ইনসাইড বাংলাদেশ

মতির বিরুদ্ধে ‘রেড অ্যালার্ট’


প্রকাশ: 23/06/2024


Thumbnail

ড. মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি করা হয়েছে। সরকারের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। এনবিআরের সদ্য ওএসডি হওয়া এই সদস্য যেন দেশত্যাগ করতে না পারেন সেজন্য বিমান, স্থল, সীমান্ত গুলোতে সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। মতিউর রহমান এবং তার পরিবারের সদস্যরা যেন বর্তমান পরিস্থিতিতে কোন অবস্থাতেই দেশত্যাগ করতে না পারে সেজন্য এই অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে বলে দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। 

দুর্নীতি দমন কমিশন ইতোমধ্যেই তিন সদস্যের একটি তদন্ত দল গঠন করেছে, যারা মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তথ্য উপাত্তগুলো অনুসন্ধান করবে। এই অনুসন্ধান দলের তদন্ত কর্মকর্তারা আগামী দু একদিনের মধ্যে আদালতে মতিউর রহমানের বিদেশে যাওয়ার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা চাইতে পারে বলেও সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। দুর্নীতি দমন কমিশন এ ব্যাপারে তদন্ত কর্মকর্তাদেরকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন বলেও জানা গেছে। 

উল্লেখ্য, ছাগল কাণ্ডে আলোচিত এনবিআরের সাবেক সদস্য এবং কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট আপীলাত ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট ড. মতিউর রহমানের বিপুল দুর্নীতির খবর এখন সারা দেশে ‘টক অব দ্যা কান্ট্রি। দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্তের আগে গণমাধ্যমে তার অপকর্মের দীর্ঘ ফিরিস্তি প্রতিদিনই বেরোচ্ছে। 

তার দ্বিতীয় পক্ষের প্রথম সন্তান সাদিক অ্যাগ্রো থেকে একটি ১৫ লাখ টাকার ছাগল কিনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এর ছবি দেন এবং এটি ভাইরাল হয়। তখনই আলোচনায় আসে কে এই ইফাত। ইফাতের পিতার খোঁজ করতে গিয়ে জানা যায় যে, তিনি এনবিআরের সদস্য এবং কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট আপীলাত ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট ড. মতিউর রহমানের পুত্র। তবে মতিউর রহমান এ বিষয়টি সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন। তিনি জানান যে, এই নামে তার কোন পুত্র নেই। 

এখন জানা গিয়েছে, তার প্রথম স্ত্রীর আপত্তির কারণেই এবং প্রথম স্ত্রীর পরামর্শেই মতিউর রহমান এ ধরনের আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। আর এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেই তিনি পরবর্তীতে ফেঁসে যাচ্ছেন। যখন গণমাধ্যম ইফাতের প্রকৃত পিতার তথ্য অনুসন্ধান করে তখন তারা জানতে পারে যে, ড. মতিউর রহমানের দ্বিতীয় স্ত্রীর প্রথম সন্তান হলেন ইফাত। এর পরপরই দেখা যায় ড. মতিউর রহমান তার প্রথম স্ত্রী, পুত্র, কন্যা প্রত্যেকে যেন একেকজন রত্নভাণ্ডার গড়েছেন। তাদের হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়ে থাকে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হুলস্থুল পড়ে যায়। সরকারের জন্য পরিস্থিতি বিব্রতকর হয়। 

এই মতিউর রহমান আবার সোনালী ব্যাংকের পরিচালনা হিসেবে মনোনীত হয়েছিলেন। সবকিছু মিলিয়ে তার দুর্নীতির ফিরিস্তি যেন বেনজীর আহমেদের দুর্নীতিকেও হার মানিয়ে দেয়। এরকম বাস্তবতায় আজ দুর্নীতি দমন কমিশন আনুষ্ঠানিকভাবে মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। একই সাথে মতিউর রহমান যেন দেশ ত্যাগ করতে না পারে সেজন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

এর আগে বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে তদন্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করার আগেই তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। এবার মতিউর রহমানের ক্ষেত্রে যেন তেমনটি না ঘটে সেজন্য দুদক শুরু থেকে সতর্ক। তবে একাধিক সূত্র বলছে, মতিউর রহমান এবং তার প্রথম স্ত্রী দেশে থাকলেও তার প্রথম স্ত্রীর ঘরে সন্তান বিদেশে অবস্থান করছেন। তার দ্বিতীয় স্ত্রী এবং দুই সন্তান ইতোমধ্যে মালয়েশিয়ায় চলে গেছেন বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র ইঙ্গিত করেছে। তবে মতিউর রহমান এখন পর্যন্ত দেশে আছেন। দেশে থাকলেও গতকাল তিনি তার কর্মস্থলে যাননি। ইতোমধ্যে তাকে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে ওএসডি করা হয়েছে বলে সরকারি প্রজ্ঞাপন বলা হয়েছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭