ইনসাইড আর্টিকেল

স্বৈরাচার নিপাত করে গণতন্ত্রের মুক্তি


প্রকাশ: 06/12/2022


Thumbnail

১৯৮২ সালে এরশাদ রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে সামরিক শাসন কায়েম করেন। এরশাদের স্বৈরশাসনের বছর না ঘুরতেই ১৯৮৩ সালে যুব ও ছাত্রসমাজ স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলন শুরু করে। এ সময় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ৮ দল, বিএনপির নেতৃত্বে ৭ দলীয় এবং জাসদ নেতৃত্বে ৫ দলীয় জোট সম্মিলিতভাবে স্বৈরাচার এরশাদ বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলেন। রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে নামে ছাত্র, যুব, শ্রমিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, পেশাজীবী সংগঠনের নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। 

স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন দমনে চলে খুন, হত্যা, জেল, জুলুম, নির্যাতন। রক্তের সিঁড়ি বেয়ে স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলনের ঢেউয়ে উত্তাল হয়ে ওঠে ঢাকার রাজপথ। এরশাদের পতন ত্বরান্বিত ও গণতন্ত্র মুক্তি আন্দোলনের চূড়ান্ত রূপরেখা তৈরি হয় ১৯৯০ সালের ১৯ নভেম্বর। এদিনই তিনটি জোট ঐক্যবদ্ধভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপরেখা ঘোষণা করেন। এরশাদের পতন ত্বরান্বিত করতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টিসহ অন্যান্য সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো এক জোট হয়ে আন্দোলন করে। জনতার সম্মিলিত আন্দোলনে ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর পদত্যাগ করেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। অস্থায়ী সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন। অবসান হয় স্বৈরশাসনের, অবসান এরশাদের আর মুক্তি পায় গণতন্ত্র। এরশাদের ক্ষমতা ছাড়ার তিন বছর আগে ১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর বুকে-পিঠে ‘গণতন্ত্র মুক্তি পাক, স্বৈরাচার নিপাত যাক’ স্লোগান লিখে এরশাদের স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে রাজপথে নেমেছিলেন নূর হোসেন। সেদিন জীবন দিতে হয় তাকে।

১৯৯০ সালের এইদিনে ছাত্র-জনতার উত্তাল গণআন্দোলনের মুখে পতন হয় সামরিক স্বৈরশাসক এরশাদ সরকারের। দীর্ঘ ৯ বছর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন করে এরশাদের পতন ঘটায়। এই স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে ছাত্র, যুব, রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ জীবন দেন। এরশাদবিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে রাজপথে প্রাণ দিতে হয় নূর হোসেন, টিটো, সেলিম, তাজুল, দেলোয়ার, দিপালী, ডা. মিলন, ফিরোজ, ময়েজউদ্দন, বসুনিয়া, জাহাঙ্গীরসহ আরও অনেককে। ৬ ডিসেম্বর স্বাধীন বাংলাদেশে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন ও গণতন্ত্রের বিজয় ইতিহাসের একটি অবিস্মরণীয় দিন। স্বৈরাচারের পতনের মধ্য দিয়ে ৬ ডিসেম্বর গণতন্ত্রের বিজয় সুনিশ্চিত হয়।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭