ইনসাইড পলিটিক্স

যে সমস্ত কারণে পিছু হটছে বিএনপি


প্রকাশ: 05/12/2022


Thumbnail

১০ ডিসেম্বর নিয়ে যখন দেশব্যাপী নানা রকম আশঙ্কার ডালপালা ছড়াছে তখন হঠাৎ করেই সেই উত্তেজনায় জল ঢাললো বিএনপি। গতকাল এক সংবাদ সন্মেলনের এক পযার্য় বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, সোহরাওয়ার্দী এবং তুরাগ নদীর তীর ব্যতিত বিকল্প স্থানের প্রস্তাব পেলে তারা বিবেচনা করবে। বিষয়টি নিয়ে গতকালই বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে বৈঠকও করেছে। সমাবেশের বিকল্প জায়গার ব্যাপারে আজ নয়াপল্টনে আয়োজিত এক সংবাদ সন্মেলনে একই কথা পুনরাবৃত্তি করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। তিনি বলেছেন, আগামী ১০ ডিসেম্বর বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশের স্থান হিসেবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বাইরে বিকল্প প্রস্তাব এলে সেটা বিবেচনায় নেওয়া হবে। অর্থাৎ এটি পরিষ্কার যে, বিএনপির নয়াপল্টনে সমাবেশ করার ব্যাপারে তাদের অনড় অবস্থান থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।  নয়াপল্টনের বিকল্প হিসেবে তারা এখন আরামবাগে ১০ ডিসেম্বর মহাসমাবেশ করতে চায়। এখন প্রশ্ন হচ্ছে যেকোনো মূল্যে নয়াপল্টনে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত থেকে বিএনপি হঠাৎই কেন পিছু হটছে? হঠাৎ করে কি এমন ঘটেছে যে, বিএনপি তাদের অনড় অবস্থান থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে? এব্যাপারে বিএনপির একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বললে তারা মূলত তিনটি কারণের কথা জানিয়েছেন।

১. দলের মধ্যে মত বিরোধ: ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশ করার ব্যাপারে বিএনপির মধ্যে দুটি শিবির গড়ে উঠেছে। একটি এর পক্ষে এবং অন্যটি ১০ ডিসেম্বরে সমাবেশ করার বিপক্ষে। বিপক্ষের মতাদর্শীরা বিএনপির নেতারা মনে করছেন, জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে এখনো এক বছরেরও বেশি সময় বাকি আছে। সুতরাং এতো আগে থেকেই মাঠে নামলে আন্দোলনের ধরে রাখা সম্ভব নয়, কঠিন হয়ে পড়বে। এখন থেকেই যদি বিএনপি সম্পূর্ণ সাংগঠনিক শক্তি নিয়ে মাঠে নামে তাহলে সেই সিদ্ধান্ত হবে হঠকারী সিদ্ধান্ত। ফলে সে বিবেচনা থেকে বিএনপি এখন আগের অবস্থান থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। 

২. পুলিশের ভূমিকা: সোহরাওয়ার্দী উদ্যোনে ১০ ডিসেম্বর সমাবেশ করার অনুমতি দিয়েছে ডিএমপি। কিন্তু ডিএমপির সে অনুমতি প্রত্যাখান করেছে বিএনপি। ডিএমপিও সাফ জানিয়ে দিয়েছে, বিএনপি অনুমোদিত স্থান ছাড়া অন্য কোথাও সমাবেশ করলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বিএনপির নেতারা বলছে, বিএনপি অতীতেও বিভিন্ন সময় সমাবেশ করতে চেয়েছিল কিন্তু বারবার পুলিশ বাধা দিয়েছে এবং পুলিশের বাধা উপক্ষো করে কোনো কিছু করার চেষ্টার কারণে অনেক নেতাকর্মী গ্রেফতার হয়েছেন। এর কারণে বিএনপি এবার সেই ঝুঁকি নিতে চায় না। কারণ তারা মনে করছে বিএনপি এখনো সাংগঠনিকভাবে তেমন শক্তিশালী নয়। এমন অবস্থায় আবার পুলিশের গ্রেফতার শুরু হলে বিএনপি সাংগঠনিকভাবে আরও দুর্বল হয়ে পড়বে। এই ঝুঁকি নিতে চায় না বিএনপি।

৩. কূটনীতিকদের আপত্তি: বিএনপির ১০ ডিসেম্বরের কর্মসূচি নিয়ে কূটনীতিকদের আপত্তি রয়েছে বলে জানা গেছে। তারা ইতোমধ্যে বিএনপির নেতাদের সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যে, তারা কোনো ধরনের রাজনৈতিক সহিংস এবং সন্ত্রাসকে মেনে নেবেন না। তারা একটি শান্তিপূর্ণ সহ অবস্থান দেখতে চায়। যে কারণে বিএনপি নয়াপল্টনে সমাবেশ করার অনড় অবস্থান থেকে সরে আসছে। বিএনপি নেতারা মনে করছেন যে, কূটনীতিকপাড়ায় তাদের তৎপরতার কারণে কূটনীতিকরা এখন বিএনপির পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। কিন্তু এখন তাদের মতামতকে উপেক্ষা করে নয়াপল্টনে সমাবেশ করলে হিতে বিএনপি বিপদে পড়তে পারে বলে ঝুঁকি নিয়ে চায় না বিএনপি।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭