ইনসাইড আর্টিকেল

হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম্য মেলা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 30/11/2020


Thumbnail

বারো মাসে তের পার্বনের দেশ বাংলাদেশ। সারা বছরই লেগে থাকে নানা উৎসব, পালা-পার্বন। গ্রামে গঞ্জে সাধারণত সবচেয়ে বেশি মেলা বসতো। শীতকাল আসলেই পৌষ-পার্বণের মেলা, হরেক রকমের পিঠা উৎসব, যাত্রা পালা ও লোক সাংস্কৃতিক, বসন্তের মেলাগুলো জমে উঠত। সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো থেকে মেলাকে কেন্দ্র করে জারি-সারি ভাটিয়ালী, বাউল গানের আসর বসাতো।  

অঞ্চলভিত্তিক দেখা যেত বিভিন্ন ধরণের মেলার প্রচলন ছিল। মেলাগুলো সাধারনত: স্কুল কলেজের মাঠ, গ্রামের মন্দির, নদীর তীর বা বড় বৃক্ষের নিচে কেন্দ্র করে বসত। কালের বিবর্তনে সব কিছু হারিয়ে যাচ্ছে। গ্রাম থেকে হারিয়ে গেছে এই সব উৎসবগুলো।গ্রামে এখন আর বাসন্তি রং এর শাড়ী পড়ে, তাজা লাল, হলুদ গাঁদা ফুলের মালা খোপায় বা বেণীতে পরে মেঠো পথে তরুণীদের ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়না। ছেলে মেয়েরা বায়না করেনা নাগোরদোলায় চড়বো, সার্কাস,যাত্রাপালা কিংবা পুতুলনাট্য দেখবো।  

গ্রামীণ মেলাগুলো হারিয়ে যাওয়ায় লোকজ ঐতিহ্যগুলো হারিয়ে গেছে। ঐতিহ্যবাহী ও মেলার জায়গা কেড়ে নিয়েছে শহুরে বাণিজ্যিক মেলা৷ এরফলে দেশজুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা ঐতিহ্যের সব উপকরণ ও লোকজ উপাদানগুলো কালের বিবর্তনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।

মেলাগুলোতে কারুশিল্পীদের শিল্পকর্ম করা হাতের তৈরি বিভিন্ন উপাদান বিক্রি করা হতো। কাঠের পুতুল, মাটির পুতুল, নকশী কাঁথা, সিলেটের শীতল পাটি, তামা কাঁসা ও পিতলের কারুশিল্প, বাঁশের কারুশিল্প, কাঠের সামগ্রীক, ঘরের আসবাবপত্র, শামুক ঝিনুকের গহনা এখন বিলুপ্তপ্রায়। আধুনিক প্রযুক্তির কারণে হাতের তৈরী জিনিস হারিয়ে যাচ্ছে। আর্থিক সংকটে এই কারুশিল্পীরাও এখন অস্তিত্বের সংকটে ভুগছেন।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলার শিক্ষক এবং লোক সংস্কৃতির গবেষক অধ্যাপক কামাল উদ্দিন কবির বলেন, ‘মেলা বাংলাদেশের মানুষের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে৷ আবহমানকাল থেকে চৈত্র সংক্রান্তি থেকে শুরু করে ১২ মাসই মেলা আছে৷ আর একেক এলাকার মেলার বৈশিষ্ট্য একেক রকম৷ চৈত্রসংক্রান্তির মেলা টাঙ্গাইলের গ্রামে যেমন হয়, বিক্রমপুরে তার থেকে আলাদা৷ চৈত্রসংক্রান্তি যেমন আছে তেমনি শ্রাবণসংক্রান্তিও আছে৷ হয়তো শ্রাবণসংক্রান্তির মেলা সব জায়গায় হয়না৷ মনষামঙ্গল বা পদ্মা পূরাণকে কেন্দ্র করে কোথাও কোথাও এক মাস ধরে গীত বাদ্যের আয়োজন করা হয়৷ এখন মেলাই হয় হাতে গোনা৷`

গবেষকরা বলছেন বাংলার এই মেলাগুলো যেমন সংস্কৃতির পরিচয় বহন করে তেমনি এই মেলাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় পণ্যের পসরা বসতো৷ আর গ্রামীণ জনপদে নামে উৎসবের ঢল নামতো। এই মেলাগুলোর বড় অর্থনৈতিক দিকও ছিল। মেলাগুলো বিলুপ্তের কারণে অর্থনীতিতেও এর প্রভাব পরেছে।   



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭