ইনসাইড বাংলাদেশ

আমলারা কেন সার্বজনীন পেনশন স্কিমে যাচ্ছেন না?


প্রকাশ: 30/06/2024


Thumbnail

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সর্বাত্মক কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে। আগামীকাল থেকে এই সর্বাত্মক কর্মসূচি পালিত হবে। শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নয়, দেশের অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও সার্বজনীন পেনশন স্কিমে অন্তর্ভুক্তির বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেছে।

আগামীকাল ১ জুলাই থেকে রাষ্ট্রায়ত্ত, স্বায়ত্তশাসিত, স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে সাধারণ পেনশনের পরিবর্তে সার্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় স্কিম চালুর কথা রয়েছে। আর এই সার্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় স্কিমে অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে নজিরবিহীন অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে। শুধু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় নয়, অন্যান্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে যেখানে এই পেনশন স্কিম এর সঙ্গে সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে যুক্ত করা হচ্ছে, সেখানেই তার প্রতিবাদ হচ্ছে।

চলতি বছরের ১৩ মার্চ অর্থ মন্ত্রণালয় প্রত্যয় স্কিমে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টদের অন্তর্ভুক্ত করার প্রজ্ঞাপন জারি করেন। এর ফলে পেনশন বাবদ অধ্যাপক, জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা প্রায় এক কোটি এবং তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা ৩০ থেকে ৬০ লাখ টাকা কম পাবে বলে বলে তারা অভিযোগ করেছেন। সুযোগ-সুবিধা কমে যাওয়ার কারণে মেধাবীরা শিক্ষা পেশায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন বলেও অনেকে মনে করছেন।

শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ে নয়, এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং পর্যায়ক্রমে ধাপে ধাপে সকল সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে বর্তমান প্রচলিত পেনশন ব্যবস্থার পরিবর্তে সার্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করার একটি নীতিগত অবস্থান অর্থ মন্ত্রণালয় গ্রহণ করেছে বলে জানা গেছে। আর এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রত্যয় স্কিম চালুর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

সরকার বেসরকারী চাকরিজীবী এবং বেসরকারি ব্যক্তিদের জন্য সার্বজনীন পেনশন স্কিম ব্যবস্থা চালু করে। এটি একটি অসাধারণ উদ্যোগ। কিন্তু আমলাতন্ত্রের খপ্পরে পড়ে এই উদ্যোগটি মুখ থুবড়ে পড়েছে। এখনও পর্যন্ত এই উদ্যোগে সাধারণ মানুষ তেমনভাবে সাড়া দেয়নি। এই উদ্যোগের জন্য যেভাবে প্রচারণা এবং বিভিন্ন মহলকে সম্পৃক্ত করা উচিত ছিল সেটি আমলারা করেনি। কারণ এই সার্বজনীন পেনশন স্কিমের সমস্ত দায়িত্ব বিভিন্ন আমলাদের উপর দেওয়া হয়েছে। এটি একটি আমলা পুনর্বাসন কেন্দ্র হিসেবেই এখন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

প্রশ্ন উঠেছে যে, স্বায়ত্তশাসিত, আধা স্বায়ত্তশাসিত সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতেও যখন সার্বজনীন পেনশন স্কিম চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, বিশেষ করে যখন সার্বজনীন পেনশন স্কিমে বেসরকারি লোকজনের আগ্রহ নেই, তখন আমলারা কেন সার্বজনীন পেনশন স্কিম নিচ্ছেন না? বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আন্দোলনের জবাবে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে বলা হচ্ছে, এই প্রত্যয় স্কিম অত্যন্ত ভালো এবং প্রচলিত পেনশন ব্যবস্থার চেয়েও এটি উন্নত। তাই যদি হবে তাহলে আমলারা কেন এই কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা নিচ্ছেন পেনশনের নামে।

এখন আমলারা সরকারের রাষ্ট্র থেকে যে পরিমাণ পেনশনের টাকা নেন সেটিও পুনর্মূল্যায়ন করার সময় এসেছে বলে অনেকে মনে করেন। সার্বজনীন পেনশন স্কিম যদি সফল করতে হয়, তাহলে সরকারি চাকরিজীবীদেরকে এর মধ্যে যুক্ত করতে হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এই পেনশন স্কিম যদি ভালোই হয়, তাহলে আমলারা এর সঙ্গে কে যুক্ত হচ্ছে না, এই প্রশ্ন উঠেছে। আগে আমরা এই পেনশন গ্রহণ করুক, এই পেনশনের আওতাভুক্ত হোক। তাহলে সকলেই এই পেনশনের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হবে এবং সার্বজনীন পেনশন স্কিমের প্রতি সাধারণ মানুষের অনীহাও কেটে যাবে। আমলারা যদি এই পেনশন স্কিমে যুক্ত হন, তাহলে বোঝা যাবে এটি ভালো। প্রশ্ন উঠেছে, এতই যদি ভালো হবে তাহলে আমলারা কেন এই স্কিমের সাথে যুক্ত হচ্ছেন না?



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭