ইনসাইড গ্রাউন্ড

পুরোনো আর নব্য 'চোকার' এর ফাইনালে আক্ষেপ বাড়বে কার?


প্রকাশ: 29/06/2024


Thumbnail

২০০৭ থেকে ২০১৩। কিংবদন্তি ও সর্বকালের সেরা অধিনায়ক খ্যাত মহেন্দ্র সিং ধোনির নেতৃত্বে মাত্র ৬ বছরের মধ্যে ভারতীয় ক্রিকেট যেন নিজেদের সোনালী সময় পার করেছে। তাদের এই প্রাইম টাইমে একই সাথে টি-২০ বিশ্বকাপ, ওয়ানডে বিশ্বকাপ ও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি- তিনটি মেজর শিরোপা জিতেছিল তারা।

তবে সেই ২০১৩ সালে বার্মিংহামে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পর পেরিয়ে গেছে আরও ১১টি বছর। অনুষ্ঠিত হয়েছে আইসিসির বিভিন্ন বড় টুর্নামেন্ট। তবুও ভারতের নেই কোন অর্জন। এর মধ্যে তিনটি ওয়ানডে বিশ্বকাপে একবার ফাইনালসহ দুইবার শেষ চারে গিয়ে ইতি টানতে হয়েছে তাদের বিশ্বকাপ যাত্রার।

ভারতের টি-২০ এর কুফাটা শুরু ঢাকায়, ২০১৪ সালে। সেবার ফাইনালে লঙ্কানদের কাছে হেরে শিরোপা স্বপ্ন ভাঙে ধোনি-কোহলিদের। পরের তিন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও ভক্তদের খুশি করতে পারেনি তারা। শেষবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে পাকিস্তানের বিপক্ষে সেই বিশাল হারও দগ্ধ করেছে ভারতীয়দের। যার ফলে বিশ্ব ক্রিকেটের নতুন ‘চোকার’ হিসেবেও কেউ কেউ ভেবে নিচ্ছেন ভারতকে।

অপরদিকে দক্ষিণ আফ্রিকার নামের সাথে অবশ্য ‘চোকার’ শব্দটা বিশেষভাবে পরিচিত। তবে তারা ফাইনালও হারেনি কোনদিন। তাহলে তারা ‘চোকার’ কেন? উত্তরটা হচ্ছে, শেষ চারে গিয়ে হতাশা নিয়ে ফেরা কিংবা অনাকাঙ্ক্ষিত ফলাফল করা। এই যেমন ২০১১ সালে মিরপুরের ঘটনাই ধরা যাক। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েও অপর গ্রুপের চতুর্থ র‍্যাঙ্কের দল নিউজিল্যান্ডের সাথে হেরে বিদায় নেয় প্রোটিয়ারা। ঠিক ক’দিন আগে এই মাঠেই স্বাগতিক বাংলাদেশকে ৭৮ রানে অলআউট করেছিল তারা। গ্রুপপর্বে আরেক স্বাগতিক ভারতকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন পর্যন্ত হয়। কিন্তু নকআউটে? সেই একই গল্প।

আপাতত বলা যায় রিয়েল ‘চোকার’ আর উদীয়মান ‘চোকার’দের ক্ল্যাসিকো এই ফাইনাল। যেখানে ভারত চাইবে ১১ বছর পর শিরোপা জিততে, আর দক্ষিণ আফ্রিকাও চাইবে ২৬ বছর পর নিজেদের প্রথম ট্রফি ঘরে তুলতে।

সবমিলিয়ে চলমান টি-২০ ব্শ্বিকাপের বাকি আর মাত্র একটি ম্যাচ। এরপরই পর্দা নামার পাশাপাশি মিলবে নতুন চ্যাম্পিয়নদের দেখা। যেখানে শিরোপার স্বাদ গ্রহণের জন্য মুখিয়ে রয়েছে দুই অপরাজিত পরাশক্তি ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা।

ইতিহাস গড়ে প্রথমবারের মতো কোনো বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে প্রোটিয়াদের এটি প্রথম ফাইনাল। আর প্রতিপক্ষ ভারত অবশ্য সর্বশেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপেই খেলেছে ফাইনাল। ফেভারিটের মতো খেলে এবারও ফাইনালে তারা। বার্বাডোজের কেনসিংটন ওভালে শনিবার (২৯ জুন) মাঠে গড়াবে মেগা ফাইনাল। বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টায় শুরু হবে ম্যাচটি।

এমন এক ম্যাচ যেখানে পরিসংখ্যান, অতীত ইতিহাস, শক্তি-সামর্থ্য—কাজে দেবে না কিছুই। যারা নিজেদের সবটা নিংড়ে দিতে পারবে, শিরোপা তাদের। তাছাড়া, ভারত কিংবা দক্ষিণ আফ্রিকা কেউই পিছিয়ে নেই কারও চেয়ে। যে কারণে অপেক্ষা জমজমাট এক লড়াইয়ের। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং—তিন বিভাগেই টুর্নামেন্টের সবচেয়ে ভারসাম্যপূর্ণ দুদল উঠেছে ফাইনালে।

ফাইনালের আগে ছন্দে আছেন ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মা। টানা দুই ম্যাচে অর্ধশতকের দেখা পেলেন তিনি। তার নেতৃত্বে পুরো দলই আছে ছন্দে। গ্রুপপর্ব থেকে সুপার এইট, সেখান থেকে সেমি, কোথাও প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়তে হয়নি ভারতকে।

আর দক্ষিণ আফ্রিকার যাত্রা অতটা মসৃণ না হলেও ইতিহাস গড়ার পথে দলটি খেলেছে উজাড় করে। এইডেন মার্করামের নেতৃত্বে দলটি যা করেছে, প্রোটিয়াদের ইতিহাসেই তো এমনটি হয়নি আগে।

সবমিলিয়ে এখন দেখার পালা, কার হাতে উঠবে এবারের টি-২০ বিশ্বকাপের শিরোপা, আর কার আক্ষেপ বাড়বে? কারণ দুই দলের জন্যই এই ফাইনালটি যেন এক প্রকার যুদ্ধ। এক দলের অপেক্ষা টানা এক দশকের আর অন্য দলের তো সারা জীবনের। তাই ভক্ত-সমর্থকসহ সকলেরই বিশেষ নজর এখন আজকের এই ফাইনালের দিকে।

টি-টোয়েন্টি ম্যাচে দুই দল এখন পর্যন্ত ২৬ বার মুখোমুখি হয়েছে। ভারত ২৬ ম্যাচের মধ্যে ১৪টিতে জয়ী হয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার চেয়ে এগিয়ে রয়েছে, যেখানে দক্ষিণ আফ্রিকা ১১টি ম্যাচ জিতেছে এবং একটি ম্যাচে কোনো ফলাফল হয়নি। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে মুখোমুখি লড়াইয়ে ভারত ৬ ম্যাচের মধ্যে ৪টিতে জিতেছে, যদিও দক্ষিণ আফ্রিকা ২০২২ সংস্করণের দুই দলের মুখোমুখি হওয়া শেষ বিশ্বকাপ ম্যাচে জয়লাভ করে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭