ইনসাইড বাংলাদেশ

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বসতে চান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা


প্রকাশ: 01/07/2024


Thumbnail

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য নতুন পেনশন স্কীম ‘প্রত্যয়’ নিয়ে আন্দোলন শুরু হয়েছে। আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটে গেছে। নতুন পেনশন ব্যবস্থায় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সুবিধা কমবে এ বক্তব্য দিয়ে তারা আন্দোলনে গেছে। শিক্ষকরা তাই নতুন ব্যবস্থাটি প্রত্যাহারের দাবি করেছেন। আজ থেকে সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি পালন করা হচ্ছে। 

নতুন অর্থবছর অর্থাৎ ২০২৪-২৫ এর শুরুর দিন থেকে চালু হচ্ছে সার্বজনীন পেনশন কর্মসূচি ‘প্রত্যয়’। স্বশাসিত, স্বায়ত্বশাসিত, রাষ্ট্রয়াত্ত্ব, সংবিধিবদ্ধ, সমজাতীয় সংস্থা এবং তাদের অধীন অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর চাকরিতে আজ থেকে অর্থাৎ পহেলা জুলাই থেকে যারা যোগ দেবেন তাদের জন্য এই কর্মসূচি প্রযোজ্য হবে। আর এটি মেনে নিতে রাজি নয় শিক্ষক সমাজ। তারা এই সিদ্ধান্তকে বৈষম্যমূলক হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। 

তবে এখন পর্যন্ত সরকার নতুন পেনশন স্কিম নিয়ে অনঢ় অবস্থানে রয়েছে। এ অবস্থা থেকে সরে আসার কোন উপায় নেই বলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন। তিনি বলেছেন, প্রশাসনেও আগামী অর্থবছর থেকে অর্থাৎ ২০২৫ এর পহেলা জুলাই থেকে এই ব্যবস্থা চালু হবে। পর্যায়ক্রমে জাতীয় পেনশন স্কিমের আওতায় সব সরকারি কর্মকর্তারা যাবেন বলেও অর্থ মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে। 

কিন্তু শিক্ষকরা এই অবস্থা মেনে নিতে রাজি না। আর এটি নিয়ে আন্দোলনের পাশাপাশি তারা প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চান। আন্দোলনরত শিক্ষকদের একজন প্রতিনিধি বলেছেন, তারা মনে করেন প্রধানমন্ত্রী যদি পুরো বিষয়টি জানেন, তাহলে নিশ্চয় তিনি এই বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। 

শিক্ষকদের একজন নেতা দাবি করেছেন, প্রধানমন্ত্রীকে অন্ধকারে রেখে, ভুল বুঝিয়ে শিক্ষকদের উপর নতুন পেনশন ব্যবস্থা চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। একারণে তারা সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চান। এব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগেরও চেষ্টা করা হচ্ছে। 

শিক্ষকদের একজন প্রতিনিধি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী বর্তমানে সরকারি কাজে ভীষণ ব্যস্ত রয়েছেন। জাতীয় সংসদে বাজেট অধিবেশন চলছে। এই বাজেট অধিবেশন ৩ জুলাই শেষ হতে পারে। আগামী ৮ জুলাই প্রধানমন্ত্রী চীন সফরে যাবেন। এর আগে যেকোনভাবে শিক্ষকদের একটি প্রতিনিধি দল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছেন। তারা মনে করছেন, প্রধানমন্ত্রী শিক্ষকদের ব্যাপারে সমবেদনাশীল। এবং শিক্ষকদের প্রতি তিনি আলাদা সম্মান প্রদর্শন করেন। একারণেই পুরো বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর কাছে বলা হলে তিনি এর একটি সমাধান করবেন। 

শিক্ষকদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, এই ব্যবস্থাটি বৈষম্যমূলক এবং এই ব্যবস্থা কার্যকর হলে মেধাবীরা শিক্ষকতা পেশায় আসবেন না। এমনিতেই বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে মেধার সংকট দেখা দিচ্ছে। এর মধ্যে যদি এই পেনশন ব্যবস্থা চালু হয় তাহলে ক্রমান্বয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মেধাশূন্য হয়ে যাবে। আর তাদের মতে এই পেনশন ব্যবস্থায় শিক্ষকদের ক্ষতি ছাড়া কোন লাভ নেই। 

বিদ্যমান পেনশন ব্যবস্থায় শিক্ষকদের বেতন থেকে কোন টাকা কাটা হয় না। কিন্তু ‘প্রত্যয়’ ব্যবস্থায় ১০ শতাংশ টাকা কাটার বিধান করা হয়েছে। বর্তমান ব্যবস্থায় অধ্যাপকরা গ্র্যাচুয়িটি বা আনুতোষিক বাবদ এককালীন ৮০ লক্ষ ৭৩ হাজার টাকা পান। অন্যদিকে ‘প্রত্যয়’ পেনশন ব্যবস্থায় কোন আনুতোষিক নেয়। বর্তমান ব্যবস্থায় বেতন থেকে টাকা না কেটে অধ্যাপকদের মাসিক পেনশন পান ৭৫ হাজার ৭’শত নব্বই টাকা। অন্যদিকে প্রত্যয়ে বেতন থেকে কেটে এবং প্রতিষ্ঠানের টাকায় পেনশন মাসে ১ লাখ ২৪ হাজার ৬৬০ টাকা। এই পার্থক্যগুলো পর্যালোচনা করে তারা মনে করছেন ‘প্রত্যয়’ শিক্ষকদের জন্য শুধু নয়, পুরো শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য এক অন্ধকার অধ্যায়ের সূচনা করবে। এখন দেখার বিষয় প্রধানমন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সময় দেন কিনা?



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭