ইনসাইড ইনভেস্টিগেশন

মতিউরকে সোনালী ব্যাংকের পরিচালক বানালো কে?


প্রকাশ: 23/06/2024


Thumbnail

দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক সোনালী ব্যাংকের আজ বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ব্যাংকটির পরিচালনা পরিষদের এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় সকাল ১১ টায়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন ব্যাংকের পরিচালনা বোর্ডে চেয়ারম্যান জিয়াউল হাসান সিদ্দিকী। আজকের বৈঠকে ব্যাংকের অন্যতম পরিচালক ড. মতিউর রহমান যোগ দেননি। ছাগল কাণ্ডে আলোচিত বিতর্কিত সমালোচিত এই এনবিআর কর্মকর্তা যেন বৈঠকে উপস্থিত না থাকেন সেজন্য তাকে টেলিফোনে জানিয়ে দেওয়া হয়। পরিচালক পরিষদের অধিকাংশ সদস্যই ড. মতিউর রহমানের সঙ্গে পরিচালনা পরিষদে বসতে অস্বীকৃতি জানান। এর পরপরই আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে মতিউর রহমান জানিয়ে দেওয়া হয় যে, সে যেন বৈঠকে উপস্থিত না থাকে। 


উল্লেখ্য, মতিউর রহমান ২০২২ সালের পয়লা ফেব্রুয়ারি তিন বছরের জন্য সোনালী ব্যাংকের পরিচালক নিযুক্ত হন। তাকে পরিচালক নিযুক্ত করার জন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ সুপারিশ করে। তখন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব ছিলেন শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ। শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ বিএনপি ঘরানার একজন আমলা ছিলেন। ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় তিনি জামালপুরের মেলান্দহ মাদারগঞ্জ এলাকার ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব পালন করেন। ওইসময় পরিকল্পিত নীল নকশা নির্বাচনে মির্জা আজম যেন নির্বাচন করতে না পারে সেজন্য বিএনপি-জামায়াত জোটের নির্দেশে মির্জা আজমের বিরুদ্ধে।মিথ্যা এবং হয়রানিমূলক মামলা দায়ের করা হয়। এই মামলার জন্য তাকে হাজিরার দিন দেওয়া হয়েছিল মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার শেষ দিনের আগের দিন। সেদিন মির্জা আজম যথারীতি হাজির হলে এই শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ তাকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এটি ছিল পূর্বপরিকল্পিত। 


কিন্তু শেষপর্যন্ত জনগণের তীব্র আন্দোলনের মুখে রাত মির্জা আজমকে জামিন দিতে বাধ্য হন অন্য একটি আদালত। কিন্তু শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ বিএনপি-জামায়াত জোটের আশীর্বাদ পুষ্ট হয়ে হয়ে থাকলেও আওয়ামী লীগ সরকার আসলে আবার ভোল পাল্টে যান। নানা কৌশলে তিনি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং তিনি আর্থিক খাত বিভাগের সচিব থাকা অবস্থায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপক অনিয়ম এবং বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। তার একটি প্রমাণ হল মতিউর রহমানের মতো একজন দুর্বৃত্তকে সোনালী ব্যাংকের পরিচালক করা।

সূত্র জানিয়েছে যে, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ সোনালী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হিসেবে মতিউর রহমানকে নিয়োগ দেওয়ার ক্ষেত্রে অর্থসচিবের পরামর্শ গ্রহণ করেছিলেন, সেই সময় অর্থসচিব ছিলেন বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। আবদুর রউফের আগ্রহের কারণেই মতিউর রহমানকে সোনালী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য করা হয়েছিল বলে অনেকে দাবি করেন।


তবে বাংলা ইনসাইডারের নিরপক্ষে অনুসন্ধানে দেখা গেছে যে, আব্দুর রউফ তালুকদার এ বিষয়ে মোটেও মাথা ঘামাননি। আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ এবং অর্থ বিভাগ সম্পূর্ণ আলাদা। ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে কারা থাকবেন বা থাকবেন না সেটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ নির্ধারণ করেন। কোন অবস্থাতেই সেটা অর্থ বিভাগ নিয়ন্ত্রণ করে না। আর মতিউর রহমানের ব্যাপারে আব্দুর রউফ তালুকদার কিছু জানতেন না বলেও তার ঘনিষ্ঠরা নিশ্চিত করেছেন। মূলত শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহর সঙ্গে সংখ্যতার কারণেই মতিউর রহমানকে সোনালী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে নেওয়া হয়েছিল বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭