ইনসাইড আর্টিকেল

শীতে পিঠা বিক্রি করে স্বাবলম্বী দুই সহোদর


প্রকাশ: 06/12/2022


Thumbnail

লক্ষ্মীপুর পৌর শহরে জমে উঠেছে শীত কালীন পিঠা বিক্রির জমজমাট ব্যবসা। জ্বলন্ত  চুলায় লাকড়ি দিয়ে দশ - বারোটি মাটির খোলায় চিতই পিঠা বানাচ্ছেন মনির। চুলার অল্প আগুনে উড়ছে ধোঁয়া।

তৈরি হচ্ছে সুস্বাদু চিতই সাথে ৯- ১০ রকমের নানান পদের ভর্তা । আর চুলা থেকে নামানোর পর মুহূর্তেই তা চলে যাচ্ছে  ক্রেতার হাতে।

ক্রেতারা রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে সেই পিঠা কিনছেন। কেউ বা নিয়ে যাচ্ছেন পরিবারের জন্য কেউ আবার দাঁড়িয়েই খাচ্ছেন।

দোকানে ক্রেতাদের ভিড় সামলাতে ব্যস্ত মনিরের ছোট ভাই সাদেক। রাস্তার পাশে এই দুই ভাইয়ের দোকানে সন্ধ্যার পর থেকে রাত১০টা- ১১ টা পর্যন্ত একটানা লাইনে দাঁড়িয়ে যে যার চাহিদা মত গরম- গরম পিঠা ক্রয় করছে আর খাচ্ছে। এক একজনে ৩টা অথবা ৫ টা পর্যন্ত অনায়াসে খেয়ে যাচ্ছে। লক্ষ্য করে দেখা গেছে প্রায় শতের উপরে মানুষ  পিঠা কেনার জন্য ভিড় জমিয়েছেন।

রবিবার  (৪ঠা ডিসেম্বর ) সন্ধ্যায় লক্ষ্মীপুর প্রেসক্লাবের সামনে  শিশু পার্কের  মূল ফটকের পশ্চিম পাশে বৈদ্যুতিক খাম্বার পাশে যেমনি মানুষের ভিড় তেমনি চলছে শীতের বাহারি রকমের পিঠা খাওয়ার ধুম  এই দৃশ্যের চোখে পড়ার মত। 

মনির বলেন, প্রতিবছর শীত মৌসুম এলে পিঠা বিক্রি করি। এবার প্রায় ১০-১৫দিন হয়েছে চিতই পিঠা বিক্রি শুরু করেছি। ১০ টাকা করে প্রতি পিস, বিক্রিও খুব ভালো।

রুবেল কুরী  নামে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ী  মনিরের  দোকান থেকে পিঠা কিনে প্রশংসা করে বলেন, এখানকার পিঠার মান ভালো। তাই প্রতিবছরই কিনে থাকি। এবারও কিনেছি।

লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের প্রবেশ পথে পাশাপাশি দুই দোকানে পাটিসাপ্টা, ভাপা, ফুলি ,  ডিমের পিঠা তেলের পিঠা ও চিতই পিঠা সবজি পিঠা ঝাল পিঠা  বিক্রি করছেন কামরুল এবং আলি।

পিঠা বিক্রেতা কামরুল জানান  আগে সবজি ব্যবসা করতাম  এ বছর ব্যবসা ঘুরিয়ে নিলাম  পিঠার ব্যবসা লাভ জনক তাই  এ পেশা বেছে নিয়েছি।  কামরুল জানান, ফুলি পিঠা ১০ টাকা পিস, পাটিসাপ্টা ২৫ টাকা ও পাঁপড় তিন পিস ১৫ টাকায় বিক্রি করছি।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পিঠা তৈরির হচ্ছে চালের গুঁড়ি নিয়ে তার ওপর গুড়, নারকেল ছিটিয়ে ভাপ দিচ্ছেন দোকানি। খোলায় বানানো হচ্ছে চিতই পিঠা। প্রতি দিন  সন্ধ্যার আগে১৬ কেজি চাউল ৫০ টাকা  দরে ক্রয় করে গুড়ি ভেঙ্গে নেন তারা দুই ভাই। আরো অতিরিক্ত ৫ কেজি চাউলের গুড়ি সাথে সাদা আটা মিলিয়ে চিতাই পিঠা  তৈরি করার জন্য চাউলের গুড়ির ডই বা লিকুইড তৈরি করেন । আমরা দুই ভাই মিলে নিয়ে আসি বাজারে আর তৈরি করি নানান রকম পিঠা  আর তখনি চিতাই এবং ভাপা পিঠা খাওয়ার জন্য  দোকানে ভিড় জমায়  বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।  দৈনিক আমাদের পিঠা বিক্রিয় হয় ৩৫০০-থেকে ৪০০০ হাজার টাকা। লক্ষ করা গেছে স্থানীয়  কেউ এ পিঠার ব্যবসার সাথে জড়িত নয়।

দূরদূরান্ত থেকে এসে পিঠার ব্যবসা করছেন এ ব্যবসায়ীরা। এর মাজে দেখা গেছে কাহার বাড়ি সিলেট অথবা গোপালগঞ্জ নয়তোবা রংপুর দিনাজপুর।  এছাড়াও বিভিন্ন স্থানে ছোট ছোট পিঠার দোকান সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা। অনেকে আবার পিঠা বিক্রির দোকান দিয়ে পেশা পরিবর্তন করছেন।

লক্ষ্মীপুর উত্তর স্টেশন  থেকে শুরু করে সরকারি সামাদ উচ্চ বিদ্যালয় মোড়  পিটিআই মোড়, দক্ষিণ তেমনি আবুলের চায়ের দোকানের সামনের  মোড়,ঝুমুর  মোড়, সদর হাসপাতাল রোড, মাদাম মোড় আলিয়া মাদ্রাসা সামনে মহা সড়কের পাশে ,  বিভিন্ন এলাকায় রাস্তার মোড় আর ফুটপাতে গড়ে উঠেছে প্রায় শতাধিক অস্থায়ী পিঠার দোকান।

মৌসুমী পিঠা ব্যবসায়ীরা মোড়ে মোড়ে পিঠার দোকান নিয়ে বসে পড়েছেন। আর সাধারণ মানুষও খাচ্ছেন এসব ধোঁয়া-ওঠা গরম পিঠা।

দোকানিরা জানান,  পিঠার ব্যবসা করতে খুব বেশি পুঁজি লাগে না। ফলে সহজে এ ব্যবসা শুরু করা যায়। জ্বালানি হিসেবে খড়ি, অকেজো কাঠের টুকরা, কিংবা গাছের শুকনা ডাল পাটকাঠি  ব্যবহার করছেন তারা। তবে কেউ কেউ আবার পিঠা তৈরি করতে গ্যাসের সিলিন্ডার ব্যবহার করছেন। কিছু গুড়, আটা, নারকেল নিয়ে এ ব্যবসা খুলে বসা যায়।

পিঠা ব্যবসায়ী মনির এবং  লক্ষ্মীপুর প্রেসক্লাবের সামনে পিঠা  বিক্রেতা সাদেক  বাংলা ইনসাইডার কে বলেন, পাটিসাপ্টা, ফুলি, চিতই, তিলের  পিঠা ও তেলের পিঠা বিক্রি করেন তিনি। দামে কম ও মান ভালো হওয়ায় দোকানে  ভিড় লেগে থাকে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭