ইনসাইডার এক্সক্লুসিভ

‘ফখরুল, এবার টোপ গিলিস না’


প্রকাশ: 01/12/2022


Thumbnail

বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। দলের মহাসচিব এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। এই ব্যস্ততার মধ্যেই আজ নিম্ন আদালতে গিয়েছিলেন একটি মামলার হাজিরা দিতে। ১০ বছর আগে গাড়ি পোড়ানোর মামলার অন্যতম আসামি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ তার আদালতে হাজিরা দেওয়ার দিন ছিলো। এ উপলক্ষে আদালতে গিয়েছিলেন। যথারীতি বিএনপির নেতাকর্মীরা তাকে ঘিরে স্লোগানে মুখরিত করেন। কিন্তু এই সময়ে ঘটে এক অনভিপ্রেত ঘটনা। বিএনপির এক কর্মী হঠাৎ করে চিৎকার করতে থাকেন। তার চিৎকারে বিএনপি নেতাদের স্লোগানও কিছুক্ষণের জন্য থেমে যায়। তারপরে শোনা যায় ওই কর্মী বলছেন, ‘ফখরুল এবার আর দালালি করিস না, এবার আর ম্যানেজ হয়ে যাস না, এবার টোপ গিলিস না।’ এই সমস্ত কথাগুলো অবিরতভাবে তিনি বলছিলেন। তার এই বক্তব্যের পরপরই কয়েকজন নেতাকর্মী তাকে ঘিরে ধরে এবং তাকে হালকা চড়-থাপ্পড় দেয়। কিন্তু এরপরও ওই কর্মী চিৎকার করতে থাকে।

পরবর্তীতে ওই কর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তিনি বিএনপির সূত্রাপুর এলাকায় একজন কর্মী। ইশরাক হোসেন তার প্রিয় নেতা। মির্জা ফখরুলের বিরুদ্ধে তার অনেক অভিযোগ। তিনি জানিয়েছেন যে, মির্জা ফখরুল ইসলামের কারণেই বিএনপি এই সর্বনাশ হয়েছে। তিনি দাবি করেছেন যে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কারণে ২০১৮ সালের নির্বাচনে যাওয়া হয়েছিলো। ওই নির্বাচনে যাওয়াটা ছিল বিএনপির সর্বনাশ। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কিভাবে ড. কামাল হোসেনের মতো আওয়ামী লীগের নেতারা পায়ের নিচে যেইয়ে বসলেন, সেটিতেও ক্ষুব্ধ ওই বিএনপির কর্মী। তার মতে ওই সময় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ম্যানেজ হয়েছিলেন। সরকার যখনই সংকটে পড়ে তখনই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ম্যানেজ করে ফেলে। বিএনপির ওই কর্মীর ধারণা, শেষ পর্যন্ত বিএনপির সমাবেশের স্থান পল্টন থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্থানান্তরিত হবে। তার মতে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অত্যন্ত চালাক। তিনি প্রথমে নিজে কিছু বলেন না। তিনি আগে সরকারের পক্ষ থেকে ম্যানেজ হয়ে যান, তারপর তিনি লন্ডনে তারেক জিয়ার সঙ্গে কথা বলেন এবং তারেক জিয়াকে নানা রকম কিছু বুঝিয়ে রাজি করান। তারপর তারেক জিয়া অন্যান্য নেতাদেরকে তার সিদ্ধান্তের কথা জানান। এভাবেই ফখরুল তার ইচ্ছা বাস্তবায়ন করে বলে ধারণা ওই বিক্ষুব্ধ কর্মী।

ওই কর্মী বলছেন যে, এবার যদি আমরা নয়াপল্টনে সমাবেশ না করতে পারি তাহলে আমাদের এই কয়েক মাসের সব অর্জন বিফলে চলে যাবে। কাজেই, পল্টনে আমাদের সমাবেশ করতেই হবে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যদি ঠিক থাকেন তাহলে পল্টনের সমাবেশে আমাদের কোনো বাধা নেই। কারণ, আমরা সেটা করতে পারবো। আর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যদি সরকারের এজেন্ট হিসেবে কাজ করেন, তিনি তারেক জিয়াকে কিছু একটা বুঝিয়ে সমাবেশের স্থান আবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নিয়ে যাবে, এতে বিএনপি লাভের চেয়ে ক্ষতি হবে বেশি। এ কারণে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে তিনি সাবধান বাণী করে দিয়েছেন। তার দাবি তিনি একা না, বিএনপির অধিকাংশ কর্মীরাই মনে করেন যে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গোপনে গোপনে সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন, সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেন। আর এটাই বিএনপির সবচেয়ে বড় শঙ্কার কারণ। যেকোনো মুহূর্তে তিনি পল্টি দিতে পারেন বলেও ওই কর্মীর ধারণা। কারণ ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে ঐক্যফ্রন্ট গঠন। ২০১৮ সালের নির্বাচন করা এবং সংসদে বিএনপির সদস্যদেরকে নিয়ে যাওয়া ইত্যাদি সবই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর করেছেন এবং সরকারকে খুশি করার জন্যই করেছেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে সরকারের গোপন এবং গভীর সম্পর্ক আছে বলে ওই নেতার ধারণা। তবে ইশরাকের অনুসারী এই নেতা বলেছেন, শেষ পর্যন্ত যদি ফখরুল মির্জা ফখরুল এরকম কোনো কান্ড করেন তাহলে বিএনপি নেতারাই তাকে প্রতিরোধ করবে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭