ইনসাইড বাংলাদেশ

‘আগে যারা খবরদারি করতো, পদ্মাসেতু নির্মাণের পর তাদের মানসিকতা বদলে গেছে’


প্রকাশ: 05/07/2024


Thumbnail

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, “যারা ভেবেছিল তাদের সহায়তা ছাড়া বাংলাদেশ চলতেই পারবেনা, সেই ধারণাটা বদলে গেছে। সেই ধারণা আর নেই। আগে যারা কথায় কথায় খবরদারি করতো, পদ্মাসেতু নির্মাণের পর তাদের মানসিকতা বদলে গেছে। পদ্মাসেতুর জন্য আজ দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের আর্থ-সামাজিক দ্বার উন্মোচিত হয়েছে।”

বাংলাদেশের অহংকার, গর্বের অর্জন পদ্মা বহুমুখী সেতুর সমাপনী অনুষ্ঠানের সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। শুক্রবার (৫ জুলাই) মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ভারতের কাছে গ্যাস বিক্রিতে বাধ সাধায় ২০০১ সালে সরকার গঠন করতে পারিনি। ওই সময় অনেক ভোট পেয়েছিলাম, কিন্তু প্রয়োজনীয় সিট পাইনি। বাংলাদেশের সম্পদ না বেচায় যদি ক্ষমতায় না আসি, তাতে আমার কিছু যায়-আসে না। শেখ মুজিবের মেয়ে কখনো দেশের সম্পদ বেঁচে ক্ষমতায় আসে না।”

তিনি বলেন, “যখন ক্ষমতায় ছিলাম না, বিদেশে গেলে বাংলাদেশের নাম শুনলে কেউ জিজ্ঞেস করতো, এটা কি ভারতের কোনো অংশ? বলতো, এই দেশ তো শুধু ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, বন্যা, দুর্ভিক্ষ লেগে থাকে। মিসকিন হিসেবে আমাদের বিবেচনা করা হতো। যেটা আমাদের জন্য অত্যন্ত কষ্ট ও ব্যথার ছিল।”

তিনি আরও বলেন, “লাখো শহিদের রক্তের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। আর সেই স্বাধীন জাতি হিসেবে আমাদের মর্যাদা থাকবে না, আমরা মাথা তুলে কথা বলতে পারবো না, আমাদের আত্মমর্যাদাবোধ থাকবে না, এটা কি ধরনের বাংলাদেশ? যে জাতি রক্ত দিয়ে দেশ স্বাধীন করলো, সে জাতি কেন মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে না।”

সরকারপ্রধান বলেন, “পদ্মা আমাদের গর্বের সেতু, একটা সিদ্ধান্ত বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বদলে দিয়েছে। অনেক ঝড়-ঝাপটা পার করে পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে হয়েছে। সাধারণত কোনো প্রকল্প শেষ হলে সেই প্রকল্প শেষ হওয়ার অনুষ্ঠান হয় না। কখনো করা হয় না, শেষ হয়ে যায়। বাংলাদেশের জনগণের টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। পদ্মা সেতুর সঙ্গে যারা জড়িত, যারা জমি দিয়েছে তাদের প্রতি ধন্যবাদ জানাতে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছি। এটি সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানানোর অনুষ্ঠান।”

এর আগে বক্তব্যের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী পদ্মা সেতু সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, সাধারণত কোন প্রকল্প সমাপ্ত হলে, কোন অনুষ্ঠান হয়না। কিন্তু পদ্মাসেতুর ওপর দিয়ে অনেক ঝড়-ঝাপটা গেছে। যার জন্য পদ্মাসেতু সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানাতেই আজকের এই আয়োজন।

সুধী সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এছাড়াও সমাবেশে অংশ নেন কূটনৈতিক, রাজনীতিবিদ ও আমলাসহ দেড় হাজারের বেশি মানুষ।

প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ২৫ জুন পদ্মা সেতুতে যান চলাচলের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এর পর থেকে গত দুই বছর সেতুর ওপর দিয়ে এক কোটি ২৭ লাখ যানবাহন পারাপার হয়েছে। গত ২৯ জুন পর্যন্ত রাজস্ব আদায় হয়েছে এক হাজার ৬৬১ কোটি টাকা। প্রতিদিন গড়ে ১৯ হাজার যান চলাচল করেছে এই সেতুতে। দৈনিক গড়ে দুই কোটি ৩০ লাখ টাকার টোল আদায় হয়েছে বলেও মন্ত্রিপরিষদের সমন্বয় ও সংস্কার বিভাগের সচিব মাহমুদুল হোসাইন খান জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) পদ্মা বহুমুখী সেতুর প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ করতে মোট বরাদ্দ থেকে ১ হাজার ৮৩৫ কোটি ৬৮ লাখ টাকা কম খরচ হয়েছে। আমরা ওই টাকা নিয়ম অনুযায়ী সরকারি কোষাগারে জমা দেব।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭