ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

সম্মতিহীন সব যৌন সম্পর্ক ধর্ষণ


প্রকাশ: 06/12/2022


Thumbnail

সুইজারল্যান্ডের বিদ্যমান আইনে ধর্ষণের যে সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, তা বিস্তৃত করার পক্ষে দেশটির পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ রায় দিয়েছে। ‘শুধু হ্যাঁ মানেই হ্যাঁ’ অর্থাৎ সম্মতিবিহীন সব যৌন সম্পর্ককে ধর্ষণ বলে বিবেচনা করার প্রস্তাবটি গতকাল সোমবার পাস হয়েছে। তবে ধর্ষণ আইনে পরিবর্তন আনতে আরও কিছু ধাপ পেরোতে হবে। খবর এএফপির।

দেশটিতে বর্তমানে প্রচলিত আইন অনুযায়ী, কোনো নারীকে নিপীড়নের মধ্য দিয়ে যৌন সম্পর্ক করলে তা ধর্ষণ হিসেবে বিবেচিত হবে। তবে এ ক্ষেত্রে ওই নারী জোর জবরদস্তিকে একটি নির্দিষ্ট মাত্রা পর্যন্ত ঠেকানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হলেই কেবল সেটিকে ধর্ষণ বলে বিবেচনা করা হয়।

তবে সুইজারল্যান্ডে অনেকেই মনে করেন, বিদ্যমান আইনে ধর্ষণের যে সংজ্ঞা দেওয়া আছে, তা সংশোধন করা প্রয়োজন। শুধু যৌন নিপীড়নের মাত্রা কেমন কিংবা যৌন নিপীড়নের শিকার ব্যক্তি নিপীড়নকারীকে কতটা প্রতিহত করার চেষ্টা করেছেন, তা বিবেচনা না করে সম্মতিবিহীন সব ধরনের যৌন সম্পর্ককেই ধর্ষণের আওতাভুক্ত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

তবে সম্মতি আছে কি নেই, তা কীভাবে নির্ধারণ করা হবে—এ ব্যাপারে সুইজারল্যান্ডে ব্যাপক বিতর্ক আছে। কেউ কেউ মনে করেন, ‘না মানেই না’–এ নীতি মেনে চলতে হবে। অর্থাৎ কোনো ব্যক্তি যদি যৌন সম্পর্ক স্থাপনের ব্যাপারে সুস্পষ্ট করে আপত্তি জানায়, তবে বুঝতে হবে তাঁর সম্মতি নেই।

চলতি বছরের শুরুর দিকে সুইজারল্যান্ডের পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ কাউন্সিল অব স্টেটসে এ নিয়ে ভোটাভুটি হয়। গতকাল নিম্নকক্ষ ন্যাশনাল কাউন্সিলে ভোটাভুটি হলো। এদিন আরও সুনির্দিষ্ট করে বলা হয়েছে ‘শুধু হ্যাঁ মানে হ্যাঁ’। অর্থাৎ যৌন সম্পর্ক স্থাপনে সুস্পষ্ট সম্মতি থাকতে হবে।

গতকাল ‘শুধু হ্যাঁ মানে হ্যাঁ’-এর পক্ষে ৯৯টি ভোট পড়েছে। ৮৮ জন এর বিরোধিতা করেছেন। ভোটদানে বিরত ছিলেন ৮৮ জন।

এদিন পার্লামেন্টে বিতর্ক চলার সময় অত্যন্ত আবেগঘন পরিবেশ তৈরি হয়।
সুইজারল্যান্ডে সোশ্যালিস্ট দলের সদস্য তামারা ফুনিসিয়েলো পার্লামেন্টে বলেন, ‘আপনি নিশ্চয় আপনার প্রতিবেশীকে না বলে তাঁর ওয়ালেট থেকে টাকা বের করে নেবেন না। নিশ্চয় আপনি বেল না বাজিয়ে কারও ঘরে ঢুকবেন না। সুরক্ষার প্রশ্নে আমার ওয়ালেট এবং আমার ঘর কীভাবে আমার শরীরের চেয়ে বেশি গুরুত্ব পায়?’
সুইজারল্যান্ডের গ্রিন পার্টির এমপি মাহাইম বলেন, ‘অন্য ব্যক্তির দেহ কখনোই খোলা বার নয়।’

তবে ডানপন্থী পার্লামেন্ট সদস্যদের অনেকে প্রস্তাবটির বিরোধিতা করেছেন। তাঁরা বলেছেন, এটি বিভ্রান্তি তৈরি করবে। আর তা চর্চা করাটাও কঠিন হবে।
গতকাল সুইজারল্যান্ডের পার্লামেন্টে হওয়া ভোটাভুটির ফলাফল নিয়ে মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল সন্তোষ প্রকাশ করেছে।

তবে প্রস্তাবটি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আরও কিছু পথ পাড়ি দিতে হবে। ধর্ষণের সংজ্ঞাকে বিস্তৃত করার প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিতে পার্লামেন্টের দুই কক্ষকে সমঝোতায় পৌঁছাতে হবে। এরপর সুইজারল্যান্ডের প্রত্যক্ষ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার আওতায় পপুলার ভোট অনুষ্ঠিত হতে পারে।

সুইজারল্যান্ডের মতো স্পেন, সুইডেন, ডেনমার্ক, বেলজিয়ামসহ বেশ কিছু ইউরোপীয় দেশ ধর্ষণের সংজ্ঞাকে বিস্তৃত করার জন্য পদক্ষেপ নিচ্ছে।

 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭