুল আলম,ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি মোঃ ইকরামুল হক টিটু,জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি সাদেক খান মিল্কী টজু এর নাম প্রচার প্রচারণায় পাওয়া গেছে। শহরে ৩ জন প্রার্থীই সরব প্রচার প্রচারণায় চলছে। তবে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীসহ
মহানগর এবং ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাকর্মী এবং সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ পর্যায়ের অধিকাংশ নেতৃবৃন্দ ইকরামুল হক টিটুকে সভাপতি হিসেবে দেখতে চান- প্যনা পোস্টারে এমন প্রচারণা চালাতে দেখা যাচ্ছে।

মহানগরের সভাপতি প্রার্থীদের কারো কারো নামে স্ত্রী ও সন্তানকে ব্যবহার করে আর্থিক সুবিধার বিনিময়ে রাজনৈতিক সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও কারো কারো নামে দীর্ঘ সময় রাজনীতির মাঠে অনুপস্থিতি,নেশাগ্রস্থ থাকা এবং বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত থাকার বিষয়টি নেতা-কর্মীদের সাথে আলাপকালে উঠে এসেছে। মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদের প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন- বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি গোলাম ফেরদৌস জিল্লু,যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মীর শহীদ উদ্দিন,যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হোসাইন জাহাঙ্গীর বাবু,সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ারুল হক রিপন,কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক উপকমিটির সদস্য সাইদুল আরেফিন রাসেল,৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও মসিকের প্যানেল মেয়র ০২ মোঃ মাহবুবুর রহমান দুলাল এবং মহানগর আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটির নেতা লিটন পাল। তবে তৃণমূলের প্রত্যাশা আগামীর কমিটিতে এমন নেতা নির্বাচিত হবেন যিনি সার্বক্ষণিক সময় দিয়ে দলকে সংগঠিত করবেন। সবার বিশ্বাস- আওয়ামী লীগ সভানেত্রী এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব বিষয় যাচাই বাছাই করেই আগামীর নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন।

এ প্রসঙ্গে ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি পদ প্রত্যাশী সিটি মেয়র ইকরামুল হক টিটু বলেন,সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড প্রান্তিক পর্যায়ে দলের মাধ্যমে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। পাশাপাশি বিভিন্ন ষড়যন্ত্র,অপচেষ্টা মোকাবিলায় সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হবে। এ ধরনের কাজ যারা স্বরান্বিত করতে পারবেন,আমি আশাবাদী এমন নেতাদের কাঁধে দলের গুরু দ্বায়ীত্ব উঠবে।

মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এহতেশামুল আলম বলেন,ইতোমধ্যে ২১টি ওয়ার্ডের সম্মেলন হয়েছে। ১২টি কমিটি দেওয়া হয়েছে,বাকিগুলোও দেওয়া হবে। তবে যারা ত্যাগী: দীর্ঘদিন দলের রাজনীতি করেছেন; এমন নেতারাই নেতৃত্বে আসবে বলে মনে করছেন তিনি।

মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহিত উর রহমান শান্তর মতে,তার বাবা যেভাবে ২৭ বছর আওয়ামী লীগকে আগলে রেখেছিলেন,বাবার দেখানো পথ অনুসরণ করেই আওয়ামী লীগকে আগলে রাখবেন তিনি। এ তরুণ নেতা মনে করেন তাঁর বাবার সময় দলে কোন্দল ছিল না। তার কাঁধে নেত্রী দায়িত্ব দিলে দলের ভিতরের সকল বিভেদ দূর করে দলকে শক্তিশালী করে গড়তে সকল পদক্ষেপ নিয়ে দলকে সুসংগঠিত করবেন তিনি।

কমিটি প্রসঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল বলেন,সম্মেলনের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সব পর্যায়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দায়িত্ব পাওয়ার পর দলকে সংগঠিত করতে সঠিকভাবে কাজ করেছেন এবং ভবিষ্যতেও করে জাবেন। তিনি আরও বলেন,দলের স্বার্থে নেত্রী আমাকে যেখানেই চাইবেন,আমি  সেখানেই থাকতে চাই।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭