ইনসাইড বাংলাদেশ

মতিকে নিয়ে অনেক প্রশ্ন: উত্তর নেই


প্রকাশ: 26/06/2024


Thumbnail

এনবিআরের সদ্য বিদায়ী সদস্য এবং ভ্যাট এবং কাস্টমস আপীলাত ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রেসিডেন্ট ড. মতিউর রহমানকে নিয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। তিনি দেশে আছেন না বিদেশে আছেন এই প্রশ্নের যেমন উত্তর নেই, তেমনি উত্তর নেই অনেক প্রশ্নের।

গতকাল মতিউর রহমান কাস্টমস বিভাগের কর্মকর্তাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে তাকে রক্ষার জন্য আবেদন করেন। তিনি কাস্টমস কর্মকর্তাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে আবেগঘন এক বার্তায় উল্লেখ করেন যে, বিভিন্ন সময় তিনি  সহকর্মীদের সহযোগিতা করেছেন, তাদের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন। এখন তার খারাপ সময়, এখন তার পক্ষে দাঁড়ানোর জন্য আহ্বান করেছেন। কাস্টমস কর্মকর্তারা যেন তার পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করে সে জন্য তিনি সকলের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।

এই হোয়াটসঅ্যাপ বার্তাটি তিনি দেশে থেকে গিয়েছেন না বিদেশ থেকে দিয়েছেন- এ নিয়ে নানারকম প্রশ্ন উঠেছে। অনেকেই বলছেন যে, মতিউর রহমান হয়তো দেশেই আছে। তবে বেশিরভাগের ধারণা মতিউর রহমান দেশত্যাগ করেছেন। তবে দেশত্যাগ করে তিনি কোথায় গিয়েছেন সে সম্পর্কে কোন তথ্য নেই।

একটি সূত্র বলছে, মতিউর রহমান আগরতলা দিয়ে দেশ ত্যাগ করেছেন এবং ভারতে অবস্থান গ্রহণ করছেন।

বেনজীর আহমেদের মতো আশ্চর্যজনকভাবে মতিউর রহমানেরও পাসপোর্টে বেসরকারি চাকরিজীবী লেখা। যে কারণে তিনি সরকারের অনুমোদন ছাড়াই বিদেশ যেতে পারেন। আর এটি কীভাবে সম্ভব হল সেটি নিয়েও এখন প্রশ্ন উঠেছে।

সাধারণত সরকারি কোনো কর্মকর্তার বাইরে যেতে গেলে তাকে সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন লাগে। এনবিআরের একজন সদস্য যে মাপের কর্মকর্তা তার বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন প্রয়োজন। কিন্তু এই ধরণের কোনো অনুমোদন গ্রহণ করা হয়নি এবং ছুটির আবেদনও মতিউর রহমান করেননি। কাজেই বোঝা যায় যে, তিনি সরকারের অনুমতি ছাড়াই বিদেশ চলে গেছেন।

একজন সরকারি কর্মকর্তার সরকারি পাসপোর্ট নিয়ে চলাফেরা করতে হয়- এটাই তার নিয়ম। কিন্তু যদি কেউ মিথ্যা তথ্য দিয়ে বেসরকারি কর্মকর্তা হয়ে থাকেন, তাহলে তিনি বেসরকারি কর্মকর্তা হিসেবে বিভিন্ন দেশের ভিসা সংগ্রহ করতে পারেন এবং বিভিন্ন দেশে যেতে পারেন। মতিউর রহমান বেসরকারি পাসপোর্টই গ্রহণ করেছিলেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। বেনজীর আহমেদের মতোই তিনি তার সরকারি চাকরির পরিচয় গোপন করে বেসরকারি চাকরিজীবী হিসেবে পাসপোর্ট গ্রহণ করেছিলেন।

প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে সরকারি কর্মকর্তারা এরকম ভুয়া তথ্য দিয়ে কিভাবে পাসপোর্ট পান এবং এই সমস্ত পাসপোর্টের প্রদত্ত তথ্য যথেষ্ট যাচাই বাছাই না করেই কিভাবে পাসপোর্ট ইস্যু করা হয়? মতিউর রহমান সম্পর্কে জানা গেছে যে, যখন ছাগল কাণ্ডের সূত্রপাত হয় এবং মতিউর রহমান বিবৃতি দিয়ে বিষয়টি অস্বীকার করেন। তিনি জানান যে কথিত ইফাতের পিতা তিনি নন এবং ইফাতকে তিনি চেনেন না। একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে তিনি সাক্ষাত্কার দেন। তখনই তিনি বুঝতে পারে যে, এর পরিণতি ভালো হবে না। তারপরই তিনি তার প্রথম স্ত্রী লাকী এবং প্রথম ঘরের ছেলেকে নিয়ে বিদেশ পাড়ি দিয়েছেন বলে একাধিক সূত্র দাবি করেছে। এরপর তার দ্বিতীয় স্ত্রী এবং সন্তানরা বিদেশে পাড়ি দেয়। তবে দুজনের গন্তব্য আলাদা ছিল।

একটি সূত্র দাবি করছে মতিউর রহমান ভারতে অবস্থান করছেন। সেখান থেকে তিনি হয়তো অন্য কোন দেশে যেতে পারেন। আর তার দ্বিতীয় স্ত্রী ইতোমধ্যে মালয়শিয়া গেছেন। সেখানে তিনি সেকেন্ড হোম করেছেন বলে জানা গেছে। তবে সরকারি কর্মকর্তা এভাবে বেসরকারি কর্মকর্তা সেঁজে ভুয়া পরিচয় দিয়ে পাসপোর্ট নেওয়ার বিষয়ে অনতিবিলম্বে সরকারের তদারকি দরকার বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। এখন দেখার বিষয় যে মতিউর রহমানের পক্ষে কাস্টমস কর্মকর্তারা অবস্থান গ্রহণ করেন কি না।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭