ইনসাইড পলিটিক্স

আওয়ামী লীগে নেতা-কর্মীদের জন্য নানক-রহমান মডেল


প্রকাশ: 30/06/2024


Thumbnail

‘যদি থাকে নসিবে, আপনা আপনি আসিবে’। এই কৌশলেই যেন রাজনীতির দীর্ঘ সমুদ্র পাড়ি দিচ্ছেন আওয়ামী লীগের দুই হেভিওয়েট নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আব্দুর রহমান। আর একারণেই তারা রাজনীতিতে স্থিতিশীল আছেন। রাজনীতিতে তারা টিকে আছেন। হতাশা তাদের গ্রাস করতে পারেনি। যে মর্যাদা এবং দায়িত্ব তারা পেয়েছেন সে মর্যাদা এবং দায়িত্বেই তারা সন্তুষ্ট। তারা কোন পদ বা মন্ত্রীত্বের জন্য কখনো দেন দরবার করেননি। অনেক সময় তারা বঞ্চিত হয়েছেন। অনেক সময় তারা অবজ্ঞার শিকার হয়েছেন। কিন্তু রাজনীতিতে এটিকে তারা স্বাভাবিক হিসেবেই নিয়েছেন। আর এই স্বাভাবিক হিসেবে নিয়েই তারা লেগে থেকেছেন, কাজ করেছেন, আদর্শের প্রশ্নে অবিচল থেকেছেন। দলের প্রধান নেতার প্রতি আনুগত্য এবং বিশ্বস্ততায় কোনদিন বিচ্যুত হননি। আর একারণে রাজনীতিতে এখন ক্রমশ উজ্জ্বল এবং শক্তিশালী অবস্থান গ্রহণ করেছেন আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট দুই নেতা। আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতা-কর্মী, ছাত্রলীগের সাবেক নেতৃবৃন্দ, হতাশাগ্রস্ত আওয়ামী লীগের জন্য এরাই যেন অনুকরণীয়। আওয়ামী লীগের জন্য এই দুই নেতাই এখন আদর্শ মডেল। আওয়ামী লীগের তৃণমূলের জন্য নানক-রহমান মডেল সবচেয়ে অনুকরণীয় হতে পারে বলে মনে করছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। 

আওয়ামী লীগের এই দুই নেতা, জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং আব্দুর রহমানের রাজনৈতিক ক্রমবিকাশ প্রায় একই রকম। তারা দুই জনেই তৃণমূল থেকে রাজনীতিতে এসেছেন। ৭৫ পরবর্তী আওয়ামী লীগের টাল-মাটাল সময়ে দলের প্রতি আস্থা রেখেছেন, দলের জন্য কাজ করেছেন, নির্যাতিত হয়েছেন, ত্যাগ শিকার করেছেন। কৈশরোত্তির্ণ যৌবনকে তারা বিসর্জন দিয়েছেন আদর্শের জন্য। আর আওয়ামী লীগ সভাপতির ১৯৮১ সালে স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর আওয়ামী লীগ পুনর্গঠন প্রক্রিয়ায় তারা নিবেদিত প্রাণ কর্মীর মতো শেখ হাসিনার সহযোদ্ধা হিসেবে কাজ করেছেন। শেখ হাসিনার বিশ্বাসের প্রতিদান দিয়েছেন। ছাত্রলীগের পরে মূল আওয়ামী লীগেও তারা ভালো সংগঠক এবং কর্মী বান্ধব হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছেন। 

কিন্তু তার বিনিময়ে তারা কি পেলেন না পেলেন তার হিসেব করেনি। রাজনীতিকে কখনো দেনা-পাওনার হিসেবের খাতা হিসেবে বিবেচনা করেননি। দুই জনেই ২০০৮ এর নির্বাচনের পর সংসদ সদস্য হয়েছিলেন। জাহাঙ্গীর কবীর নানক প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেলেও আব্দুর রহমান মন্ত্রীত্বের স্বাদ পাননি। এতে তিনি হতাশ হননি। সংগঠনে সময় দিয়েছেন। দলের জন্য কাজ করেছেন। 

২০১৮ এর নির্বাচনে এরা দু’জনেই মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েছেন। সাধারণত মনোনয়ন বঞ্চিত অনেকে দল থেকে বিচ্যুত হয়ে যায়, দলের মধ্যে তাদের তৎপরতা হ্রাস পায়, তারা নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়। কিন্তু আব্দুর রহমান এবং জাহাঙ্গীর কবির নানকের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা ছিলো সম্পূর্ণ উল্টো। তারা আরও সক্রিয় হয়, তারা সাংগঠনিক কাজে নিজেদের আরও মনোযোগী করেন। এবং এতে তারা স্বীকৃতিও পান। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক থেকে দু’জনেই আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্যের মতো মর্যাদাপূর্ণ পদে আসীন হন। এবার নির্বাচনে দু’জনই মনোনয়ন পেয়েছেন। দু’জনই মন্ত্রী হয়েছেন। মন্ত্রীত্ব গ্রহণ করে তারা একদিকে যেমন মন্ত্রণালয়ে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করছেন ঠিক একইভাবে সংগঠনেও মনোযোগী হয়েছেন। 

অনেকেই মনে করেন, জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং আব্দুর রহমান এর চেয়ে ভালো মন্ত্রণালয় পেতে পারতেন। রাজনীতিতে তাদের যে ত্যাগ, অবদান এবং অভিজ্ঞতা তাতে এর চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ে তাদের মানাতো। কিন্তু এনিয়ে তাদের মধ্যে কোন আক্ষেপ নেয়, কোন হতাশা নেয়। বরং শেখ হাসিনা যেটি করেছেন সেটি সঠিক এই নীতিতেই তারা আছেন। রাজনীতিতে তাদের চাওয়ার কিছু নেয়। তারা শুধু কাজ করতে চান। বঙ্গবন্ধুর আদশের্র জন্য, শেখ হাসিনার আদর্শের জন্য। আওয়ামী লীগের তরুণরা এই দুই নেতার থেকে কি এটি শিখতে পারবে?



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭