ইনসাইড পলিটিক্স

দলীয় কোন্দল-সহিংসতা: কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ


প্রকাশ: 29/06/2024


Thumbnail

আওয়ামী লীগে দলীয় কোন্দল এবং সেখান থেকে সহিংসতা ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ছে সারা দেশে। আর এবিষয়ে অবশেষে কঠোর হতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতারা বলছেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের ভেতর বিশৃঙ্খল অবস্থা নিয়ে অত্যন্ত বিরক্ত হয়েছেন এবং তিনি এগুলো দমনের জন্য কঠোর অবস্থা নেয়ার জন্য ইতোমধ্যেই নির্দেশ দিয়েছেন। দলের সাধারণ সম্পাদক বিভিন্ন স্থানে সাংগঠনিক সম্পাদকদের তদন্ত রিপোর্ট দিতে বলেছেন এবং এ তদন্ত রিপোর্টের প্রেক্ষিতে যারা যে স্থানে দায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী দেশে ফেরার পরই আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে এবং এ বৈঠকে এ বিষয়টি আলোচিত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সাম্প্রতিক সময়ে রাজশাহীর বাঘাতে যে ঘটনা ঘটেছে সেটি নিয়ে আওয়ামী লীগের হাই কমান্ড অত্যন্ত বিরক্ত। বিশেষ করে একজন এমপিকে ছাত্রলীগ এবং যুবলীগ কর্তৃক অবাঞ্ছিত ঘোষণা করার বিষয়টি আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ সহজভাবে নিতে পারেননি। আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে এব্যাপারে ইতোমধ্যে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে এবং দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানা গেছে। সারাদেশের যেখানে বিশৃঙ্খলা হবে, যেখানে চেইন অব কমান্ড ভাঙ্গা হবে সেখানে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করার জন্য আওয়ামী লীগ সভাপতি ইতোমধ্যেই নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

উল্লেখ্য যে, ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে থেকেই আওয়ামী লীগের ভেতর কোন্দল ছড়িয়ে পড়তে থাকে। বিশেষ করে নির্বাচন উন্মুক্ত করে দেয়ার পর আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগের লড়াই তীব্র হয়। এসময় আওয়ামী লীগের যারা দলীয় প্রতীক পেয়েছেন এবং যারা স্বতন্ত্র হিসেবে দাঁড়াচ্ছেন তার মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড়িয়ে যায়। একে অন্যের বিরুদ্ধে বিষেদাগার করতে থাকেন এবং পরবর্তীতে তা সহিংসতায় রূপ নেয়। নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের ভেতর এই বিরোধ আরো বাড়তে থাকে। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কয়েক দফা এই বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য আহ্বান জানান। তিনি নির্বাচনে যা হবার হয়ে গেছে, ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটিয়ে একসাথে সকলকে কাজ করার জন্য নির্দেশ দেন। কিন্তু তারপরও বিভিন্ন স্থানে থেমে থেমে সহিংসতার ঘটনা ঘটছে এবং এ সহিংসতা এখন উদ্বেগজনক পর্যায়ে চলে গেছে বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা।

এ অবস্থায় আর ধৈর্য ধরার উপায় নেয় বলেও মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের একজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেছেন যে, দ্রুতই দলের ভেতর চেইন অব কমান্ড ফিরিয়ে আনা হবে এবং এজন্য যা যা করা দরকার সেটি করা হবে। তবে আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেছেন, যে ১৮ থেকে ২০ জেলায় দলীয় কোন্দল চরম আকার ধারণ করেছে এবং সহিংসতা বেড়েছে সেসমস্ত এলাকাগুলোতে সাংগঠনিক সম্পাদকরা দুই পক্ষকে নিয়ে বসবে এবং শেষ বারের মতো সতর্কবার্তা দিবে। এরপরও যদি কাজ না হয় তাহলে সহিংসতার সাথে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং প্রয়োজনে তাদেরকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতারাই যখন বিরোধে জড়িয়ে যান তখন সেটি দলের জন্য একটি খারাপ বার্তা বহন করে। সেরকম পরিস্থিতি এখন হয়েছে। তবে আওয়ামী লীগের নেতারা আশাবাদী। আওয়ামী লীগের নেতারা মনে করছেন, বাজেট অধিবেশন এবং প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরের পর এই পরিস্থিতিগুলোর দিকে নজরদারি বাড়ানো হবে। এবং এধরনের সহিংস ঘটনার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ কঠোর অবস্থান গ্রহণ করবে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭