প্রকাশ: 06/12/2022
ঋণের
নামে ইসলামী ব্যাংকসহ তিনটি বেসরকারি ব্যাংক থেকে কয়েক হাজার
কোটি টাকা সরিয়ে নিয়েছে
একটি গ্রুপ। ভুয়া ঠিকানা ও
অস্তিত্বহীন কোম্পানির নামে নেওয়া হয়েছে
এ ঋণ। গগনচুম্বী খেলাপি
ঋণ ও অর্থ পাচারের
কারণে ইতোমধ্যে ব্যাংকিং খাত খাদের কিনারায়
পৌঁছেছে। এসব ঘটনায় গভীর
উদ্বেগ প্রকাশ করেছে দুর্নীতিবিরোধী আন্তর্জাতিক সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
সোমবার (৫ ডিসেম্বর)
এক বিবৃতিতে এ উদ্বেগ প্রকাশ করে সংস্থাটি।
বিবৃতিতে বলা
হয়, দেশের কয়েকটি
বেসরকারি ব্যাংক থেকে অত্যন্ত চালাকির
সঙ্গে ঋণের নামে হাজার
হাজার কোটি টাকা তুলে
নেওয়া হয়েছে— বিষয়টি দেশের অর্থনৈতিক কাঠামোর জন্য ‘ভয়ংকর উদ্বেগজনক’ মন্তব্য করে টিআইবির নির্বাহী
পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন,
‘সাধারণ গ্রাহককে ব্যাংক থেকে ন্যূনতম অঙ্কের
ঋণ নিতে গেলেও যে
পরিমাণ কাগজপত্র দিতে হয়, সেখানে
কীভাবে ভুয়া কিংবা নামসর্বস্ব
প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে অবলীলায় হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণের
নামে তুলে নেওয়া হচ্ছে?
গত ১৪ বছরে আগের
তুলনায় মোট খেলাপি ঋণের
পরিমাণ প্রায় ছয়গুণ বেড়েছে, বারবার খেলাপি ঋণের সংজ্ঞা পরিবর্তন
করে কিংবা পুনঃতফসিল করেও খেলাপি ঋণ
আদায় করা যাচ্ছে না,
তখন কাদের স্বার্থে কিংবা কাদের দেখে অস্বাভাবিক দ্রুততার
সঙ্গে এমন আগ্রাসী ঋণ
দেওয়া হয়? প্রকৃতপক্ষে কারা
এ বিপুল পরিমাণ অর্থের সুবিধাভোগী? এ প্রশ্নের উত্তর
দেশবাসীর জানার অধিকার আছে।’
কেন
ব্যাংকখাতের নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা ফেরানোর
জন্য কোনো কার্যকর উদ্যোগ
নেওয়া হলো না-এমন
প্রশ্ন রেখে ড. ইফতেখারুজ্জামান
বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন ব্যাংক থেকে নামে-বেনামে
ঋণ নিয়ে বিদেশে অর্থপাচারের
নির্ভরযোগ্য বহু তথ্য প্রতিনিয়ত
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে
প্রকাশিত হচ্ছে। বিশেষ করে— আমদানি-রপ্তানি
বাণিজ্যে চালান জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থপাচারের ঘটনায় খোদ বাংলাদেশ ব্যাংকের
তথ্য বলছে, পণ্য আমদানিতে ২০
থেকে ২০০ শতাংশ পর্যন্ত
বাড়তি দাম দেখানোর শতাধিক
ঘটনা সংঘটিত হয়েছে।
টিআইবির
নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘অস্বাভাবিক ও প্রশ্নবিদ্ধ ঋণের
উল্লিখিত ঘটনা সর্বাধিক গুরুত্ব
দিয়ে তদন্ত করার পাশাপাশি কোনোভাবেই
যেন এসব অর্থ বিদেশে
পাচার হতে না পারে,
সে বিষয়ে এখনই যথাযথ ব্যবস্থা
নিতে হবে। পাচার হওয়া
অর্থ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য পেতে দেশে-বিদেশে সবধরনের লেনদেনের তথ্য আদান-প্রদান
সহায়ক ‘কমন রিপোর্টিং স্ট্যান্ডার্ড
(সিআরএস)’-এ অবিলম্বে যুক্ত
হতে হবে। একই সঙ্গে
ভুয়া ও বেনামি ঋণ
জালিয়াতি প্রতিরোধের জন্য আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতার
আলোকে অবিলম্বে ব্যক্তিমালিকানাধীন খাতে ‘প্রকৃত মালিকানার স্বচ্ছতা’ আইন প্রণয়ন করতে
হবে।’
তিনি আরও বলেন,
রাজনৈতিক বিবেচনায় ব্যাংকের মালিকানায় কিংবা শীর্ষ পদে বদল এসব ব্যাংকের আমানতের অর্থ
লোপাটে সহায়ক হয়। ব্যাংকের মালিকপক্ষ বা পরিচালনা পর্ষদই তখন ঋণ জালিয়াতিতে যুক্ত হয়
এবং যোগসাজশের মাধ্যমে ক্ষমতার অপব্যবহার করে লুটপাটে জড়িত হওয়ার সুযোগও বহুগুণে বেড়ে
যায়। তিনি বলেন, খাদের কিনারা থেকে ব্যাংকিং ও আর্থিক খাতকে উদ্ধারে কার্যকর ব্যবস্থা
নেওয়া জরুরি।
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭