কালার ইনসাইড

চিত্রনায়িকা ববির বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা ও চুরির মামলা


প্রকাশ: 01/07/2024


Thumbnail

চিত্রনায়িকা ইয়ামিন হক ববির বিরুদ্ধে চুরি ও হত্যার উদ্দেশ্যে মারপিট করার অভিযোগে মামলা করেছেন মুহাম্মাদ সাকিব উদ্দোজা। গত ২৩ জুন, শুক্রবার দুপুরে গুলশান থানায় এই মামলাটি দায়ের করা হয়, যার নম্বর ১৩/১৬৪। গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম মামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। মামলার প্রথম আসামি মির্জা আবুল বাশার (৩৪) এবং দ্বিতীয় আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে ববিকে।

এ বিষয়ে তদন্ত করছেন গুলশান থানার উপপরিদর্শক আনোয়ার হোসাইন। তিনি জানান, ‘২৩ জুন মামলাটি হয়েছে। এরপরই ১৩ নম্বর মামলার বাদীর আসামিরা পাল্টা মামলা করেছেন। দুটি মামলাই বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে। তদন্তের স্বার্থে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না।’

মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘হত্যার উদ্দেশ্যে মারপিট করে সাধারণ ও গুরুতর জখম, চুরি, ক্ষতিসাধন ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের অপরাধ।’

মামলার বাদী ওয়াইএন সেন্টারের এজিএম মুহাম্মাদ সাকিব উদ্দোজা জানান, তাঁদের কাছ থেকে রেস্টুরেন্ট ভাড়া নেন আমান নামের একজন। এটার অবস্থান গুলশান ২–এর ১১৩ নম্বর সড়কে। আমান অর্থনৈতিকভাবে পুষিয়ে উঠতে পারছিলেন না। পরে ব্যবসায় তৃতীয় পক্ষ হিসেবে যুক্ত করেন আবুল বাশার ও চিত্রনায়িকা ববিকে। রেস্টুরেন্টের জিনিসপত্র তাঁরা কিনে নিয়েছেন, সেভাবেই চুক্তি করেন বলে জানান সাকিব।

চুক্তি অনুযায়ী, আমানকে ৫৫ লাখ টাকা দেওয়ার কথা ছিল। ববি ও বাশার প্রথমে ১৫ লাখ, পরে ১০ লাখ টাকার চেক প্রদান করেন, যা পরে ডিজঅনার হয়। এ নিয়েই দ্বন্দ্বের সূত্রপাত।

সাকিব উদ্দোজা আরও জানান, আমান একসময় তাঁদের তৃতীয় পক্ষের কাছে ভাড়া নিতে বলেন এবং কয়েক মাসের ভাড়া বকেয়া থাকা সত্ত্বেও মে মাসের ভাড়া দেন। কিন্তু একই রসিদ দিয়ে আরও একটি বিল তৈরি করা হয়, যেখানে লেখা ছিল,

‘ওয়াইএনসি কর্তৃপক্ষ আরও সাত লাখ টাকা বুঝে পেয়েছে।’ যা ছিল মিথ্যা। এ নিয়ে বিরোধ চরমে পৌঁছালে সাকিব থানায় অভিযোগ ও ১৩ জুন জিডি করেন।

রেস্টুরেন্ট তালাবন্ধ করার পর বাশার উত্তেজিত হয়ে জনতার হাতে পিটুনি খেয়েছিলেন। পরে আবার এসে গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে ম্যানেজার জয়নালসহ অন্যদের ভয়ভীতি দেখান। সাকিবের দাবি, বাশার তাঁর নাকে ঘুষি মারেন, যার ফলে ছয় ঘণ্টা রক্তপাত হয়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং মামলা দায়ের হয়।

সাকিব উদ্দোজা আরো বলেন, ‘আমরা দুজনের নামে মামলা করেছি। তাঁরা আমাদের মালিকসহ সব কর্মীর নামে মামলা করেছেন। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও ১০ জন। এ ঘটনার পর আমরা বসি। ঘটনার কোনো মীমাংসা হয় না। এর মধ্যেই গত শুক্রবার বাশার আবার তালা ভেঙে অনেক মালামাল নিয়ে যান। আমাদের হুমকি দিয়ে যান। পরে আমরাই এই খারাপ মানুষের হাত থেকে রক্ষার জন্য থানায় বসার পরিকল্পনা করেছি।’

ববির পক্ষ থেকে মো. আব্বাস বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন ভবনের মালিক শাহিনা ইয়াসমিন, তাঁর সন্তান জাওয়ান আল মামুনসহ ৭ জন ও অজ্ঞাতনামা ১০ থেকে ১২ জনের বিরুদ্ধে। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়,

‘পরস্পর যোগসাজশে হত্যার উদ্দেশ্যে মারপিট করে গুরুতর জখম করা হয়েছে। ৫৫ লাখ টাকার মালামাল চুরি করা হয়েছে। একটি ঘড়ি চুরি হয়েছে, যার দাম চার লাখ টাকা। এছাড়া নগদ ১ লাখ ৪৫ হাজার টাকা, দেড় ভরি স্বর্ণের চেইন ও একটি আইফোন চুরি হয়েছে। যা উদ্ধার হয়নি।’

এ বিষয়ে আবুল বাশার বলেন, ‘রেস্টুরেন্ট করার জন্য আমরা চুক্তিবদ্ধ হই। মূলত এটা ববির রেস্টুরেন্ট হওয়ার কথা ছিল, আমি ছিলাম অপারেশন পার্টনার। মে মাসের ভাড়াও দিয়েছি। আমাদের ইনভেস্টমেন্ট ৮০ থেকে ৯০ লাখ টাকার মতো হয়ে গেছে। আমরা মালিকপক্ষের কাছে বৈধতার কাগজ চাই। তাঁরা তা না দেওয়ায় ঝামেলা শুরু হয়।’

ঘটনার ফুটেজে দেখা যায়, ভবন থেকে আবুল বাশারকে মারধর করা হয়। বাশার জানান, ‘আমি ছিলাম একা, তাঁরা ১৫ থেকে ২০ জন ছিলেন।’

গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম জানান, ‘থানায় দুই পক্ষের মধ্যে বৈঠক হয়েছে। মালিক ও ভাড়াটের মধ্যে বিরোধ আছে। তারা মামলা করেছে। দুই পক্ষই জামিনে আছে। তাদের মধ্যস্থতা করে দেওয়ার কোনো ইচ্ছা আমাদের নেই। যদি তাঁরা নিজেরা মিউচুয়াল করতে চায়, তাহলে তা তাদের ব্যাপার।’

  



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭