ক্লাব ইনসাইড

ইবির বাজেটে গুরুত্ব পায়নি শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট খাত


প্রকাশ: 05/07/2024


Thumbnail

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ১৮২ কোটি ৭৭ লাখ টাকার বাজেট অনুমোদন করা হয়েছে। বাজেটের সিংহভাগ অর্থই বরাদ্দ রাখা হয়েছে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ও পেনশন খাতে। এসব বাবদ ব্যয় ধরা হয়েছে ১৪২ কোটি ৬৩ লাখ ৫ হাজার টাকা, যা মোট বাজেটের ৭৮ দশমিক ০৪ শতাংশ। অন্যদিকে বরাবরের মতোই উপেক্ষা করা হয়েছে শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট খাতগুলো। এবার গবেষণা ও উদ্ভাবন খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২ কোটি ৭৭ লাখ টাকা, যা মূল বাজেটের ১.৫২ শতাংশ। এছাড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা সহায়তা বাবদ রাখা হয়েছে ৩৫ লাখ টাকা, যা মোট বাজেটের ০.১৯ শতাংশ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ ও হিসাব শাখা সূত্রে, অনুমোদিত বাজেটের মধ্যে ১৭৩ কোটি ৫ লাখ টাকা দেবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব খাত থেকে আসবে ৯ কোটি ৭২ লাখ টাকা। বাজেটে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ও বিশেষ সুবিধা বাবদ ব্যয় ধরা হয়েছে ১২১ কোটি ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা। যা মোট বাজেটের ৬৬ দশমিক ২২ শতাংশ। আর পেনশন বাবদ ২১ কোটি ৩২ লাখ ২৯ হাজার টাকা। যা মোট বাজেটের ১১ দশমিক ৬৭ শতাংশ। এছাড়া অবসর ভাতাভোগীদের জন্য বিশেষ সুবিধা বাবদ ২৭ লাখ ৭১ হাজার টাকা বরাদ্দ ধরা হয়েছে। যা মোট বাজেটের শূন্য দশমিক ১৫ শতাংশ। সবমিলিয়ে বাজেটের ৭৮.০৪ শতাংশ ব্যয় হবে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ, পেনশন ও বিশেষ সুবিধা প্রদানে।

অন্যদিকে বাজেটে গুরুত্ব পায়নি গবেষণা-উদ্ভাবন ও শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট খাতগুলো। গবেষণা ও উদ্ভাবন খাতে বরাদ্দ ধরা হয়েছে ২ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। যা মোট বাজেটের ১ দশমিক ৫২ শতাংশ। প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা সহায়তায় ৩৫ লাখ টাকা। যা মোট বাজেটের ০.১৯ শতাংশ। এছাড়া ছাত্রকল্যাণ তহবিল বাবদ কোনো বরাদ্দ রাখা হয়নি।

এছাড়া বাজেটে পণ্য ও সেবা (সাধারণ ও মেরামত) ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৩ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। যা মোট বাজেটের ১৮ দশমিক ৫৩ শতাংশ। যন্ত্রপাতি অনুদান খাতে ১ কোটি ৪৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। যা মোট বাজেটের শূন্য দশমিক ৮১ শতাংশ। যানবাহন বাবদ ৫২ লাখ টাকা। যা মোট বাজেটের শূন্য দশমিক ২৮ শতাংশ। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অনুদান বাবদ ৩৭ লাখ টাকা। যা মোট বাজেটের শূন্য দশমিক ২ শতাংশ। অন্যান্য মূলধন অনুদান বাবদ বরাদ্দ রয়েছে ৫০ লাখ টাকা। যা মোট বাজেটের শূন্য দশমিক ২৭ শতাংশ।

এদিকে এবারের বাজেটেও শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট খাতগুলো বরাবরের মতো অবহেলিত বলে মনে করছেন বাজেট বিশেষজ্ঞ ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। গবেষণা খাতে বরাদ্দকৃত অর্থ আগের তুলনায় কিছুটা বাড়লেও তা পর্যাপ্ত নয় বলে মনে করেন তারা।

শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বলছেন, ‘বাজেটের সিংহভাগই ব্যয় হবে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-বাতা ও পেনশন খাতে। অন্যদিকে বাজেটে শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট খাতে যে পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ রাখা হয়েছে, তা দিয়ে শিক্ষার্থীদের চাহিদা পূরণ সম্ভব নয়।'

অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল মুঈদ বলেন, বাজেট প্রণয়ণ একটি গতানুগতিক কাজ। বিশ্ববিদ্যালয় কিভাবে চলবে তার খরচের একটা আর্থিক হিসাবমাত্র। আর সেটা অনুমোদন করে ইউজিসি। একটি রাষ্ট্রের বাজেটের মধ্যে যেমন বিভিন্ন উদ্ভাবনী দিক থাকে এটা সেরকম না। এখানে প্রশাসনের ক্রিয়েটিভ কিছু করার নেই। চাইলেই তারা একটা কিছু করতে পারবে না। গবেষণা খাতে চাইলেই তো আর সরকার দিয়ে দিবে না। তবে গবেষণা ও শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট খাতগুলোতে বরাদ্দ আরও বাড়ানো উচিৎ।

অর্থ ও হিসাব শাখার পরিচালক জাকির হোসেন জানান, চাহিদা দেওয়ার সময় আমরা মূল বাজেটের প্রায় ১০ থেকে ২৫ শতাংশ গবেষণা ও শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট খাতগুলোতে দিয়ে থাকি। কিন্তু ইউজিসি না দিলে তো আমাদের কিছু করার নেই। ইউজিসি বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ আয় বাড়াতে বলেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ আয় শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ফি থেকেই আসে। সেটাতো আর চাইলেই প্রশাসন বাড়াতে পারে না।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭