ইনসাইড আর্টিকেল

ডিসেম্বরে ভয় দেখাচ্ছে দ্বিতীয় প্রজন্মের রাজাকাররা


প্রকাশ: 03/12/2022


Thumbnail

বাংলাদেশের বিজয়ের ৫২ বছর পার হচ্ছে। ডিসেম্বর আমাদের বিজয়ের মাস। কিন্তু এই ডিসেম্বরে দ্বিতীয় প্রজন্মের রাজাকাররা অর্থাৎ রাজাকারদের উত্তরসূরীরা, রাজাকারদের সন্তান-সন্ততিরা এখন নতুন করে তাদের হিংস্র চেহারা দেখাচ্ছে, তাদের হিংস্র নখ বের করছে। আমাদের বিজয়কে আবার ক্ষতবিক্ষত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন। রাজাকারপুত্ররাই এখন দেশে-বিদেশে বাংলাদেশের সব অর্জন ম্লান করে দেওয়ার একটি সংগ্রাম করছে। এবারের ডিসেম্বর তাই দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ হিসেবে মনে করছেন অনেকেই। 

বাংলাদেশের স্বাধীনতার সময় গোটা বাঙালি জাতি ঐক্যবদ্ধ ছিল, একাত্ম ছিল এবং কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করেছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে। বাংলার কৃষক, শ্রমিক, মজুর সহ ছাত্র, যুবক তরুণরা জীবন দিয়েছে রক্ত দিয়েছে, আমাদের পবিত্র ভূমির জন্য। কিন্তু সেই সময়ে অল্প কিছু রাজাকার-আলবদর-আলশামস পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দোসর ছিল, তাদের সহযোগিতা করেছিল। এই সমস্ত রাজাকার- আলবদররা জামায়াত, মুসলিম লীগ সহ বিভিন্ন মৌলবাদী সংগঠনের ছত্রছায়ায় আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল। আমাদের মা-বোনদের ধর্ষণ করা, বাঙালিদের বাড়িঘর লুণ্ঠন করা এবং নির্বিচারে হত্যায় সহযোগী শক্তি হিসেবে কাজ করেছিল। 

২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের অঙ্গীকার করে তার নির্বাচনী ইশতেহারে। এই অঙ্গীকার পূরণের লক্ষ্যে ২০১০ সালে বিশেষ ট্রাইবুন্যাল গঠন করে। বিশেষ ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হয় এবং যুদ্ধাপরাধের শিরোমনি বেশ কয়েকজনকে সর্বোচ্চ আদালত সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান করে। এদের মধ্যে ছিল যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযম, মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মুজাহিদ, সাকা চৌধুরীর মতো দুর্বৃত্ত ধর্ষক এবং হত্যাকারীরা। কিন্তু এই সমস্ত যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের পরও বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি তৎপরতা কমে যায়নি। বরং এই সমস্ত যুদ্ধাপরাধীদের সন্তান-সন্ততিরা এখন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে বিপন্ন করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত দেশে এবং বিদেশে। এবারের বিজয় দিবসে সেই ষড়যন্ত্রের চূড়ান্ত রূপ দেখা যাচ্ছে। 

যে সমস্ত যুদ্ধাপরাধীরা সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে দন্ডিত প্রাপ্ত হয়েছে, মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত হয়েছে, তাদের সন্তানরা এখন ক্রিয়াশীল। তারা কোটি কোটি টাকা খরচ করছে সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের জন্য। বিদেশে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে  দ্বিতীয় প্রজন্মের রাজাকাররা তথ্যসন্ত্রাসের এক ভয়ঙ্কর খেলায় মেতে উঠেছে। শুধু যে বিদেশে বসে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তারা তথ্য সন্ত্রাস করছে এমনটি নয়। বরং রাজাকারপুত্ররা এখন দেশেও সক্রিয় হচ্ছে। বাংলাদেশের অন্যতম রাজনৈতিক দল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বাবা একজন স্বীকৃত রাজাকার ছিলেন। সেই রাজাকার পুত্রই এখন বিএনপির অঘোষিত নেতা। তার নেতৃত্বে বিএনপি বিজয়ের মাসে বাংলাদেশকে রক্তাক্ত ক্ষত বিক্ষত করতে চাইছেন। বিএনপির মধ্যে রাজাকারদের অনেক সন্তানরাই এখন সক্রিয়।

সম্প্রতি চট্টগ্রামের জনসভায় যুদ্ধাপরাধী ঘৃণিত রাজাকার সাকা চৌধুরীর পুত্র হুম্মাম কাদের চৌধুরী যে ভাষায় কথা বলেছেন তা আমাদের স্বাধীনতার প্রতি এক ধরনের চ্যালেঞ্জ। এরকম রাজাকারপুত্ররা এখন বিএনপিতে প্রকাশ্য হচ্ছে। জামায়াতের গোলাম আযম, মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মুজাহিদের পুত্ররা সক্রিয়। বাংলাদেশে যারা যুদ্ধ অপরাধ করেছে, মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতা করেছে সেই সমস্ত ব্যক্তিদের পুত্ররা এখন আবার সংগঠিত হচ্ছে, ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। বিজয়ের মাসে এদেরকে প্রতিহত করাই বাংলাদেশের জন্য এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭