ইনসাইড বাংলাদেশ

ছাত্র-শিক্ষকদের আন্দোলন নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত বিএনপি


প্রকাশ: 05/07/2024


Thumbnail

বিএনপির খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন মুখ থুবড়ে পড়েছে। ৩ দিন ধরে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করার পর দলটি আবার হতাশায় ভেঙে পড়েছে। তারা ভেবেছিল যে বেগম খালেদা জিয়ার ইস্যুতে অন্তত নেতা কর্মীরা চাঙ্গা হবে। কিন্তু বিএনপির এই ৩ দিনের কর্মসূচি রীতিমতো ফ্লপ হয়েছে বিএনপি নেতারাও স্বীকার করছেন যে এই কর্মসূচির মাধ্যমে নেতাকর্মীদের হতাশা কাটাতে পারছেন না তারা। সরকার পতনের যে দল সংগঠন এবং দলের ভিতরে হতাশা দূর করাটাই তাদের লক্ষ্য। কিন্তু সেই লক্ষ্য পূরণে ও তিন দিনের আন্দোলনের কর্মসূচি ব্যর্থ হচ্ছে। 

এর মধ্যে বিএনপির কোনো নেতা কোটা বিরোধী আন্দোলন এবং শিক্ষকদের প্রত্যয় পেনশন স্কিম নিয়ে আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করার পক্ষে মতামত দিচ্ছেন। কিন্তু বিএনপির আরেক অংশের নেতৃত্ব এই দুটি কি ফাঁদ মনে করছেন? তারা মনে করছেন, শিক্ষকদের যে আন্দোলন হচ্ছে সেটা তাদের নিজস্ব ব্যাপার এবং এই আন্দোলনের সঙ্গে আওয়ামী সমর্থিত শিক্ষকরাই জড়িত৷ এই আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হলে আবার নতুন করে হতাশ হতে হবে। 

বিএনপির মধ্যে শিক্ষকদের আন্দোলন নিয়ে সম্পূর্ণ দ্বিধাবিভক্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিএনপির কোন কোন নেতা মনে করছেন, এটা আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল। আমলাতন্ত্রের সঙ্গে শিক্ষকদের বিরোধ। যারা আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছে তারা সবাই আওয়ামীপন্থি। কাজেই তারা এক সময় মিটমাট করে ফেলবেন তখন বিএনপিকে পস্তাতে হবে। 

বিএনপিপন্থি শিক্ষকদের কেউ কেউ আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত। তারা মনে করছে যে, সরকারকে চাপে ফেলার জন্য এই আন্দোলনে বিএনপির সংহতি প্রকাশ করা উচিত এবং বিএনপি যদি আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয় তাহলে লাভ হবে। কিন্তু বিএনপির মধ্যে এই আন্দোলনে যুক্ত হওয়া নিয়ে দ্বিধা দ্বন্দ্ব এখনও কাটেনি। বরং এ নিয়ে বিএনপির মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে প্রবলভাবে। 

শুধু শিক্ষকদের আন্দোলন নয়, কোটা বিরোধী আন্দোলন নিয়েও বিএনপির অবস্থান দ্বিধাবিভক্ত। ছাত্রদলের নতুন কমিটি হয়েছে। ছাত্রদলের অনেক নেতাই কোটাবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে নানা ভাবে যুক্ত হচ্ছেন। কিন্তু প্রকাশ্যে বিএনপির পক্ষ থেকে এই আন্দোলনের সঙ্গে সমান্তরালভাবে কর্মসূচি দেয়া বা আন্দোলনকে বেগবান করার জন্য উস্কানি দেয়া ইত্যাদি প্রবণতাগুলো এখনও পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না। বরং তারা কোটাবিরোধী আন্দোলনের সমাপ্তি কী হয়, কীভাবে এই আন্দোলনকে সরকার মোকাবিলা করে সেটাই দেখতে চাইছে। 

বিএনপির নেতারা মনে করছেন, এই সমস্ত শ্রেণি পেশার আন্দোলনগুলো জনপ্রিয় হলেও তার সঙ্গে রাজনৈতিক সংস্রব নেই। এসব আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে বরং বিএনপি আরও দুর্বল হয়ে পড়তে পারে। কারণ এই আন্দোলনগুলোর মাধ্যমে বিএনপির মূল দাবিগুলো অকার্যকর এবং দুর্বল হবে। 

বিএনপির কোনো নেতা এটা মনে করেন যে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, দুর্নীতি এবং বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির ইস্যুগুলিকে আড়াল করার জন্যই কোটা বিরোধী আন্দোলন বা শিক্ষকদের পেনশন স্কিমের আন্দোলনকে সামনে আনা হয়েছে। এটি সরকারের একটি কৌশল। 

বিএনপির একজন নেতা একজন নেতা বলছিলেন যে দুর্নীতিবাজদের নিয়ে যখন সারা দেশে হৈ চৈ হচ্ছিল তখনই শিক্ষকদের ‘প্রত্যয়’ স্কিম নিয়ে আন্দোলন আর শিক্ষার্থীদের কোটা বিরোধী আন্দোলন শুরু হয়েছে। এটি একটি সাজানো নাটক বলে মন্তব্য করেন ঐ বিএনপি নেতা। তিনি মনে করেন, এই সমস্ত আন্দোলন করে সরকার মূল ইস্যু থেকে দৃষ্টি অন্যদিকে ফেরাতে চেয়েছে। তবে, সামনের দিনগুলোতে কোটাবিরোধী আন্দোলন এবং শিক্ষকদের আন্দোলন কিভাবে এগোয় সেটির দিকেই লক্ষ্য রাখতে চাইছেন বিএনপির নেতৃবৃন্দ। 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭