ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

মুক্ত জীবনে অ্যাসাঞ্জ, ফিরলেন নিজ জন্মভূমিতে


প্রকাশ: 26/06/2024


Thumbnail

উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ নিজ জন্মভূমি অস্ট্রেলিয়ায় পৌঁছেছেন। তাকে বহনকারী চার্টার্ড বিমানটি আজ বুধবার (২৬ জুন) অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরায় পৌঁছায়। অ্যাসাঞ্জকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানাতে আসেন তার বাবা এবং স্ত্রী স্টেলা।

অ্যাসাঞ্জের কিছু সমর্থকও তাকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত হয়েছে। অ্যাসাঞ্জের আগমনে তারা উল্লাস করেন।


মার্কিন ‘গুপ্তচরবৃত্তি’ আইন লঙ্ঘনের দায় স্বীকার করে নেওয়ার চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের সঙ্গে আপস রফায় পৌঁছানোর পর সোমবার যুক্তরাজ্যের একটি উচ্চ নিরাপত্তার কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন অ্যাসাঞ্জ।

এরপর চুক্তি অনুযায়ী মঙ্গলবার তিনি যুক্তরাজ্য থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নর্দান মারিয়ানা দ্বীপপুঞ্জে যান। বুধবার মারিয়ানার রাজধানী সাইপ্যানের আদালত ভবন গিয়ে দোষ স্বীকারের পর অ্যাসাঞ্জের মামলা শেষ হয় এবং তিনি পুরোপুরি মুক্ত হন।

সাংবাদিকদেরকে এসময় তার আইনজীবী বলেন, “শেষ পর্যন্ত ১৪ বছরের আইনি লড়াই শেষে জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ মুক্ত মানুষ হিসেবে বাড়ি ফিরতে পারছেন।”

তিন ঘণ্টা শুনানি শেষে আদালত থেকে বের হয়ে আসার কিছুক্ষণের মধ্যেই অস্ট্রেলিয়ার রাজধানী ক্যানবেরার উদ্দেশে একটি উড়োজাহাজে চেপে সাইপ্যান ছাড়েন অ্যাসাঞ্জ।

উইকিলিকস জানিয়েছে, মাল্টাভিত্তিক ভিস্তাজেটের একটি ভাড়া করা উড়োজাহাজে করে তিনি দেশে ফিরেছেন। অস্ট্রেলিয়ার স্থানীয় সময় ৬টা ৪১ মিনিটের দিকে তিনি ক্যানবেরায় নামেন।

এরমাধ্যমে উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা অ্যাসাঞ্জ বহু বছর পর মুক্ত জীবনে ফিরলেন। ৫ বছর ধরে যুক্তরাজ্যের বেলমার্শ কারাগারে বন্দি ছিলেন তিনি। এর আগে আরও ৭ বছর যুক্তরাজ্যে অবস্থিত ইকুয়েডরের দূতাবাসে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়ে অবস্থান করছিলেন অ্যাসাঞ্জ।

যুক্তরাজ্য থেকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণের বিরুদ্ধে বহু বছর ধরে আইনি লড়াই করেছেন অ্যাসাঞ্জ। যুক্তরাজ্যের পুলিশ ৫২ বছর বয়সী অ্যাসাঞ্জকে ২০১৯ সালের গ্রেপ্তার করেছিল। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিষয়ক গোপন তথ্য সংগ্রহ এবং প্রকাশের ষড়যন্ত্রে জড়িত।

অ্যাসাঞ্জ কী কী তথ্য ফাঁস করেছিলেন?

অ্যাসাঞ্জের প্রতিষ্ঠিত ওয়েবসাইট উইকিলিকসে অনেক গোপন অথবা বিধিনিষেধ দেওয়া প্রতিবেদন ফাঁস করা হয়েছে। যেগুলোর বেশিরভাগই যুদ্ধ, নজরদারি এবং দুর্নীতি বিষয়ক।

২০১০ সালে উইকিলিকস যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর একটি হেলিকপ্টারের ভিডিও প্রকাশ করে। ভিডিওটিতে দেখা যায়, ইরাকের রাজধানী বাগদাদে হেলিকপ্টার থেকে গুলি করে সাধারণ বেসামরিক মানুষকে হত্যা করছে মার্কিন সেনারা।

এছাড়া উইকিলিকস যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর সাবেক বিশ্লেষক চেলসি ম্যানিংয়ের দেওয়া হাজার হাজার গোপন নথি ফাঁস করে। এসব নথি থেকে জানা যায় আফগানিস্তান যুদ্ধে কয়েক হাজার সাধারণ মানুষকে হত্যা করেছে মার্কিন সেনারা।

এগুলো ফাঁস করার পর পুরো বিশ্বে আলোড়ন তৈরি হয়। অন্যান্য দেশগুলোতে যুদ্ধের নামে গিয়ে মার্কিন সেনারা কী কী করছে সেগুলো নিয়ে ভাবা শুরু করে বিশ্বের বাকি দেশগুলো। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র দাবি করে এগুলো ফাঁস করার কারণে মার্কিন সেনাদের জীবন ঝুঁকিতে পড়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনে তিনি তাদের সেনাবাহিনীর স্পর্শকাতর ডাটাবেজে ঢোকার চেষ্টা করেছেন। বিচারের মুখোমুখি করতে দেশটি তার বিরুদ্ধে ১৮টি অভিযোগ আনে।

তবে অ্যাসাঞ্জ সবসময় দাবি করেছেন মার্কিন সেনারা যেসব অপরাধ করেছে সেগুলো তিনি ফাঁস করেছেন এবং তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে সেগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭