ইনসাইড পলিটিক্স

ইচ্ছার বিরুদ্ধে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে বেগম জিয়াকে?


প্রকাশ: 22/06/2024


Thumbnail

গত রাতে আকস্মিকভাবেই বেগম খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তার শারীরিক অবস্থার অবনতির জন্যই তাকে এভারকেয়ারে নেওয়া হয়েছে এবং সেখানে তাকে সিসিইউতে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। কিন্তু বেগম জিয়ার পরিবারের একাধিক সদস্য জানিয়েছেন যে, বেগম খালেদা জিয়ার অবস্থা মোটেও তেমন গুরুতর ছিল না। তাকে একরকম জোর করে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। এর পিছনে অন্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে বলেও অন্তত একজন পরিবারের সদস্য দাবি করেছেন। তার মতে, তারেক জিয়ার নির্দেশে বেগম খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে সিসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। যেন তিনি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিজেকে সম্পৃক্ত করতে না পারেন।

গত কিছুদিন ধরে বিএনপিতে তোলপাড় চলছে। তারেক জিয়ার স্বেচ্ছাচারিতায় বিএনপি নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ। সেখানে গণ পদত্যাগের পরিকল্পনা করছে কোন কোন বিএনপির নেতা। এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে যে, দলের মহাসচিব নিজেকে নিস্ক্রিয় রেখেছেন। তিনি মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করতে চান না বলেও আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেছেন।

এ রকম পরিস্থিতিতে বেগম খালেদা জিয়াকে সক্রিয় করার উদ্যোগ নেয় বিএনপির নেতারা। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নিজে সাক্ষাৎ করেন বেগম খালেদা জিয়ার সাথে। বিএনপির সার্বিক অবস্থা এবং রাতের অন্ধকারে কমিটি বদল নিয়ে তিনি বেগম জিয়ার সঙ্গে কথা বলেন। ঈদের দিন দুই দফায় বিএনপির ১৫ জন নেতা বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং দলের ভিতর যে কাণ্ডগুলো ঘটছে সে সম্পর্কে তাকে অবহিত করেন। বেগম খালেদা জিয়াও তাদেরকে আশ্বস্ত করেন যে, বিষয়গুলো তিনি দেখবেন। আর এর ফলে তিনি আস্তে আস্তে দলের কার্যক্রমে সক্রিয় হচ্ছিলেন। বিভিন্ন সময় রাতের অন্ধকারে যে কমিটি গঠন করা হচ্ছিল সে যেন না হয়, এ নিয়েও তিনি লন্ডনে পলাতক তার ছেলের সঙ্গে কথা বলেন এবং কমিটি গঠনসহ বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে দলের সকলের মতামত গ্রহণের প্রয়োজনীয়তার ওপর আলোকপাত করেন।

বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে যে, বেগম জিয়ার এই পরামর্শ তারেক জিয়া সঠিকভাবে নেননি। তিনি এতে বিরক্ত হয়েছেন। তাছাড়া বেগম খালেদা জিয়া আবার রাজনীতিতে সক্রিয় হোক, তার সমর্থক এবং পছন্দের ব্যক্তিরা দলে গুরুত্ব পাক, এটি তারেক জিয়া চান না। তারেক জিয়া মনে করেন যে, দলে বেগম খালেদা জিয়া এবং তার যৌথ নেতৃত্ব থাকলে সংগঠনকে ঠিকঠাকমতো গোছানো যাবে না। আর একারণেই বেগম খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখার জন্য তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে পাঠিয়েছেন বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, এভারকেয়ার হাসপাতালে থাকলে বেগম খালেদা জিয়া রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় হতে পারবেন না। নেতাকর্মীদের সঙ্গে রাজনৈতিক বিষয়গুলো নিয়েও আলোচনা করতে পারবেন না। ফলে তারেক জিয়া এই ফাঁকে বিএনপির স্থায়ী কমিটিসহ বিভিন্ন কমিটি পুনর্গঠনের কাজ সম্পন্ন করতে পারবেন।

তবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য এ ধরণের অভিযোগকে নিষ্ঠুর কৌতুক হিসেবে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। তার শরীরের অবস্থা কখনও ভাল থাকে, কখনও খারাপ থাকে। গত রাতে তার শারীরিক অবস্থার আসলেই অবনতি ঘটেছিল। সে কারণেই তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

তিনি দাবি করেন, দীর্ঘদিন ধরেই বেগম জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। কিন্তু সরকার সেই অনুরোধ শুনছে না। বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে রাজনীতি করার কোনো সুযোগ নেই বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

তবে এভারকেয়ার হাসপাতালের একজন চিকিৎসক বলেছেন যে, বেগম খালেদা জিয়ার অবস্থা স্থিতিশীল। রাতে বুকে ব্যাথা অনুভব করার জন্য তাকে আনা হয়েছিল। তবে তার শারীরিক অবস্থার গুরুতর কোন অবনতি তারা লক্ষ্য করছে না।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭