ইনসাইড পলিটিক্স

মুখোমুখি ফখরুল-তারেক


প্রকাশ: 21/06/2024


Thumbnail

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর চান দলে কাউন্সিল। যত দ্রুত সম্ভব সংক্ষিপ্ত পরিসরে হলেও দলের একটি কাউন্সিল করে নেতৃত্ব পুনর্গঠন করা প্রয়োজন এমন অভিমত তিনি দিয়েছেন। অন্যদিকে তারেক জিয়া বলেছেন, কাউন্সিল নয়, যেভাবে পরিবর্তনগুলো হচ্ছে সেভাবে পরিবর্তন হবে। প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে বাছ বিচার করে নেতৃত্বে আনা হবে। যারা যোগ্যতার পরিচয় দেবেন না তাদেরকে দল থেকে বাদ দেওয়া হবে। এ নিয়ে এখন চলছে বিএনপিতে টালমাটাল অবস্থা। বিএনপির বিভক্তি এখন সুস্পষ্ট। 

ঈদের আগে হঠাৎ করে বিএনপিতে তাণ্ডব শুরু হয়। লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া লন্ডন থেকে একের পর এক বিভিন্ন কমিটি বিলুপ্ত শুরু করেন এবং নতুন কমিটি পুনর্গঠন করেন। আর এই সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো নেওয়া হয় এককভাবে। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদেরকেও এ ব্যাপারে আমলে নেওয়া হয়নি। সবাইকে অন্ধকারে রেখে তারেক জিয়া এবং তার কিছু সাঙ্গপাঙ্গ মিলে এ ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। আর যার ফলে পুরো বিএনপির মধ্যে এটা নিয়ে এক ধরনের অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। 


গত ১৩ জুন থেকে বিএনপিতে যে পরিবর্তনের ভূমিকম্প হচ্ছে সেই ভূমিকম্পের পর গত রাতে প্রথম তারেক জিয়া লন্ডন থেকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির কয়েকজন সদস্যের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে বসেছিলেন। সেই বৈঠকে বিদেশে থাকা স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ এবং আমীর খসরু মাহমুদও যুক্ত হয়েছিলেন বলে জানা গেছে। বাংলাদেশ থেকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এবং মির্জা আব্বাসও এই জুম বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গেছে। 


বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পরিবর্তনকে ইতিবাচক হিসেবে বর্ণনা করেন। তবে পরিবর্তন যেভাবে করা হচ্ছে সেই প্রক্রিয়া নিয়ে তিনি প্রশ্ন তোলেন। তার এই প্রশ্নের প্রেক্ষিতে তারেক জিয়া বলেন যে, বিএনপির গঠনতন্ত্র লঙ্ঘিত হয়েছে কি না? মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, গঠনতন্ত্র লঙ্ঘিত হয়েছে কি না সেটা বড় বিষয় নয়, বড় বিষয় হলো আমরা কোনো ধরনের সংস্কৃতি সৃষ্টি করছি এবং কোনো ধরনের সংস্কৃতি জনগণের সামনে উপস্থাপন করছি। একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলে এভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে জনগণের কাছে ভুল বার্তা যাবে। 


তারেক জিয়া বলেন, সকলে মিলে সিদ্ধান্ত নিলে তথ্য ফাঁস হয়ে যায়। অনেকেই নানা রকম বাধা সৃষ্টি করেন, কমিটি বাণিজ্য করেন। তিনি স্থায়ী কমিটির কয়েকজন সদস্যের নাম না উচ্চারণ করে অভিযোগ করেন যে, অতীতে কেউ কেউ এসব কমিটি গঠন করতে গিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ গ্রহণ করেছেন। এ ধরনের তথ্য তার কাছে আছে বলেও তারেক দাবি করেন। 

এই সময় স্থায়ী কমিটির অন্তত দুজন সদস্য এই ধরনের বক্তব্যের প্রতিবাদ করেন। তারা বলেন যে, আমরা দীর্ঘদিন কষ্ট নির্যাতন ভোগ করে সংগঠন পরিচালনা করছে। এ ধরনের অভিযোগ আমাদের বিশ্বাসের ওপর আঘাত। অবশ্য তারেক জিয়া বলেন, এই কারণেই আমি কোন দায় দায়িত্ব কাউকে দিতে চাচ্ছি না। ব্যর্থতার দায় যদি আমার হয় তাহলে দলের পরিবর্তনও আমি করবো এবং এই পরিবর্তন করতে গিয়ে ছোটখাটো ভুল-ত্রুটি হতেই পারে। এই ভুল-ত্রুটি বা বর্থ্যতার দায়-দায়িত্ব নিজের কাধে তুলে নিয়ে তারেক বলেন, সামনের দিনগুলোতে আরও বড় পরিবর্তন হবে। যারা স্থায়ী কমিটির সদস্য আছেন তাদেরকে সংগঠনের যে পরিবর্তনগুলো হচ্ছে সেই পরিবর্তনের পক্ষে কাজ করার জন্য আহ্বান জানান লন্ডনে পলাতক এই নেতা। তবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বৈঠকের শেষ পর্যায় তার নিজের সরে যাওয়ার ইচ্ছা পুনরায় ব্যক্ত করেন। জবাবে তারেক জিয়া জানান, যথা সময়ে তার সরে যাওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেয়া হবে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭