টেক ইনসাইড

পেপারলেস বাংলাদেশ কি আদৌ সম্ভব?

প্রকাশ: ০৯:১৯ এএম, ০৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২


Thumbnail পেপারলেস বাংলাদেশ, কি আদৌ সম্ভব?

ভাবুন তো! যদি এক সকালবেলা উঠে আপনি দেখতে পান, দেশে কাগজের ব্যবহার একেবারে নাই হয়ে গেল! শূন্যের কোঠায়। অফিসে গিয়ে দেখলেন সকল প্রাতিষ্ঠানিক কাজ করা হচ্ছে অনলাইন ফোরামে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলোতে বাচ্চাদের ডিজিটাল অ্যানিমেশন এর মাধ্যমে টপিক অ্যানালাইসিস করে বুঝানো হচ্ছে৷ সকাল বেলা চায়ের দোকানে খবরের কাগজ নিয়ে কোনো বয়স্ক আলোচনা করছেন না, বরং নিজের ফোন থেকে জেনে নিচ্ছেন দেশ বিদেশের খবর। সব ধরণের হিসাব,  ফর্ম, বই, দলিল, কাগজপত্র সব কিছু সফট কপি না অনলাইন পেপারে হাতে থাকা ল্যাপটপ,  মোবাইল কিংবা কম্পিউটার ডিভাইসে সুরক্ষিত, তাহলে ব্যাপার টা কেমন হবে? চমৎকার তাই না? অত্যাধুনিক জীবন কিংবা ঝঞ্জাটবিহীন জীবনের জন্য এই উদ্যোগ অবশ্যই প্রয়োজনীয়। ভাবতে আরামদায়ক এই কল্পনা সত্য হলে কতই না ভালো হতো!

এমন  দেশের স্বপ্নই দেখছেন আমার বা আপনার মতো অনেকে যারা চায় জীবন মানের উন্নয়ন। আমরা সকলেই জানি বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হওয়ার জন্য পরিকল্পিত ধাপ অনুসারে এগিয়ে যাচ্ছে দ্রুতগতিতে। ব্যবসা ক্ষেত্রে টেকনোলজিক্যালি রিচ হওয়া সেক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।  কেননা, যত উন্নতির দিকে ধাবিত হতে থাকবে তত সহজ এবং দ্রুততার সাথে কাজ সম্পন্ন করা কিংবা সুষ্ঠুভাবে গুছিয়ে নেওয়ার জন্য তখন মানুষের আর কষ্ট করতে হবে। একটা ক্লিকের মাধ্যমেই সব সঠিক ভাবে করা সম্পূর্ণ হয়ে যাবে। এখনো দেশে এমন টেকনোলজির ব্যবহার এর চর্চা দেখা যায়। যেমন, বাসায় বসে বাজার করা, অনলাইন ফর্ম পূরণ করা, ওষুধ কিনা, টিকিট কাটার মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় নানা ধরণের কাজ। কিন্তু এখনো সকল প্রতিষ্ঠান কিংবা সোর্স বা সব শ্রেণীর মানুষ তুলনামূলক ভাবে কম অভ্যস্ত পেপারবিহীন কাজকর্মে। যেমন, পেপারলেস বলতে সম্পূর্ণ ডিজিটালাইজেশন বুঝানো হচ্ছে, সেখানে বই পত্রও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বয়ে নিয়ে যাওয়ার আর প্রয়োজন হবে না। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র অফিস আদালতে বয়ে নেওয়ার কষ্ট করতে হবে না, ডেস্কটপ কিংবা হাতে থাকা যেকোনো ইলেকট্রনিক ডিভাইসেই রেখে দেওয়া যাবে সকল কাগজপত্র সুরক্ষিত ভাবে। আবার নিত্য প্রয়োজনীয় কাজ থেকে শুরু করে বড় কোনো অফিশিয়াল,  ফর্মাল কাজও করা হবে সব অনলাইনে কিংবা ডিভাইস টেকনোলজির মাধ্যমে।

ভাবতেই রোমাঞ্চকর অনুভূতি হয়। বিভিন্ন উন্নত দেশ সমূহে এইভাবেই বেশিরভাগ কার্যকলাপ হয়ে থাকে।  কিছুদিন আগে এক জরিপে দেখা গেছে,  উন্নত দেশগুলোর মধ্যে প্রায় ৬৬ শতাংশ কাজ টেকনোলজি, অনলাইন ভিত্তিক। সেসকল দেশের নাগরিদের মতে কাগজ ছাড়া এসব কাজ করতে তাদের বরং সহজ লাগে।  তাদের ক্ষেত্রে কাগজ বয়ে নেওয়া কিংবা সেসব প্রিন্ট করানোটাই বাড়তি কাজ বলে মনে হয়। গবেষকদের মতে, যেসকল দেশে জনশক্তির মোট অংশের মোটা একটা অংশ জনসম্পদে পরিণত হতে পেরেছে তাদেরই এমন চর্চা দেখতে পাওয়া যায়।

দেশে ইতোমধ্যে অনেক কর্মক্ষেত্রে পেপারলেস ওয়ার্ক করার প্রক্রিয়া গ্রহণ করেছেন৷ অটোমেটেড এবং পেপারলেস প্রতিষ্ঠানে পরিণত হওয়ার প্রচেষ্টা করছে ডিএনসিসি। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছেন, প্রতিনিয়ত অটোমেশনের পরিধি বাড়ছে। সেই ধারাবাহিকতায় ডিএনসিসি একটি পেপারলেস প্রতিষ্ঠানে পরিণত হওয়ার লক্ষ্যে কাজ করছে। পেপারলেস বাংলাদেশ হওয়ার সুযোগ সুবিধাও তুলে ধরা হচ্ছে প্রতিনিয়ত।  এখন প্রশ্ন হচ্ছে, পেপারলেস বা জিরো কাগজ ব্যবহারে কি ধরণের উপকার হতে পারে মানব জীবনে বা দেশে?

সাধারণত,  যদি এমন সময়ের শুরু হয় যেখানে আসলে আর কাগজের ব্যবহার হচ্ছে না, তবে মানুষ ঘরে বসেই কাজ করতে পারবে। অর্থ উপার্জন, বিল পরিশোধের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজ থেকে শুরু করে সকল ধরণের কাজ মানুষ ঘরে বসে যেমন করতে পারবে তেমনি প্রতিষ্ঠানগুলোতেও কেউ গিয়ে এই কাজ করতে চাইলে তাকে লাইনে দাঁড়িয়ে কিংবা প্রচুর কাগজ বয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন পড়বে না৷ হ্যাসেল ফ্রি এবং দ্রুত কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে। মানুষের জীবনে প্রোডাক্টিভ কাজের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। কোনো দেশের জনসংখ্যার মূল জনসম্পদে রূপান্তর হওয়ার মধ্য দিয়েই যেহেতু সে দেশের উন্নয়ন নির্ভরশীল এক্ষেত্রে টেকনোলজিক্যালি ব্যারিয়ার কমে গিয়ে প্রোডাক্টিভিটির মান বৃদ্ধি পেলেই মান উন্নয়ন সুসম্পন্ন হয়।

এখনো অবধি বাংলাদেশের ৫৬ শতাংশ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করতে জানেন না সঠিকভাবে। এইজন্য সচেতনতা প্রচার করতে হবে যেন মানুষ অনলাইন ভিত্তিক কাজ শিক্ষার আগ্রহ পায়, এগিয়ে আসে। তাহলেই পেপারলেস বাংলাদেশের স্বপ্ন পূরণ হওয়া সম্ভব।

পেপারলেস বাংলাদেশ  


মন্তব্য করুন


টেক ইনসাইড

আজ দিবাগত রাতে এক ঘণ্টা বন্ধ থাকবে ইন্টারনেট সেবা

প্রকাশ: ০৮:৪৬ এএম, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় দেশের দ্বিতীয় সাবমেরিন কেব্‌লের মাধ্যমে ইন্টারনেট পরিষেবা বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে এক ঘণ্টার জন্য বন্ধ থাকবে।

গতকাল বুধবার (১৭ এপ্রিল) ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অধীন সংস্থা বাংলাদেশ সাবমেরিন কেব্‌লস (বিএসসিপিএলসি)-এর এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিএসসিপিএলসির সংশ্লিষ্ট সবাইকে জানানো যাচ্ছে, কুয়াকাটায় দ্বিতীয় সাবমেরিন কেব্‌ল রক্ষণাবেক্ষণ করা হবে। এ কারণে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত এই কেব্‌লের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যান্ডউইডথ পরিষেবা বন্ধ থাকবে।

বিএসসিপিএলসি জানিয়েছে, এতে গ্রাহকরা সাময়িকভাবে ইন্টারনেটে ধীরগতির সম্মুখীন হতে পারেন বা ইন্টারনেট সেবা বিঘ্নিত হতে পারে। তবে একই সময়ে কক্সবাজার ল্যান্ডিং স্টেশন থেকে অন্য সাবমেরিন কেব্‌লের মাধ্যমে ব্যান্ডউইডথ সেবা যথারীতি চালু থাকবে।


ইন্টারনেট   বিএসসিপিএলসি  


মন্তব্য করুন


টেক ইনসাইড

১ ঘণ্টা বন্ধ থাকবে ইন্টারনেট

প্রকাশ: ০৭:১৪ পিএম, ১৭ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য এক ঘণ্টা বন্ধ থাকবে দেশের দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল (সি-মি-উই-৫)। বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) রাত ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত এক ঘণ্টা ক্যাবলটির মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ পরিষেবা বন্ধ থাকবে। ফলে ইন্টারনেট ধীরগতির কারণে ভোগান্তিতে পড়বেন গ্রাহকরা। 

বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলস পিএলসির (বিএসসিপিএলসি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মির্জা কামাল আহম্মদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মির্জা কামাল আহম্মদ বলেন, সাবমেরিন ক্যাবলের (সি-মি-উই-৫) রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) রাত ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত এক ঘণ্টা ক্যাবলটির মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ পরিষেবা বন্ধ থাকবে। 

তবে একই সময়ে কক্সবাজার ল্যান্ডিং স্টেশন থেকে (সি-মি-উই-৪) সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে ব্যান্ডউইডথ সেবা যথারীতি চালু থাকবে বলে জানিয়েছে বিএসসিপিএলসি।

ইন্টারনেট সেবা   সাবমেরিন ক্যাবলস কোম্পানি লিমিটেড  


মন্তব্য করুন


টেক ইনসাইড

আবারও হোয়াটসঅ্যাপ-ইনস্টাগ্রামে বিভ্রাট

প্রকাশ: ০৯:০০ এএম, ০৪ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

আবারও মেটার মালিকানাধীন হোয়াটসঅ্যাপ-ইনস্টাগ্রাম বিভ্রাট দেখা দিয়েছে। ফলে বিশ্বজুড়ে থমকে গেছে এই দুই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পরিষেবা। বার্তা আদান-প্রদানে সমস্যার মুখে পড়ছেন ব্যবহারকারীরা।

তবে কী কারণে এই বিভ্রাট, তা নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো বিবৃতি দেয়নি মেটা। এক মাসের মধ্যেই দু’বার মেটার বিভিন্ন পরিষেবা বিভ্রাটের সম্মুখীন হলো।

বুধবার (৩ এপ্রিল) রাত পৌনে ১২টা নাগাদ সমস্যার শুরু হয়। অনেক ব্যবহারকারী লক্ষ করেন তারা হোয়াটসঅ্যাপের ওয়েব সংস্করণে লগইন করতে পারছেন না। মোবাইল অ্যাপ থেকে মেসেজ পাঠানোর চেষ্টা করলেও তা ব্যর্থ হন তারা।

এ ছাড়া সমস্যা দেখা দেয় ইনস্টাগ্রামেও। ব্যবহারকারীরা বার বার তাদের ফিড রিফ্রেশ করলেও নতুন কোনো পোস্ট দেখতে পারছিলেন না। তবে ফেসবুকের পরিষেবা ঠিকই ছিল। সেখানেই অনেকে জানান, হোয়াটসঅ্যাপ এবং ইনস্টাগ্রামের পরিষেবা বিভ্রাট সংক্রান্ত সমস্যার কথা।


হোয়াটসঅ্যাপ   ইনস্টাগ্রাম   মেটা  


মন্তব্য করুন


টেক ইনসাইড

সরকারি-বেসরকারি অনেক ওয়েবসাইট ডাউন

প্রকাশ: ০৩:৪৪ পিএম, ০৩ এপ্রিল, ২০২৪


Thumbnail

দেশের সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন ওয়েবসাইট কাজ করছে না। এ কারণে সেবা গ্রহণে ভোগান্তিতে পড়ছে গ্রাহকরা। বুধবার (৩ এপ্রিল) সকাল থেকেই এ সমস্যা দেখা দিচ্ছে।

জানা গেছে, যেসব ওয়েবসাইটের শেষে ডট গভ, ডট বিডি, ডট বাংলা বা ডট কম ডট বিডি রয়েছে সেগুলো বিটিসিএলের সার্ভার থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এসব সাইট খোলা যাচ্ছে না। দেশের সবকটি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট এসব ডোমেইন দিয়ে বানানো। ফলে সেগুলোতে প্রবেশ করতে পারছেন না ব্যবহারকারীরা।

এ ছাড়া ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান দারাজ, ইভ্যালি ও সংবাদ সংস্থা ইউএনবিসহ বহু বেসরকারি ওয়েবসাইট এসব ডোমেইন দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করায় সেগুলোতেও প্রবেশ করা যাচ্ছে না।

মঙ্গলবার রাত থেকেই এসব ডোমেইন সার্ভার নিয়ন্ত্রিত কোনো সরকারি-বেসরকারি ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে পারছেন না ব্যবহারকারীরা।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেডের ডিজিএম (ডোমেইন) আনোয়ার পারভেজ বলেন, হঠাৎ করেই পরিষেবায় বিভ্রাট দেখা দিয়েছে আমরা জলদি বিকল্প ব্যবস্থা তৈরি করছি। প্রস্তুত হলেই পুনরায় সচল হবে সব ওয়েবসাইট।

ওয়েবসাইট ডাউন   বিটিসিএল  


মন্তব্য করুন


টেক ইনসাইড

১০ মিলিয়নের বেশি বাংলাদেশির তথ্য হ্যাকারদের দখলে

প্রকাশ: ০৯:৫২ এএম, ২৯ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

বিভিন্ন কুরিয়ার সার্ভিস সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠান এবং পুলিশের তথ্যভান্ডার থেকে বাংলাদেশের কমপক্ষে ১০ মিলিয়ন (১ কোটি) নাগরিকের ব্যক্তিগত সংবেদনশীল তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার দাবি করেছে ‘ডাটাভেঞ্চার’ পরিচয় দেওয়া একটি হ্যাকার গোষ্ঠী। তারা জানিয়েছে, তাদের কাছে বাংলাদেশি নাগরিকদের নাম, জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) কেন্দ্রিক তথ্য, মোবাইল নম্বর, ঠিকানা, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর, ইমেইল ঠিকানাসহ আরও কিছু তথ্য রয়েছে।

তারা দাবি করছে এগুলো ১২ হাজার ডলারে বিক্রির জন্য হ্যাকারদের একটি প্ল্যাটফর্মে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। সেখান থেকে নেওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, তথ্য হাতিয়ে নেওয়া বাংলাদেশি নাগরিকের প্রকৃত সংখ্যা কয়েক কোটি হতে পারে। এ ধারণা সঠিক হলে এটিই বাংলাদেশ থেকে তথ্য ফাঁসের সর্ববৃহৎ ঘটনা।

জানা গেছে, ‘ব্ল্যাক হ্যাট’ নামে পরিচিত ক্ষতিকারক হ্যাকারদের একটি প্ল্যাটফর্ম ‘ব্রিচ ফোরাম’। এরা কোন দেশ থেকে পরিচালিত হয় অথবা এর সদস্যদের পরিচয় এখনো অজানা। গত ২৬ মার্চ এই প্ল্যাটফর্মের ওয়েবসাইটে বাংলাদেশের নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য বিক্রির ঘোষণা দেওয়া হয়। ‘ডাটাভেঞ্চার’ পরিচয় দেওয়া হ্যাকারের দাবি, তার কাছে বাংলাদেশের কুরিয়ার সার্ভিস প্রতিষ্ঠান এবং পুলিশের তথ্যভান্ডার থেকে সংগৃহীত তথ্য রয়েছে। কুরিয়ার সার্ভিসগুলোর মধ্যে ‘এসএ পরিবহন’, ‘রেডেক্স’ এবং ‘সুন্দরবন’-এর নাম উল্লেখ করে ‘অন্যান্য’ প্রতিষ্ঠানের কথা বলা হয়েছে। পুলিশ সম্পর্কিত তথ্য থাকার বিষয়ে হ্যাকারের দাবি, ‘পুলিশ ডাটা, যেখানে সব পুলিশের তথ্য রয়েছে।’

হ্যাকারের দাবি, ১০ মিলিয়নের (১ কোটি) বেশি বাংলাদেশি নাগরিকদের এনআইডি সংশ্লিষ্ট তথ্য রয়েছে তার কাছে। যার মধ্যে আছে নাম, ঠিকানা, জন্মতারিখ এবং এনআইডি নম্বর। এ ছাড়া নাগরিকদের মোবাইল নম্বর ও ইমেইল ঠিকানা, ব্যাংক একাউন্ট নম্বর ও শাখার নামসহ আরও বেশকিছু তথ্য রয়েছে বলেও দাবি তার। পুলিশের তথ্যসহ নাগরিকদের এসব তথ্য বিক্রির জন্য ১০ হাজার মার্কিন ডলার চেয়েছে হ্যাকার। পাশাপাশি এনআইডির তথ্য চাইলে দিতে হবে আরও ২ হাজার ডলার। সব মিলিয়ে এসব তথ্য ১২ হাজার ডলারে বিক্রির ঘোষণা দিয়ে ‘ব্রিচ ফোরাম’-এর ওয়েবসাইটে পোস্ট করেছে ‘ডাটাভেঞ্চার’।

বিপুল পরিমাণ তথ্য ফাঁসের এ ঘোষণা ইতোমধ্যেই দেশীয় হ্যাকার কমিউনিটি এবং সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের মধ্যে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। তবে এই প্রতিবেদক যোগাযোগ করার আগে পর্যন্ত এ বিষয়ে কিছুই জানতে পারেনি সাইবার নিরাপত্তা এজেন্সি এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের কম্পিউটার ইন্সিডেন্ট রেসপন্স টিম (সার্ট)।

যোগাযোগ করা হলে নিরাপত্তা এজেন্সির মহাপরিচালক আবু সাঈদ মো. কামরুজ্জামান এবং সার্টের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী সাইফুল আলম খান কালবেলাকে পৃথকভাবে জানান, এখনো তারা এ বিষয়ে কিছু জানেন না।

তবে একাধিক সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ এবং এথিক্যাল হ্যাকার কালবেলাকে তথ্য ফাঁসের ঘটনা নিশ্চিত করেছে।

পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক এক এথিক্যাল হ্যাকার বলেন, বিক্রির জন্য উত্থাপিত তথ্যের কিছু নমুনা বিশ্লেষণে দেখা যায়, প্রায় ৬ কোটি নাগরিকের তথ্য হ্যাকারের দখলে রয়েছে। এসব নমুনার কিছু তথ্য যাচাই করে সেগুলো সঠিক পেয়েছি। নমুনার সূত্র ধরে কুমিল্লার এক ব্যক্তির মোবাইল ফোনে কল দিলে তার জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর, জন্মতারিখ এবং ঠিকানা নিশ্চিত হয়েছি। অর্থাৎ তথ্যগুলো সঠিক।’

বিষয়টি আরও যাচাই করতে সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ আবদুল্লাহ আল জাবের দেশের এক গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ব্রিচ ফোরাম হ্যাকারদের একটি গোষ্ঠী, যেখানে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানের হ্যাকাররা নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করে। এখানে কেউ কারও সঠিক পরিচয় জানে না। কারও কাছে এ ধরনের তথ্য এলে বেচাকেনার জন্য এখানে যোগাযোগ করেন তারা। কোনো ভুয়া তথ্য দিয়ে এখানে পোস্ট করা কঠিন। ৬ কোটি নাগরিকের তথ্য ফাঁস হয়ে থাকলে এটা বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় তথ্য ফাঁসের ঘটনা।’

এ ধরনের তথ্য ফাঁসের ভয়াবহতা কী জানতে চাইলে জাবের বলেন, ‘একজন ব্যক্তির নাম, ঠিকানা, জন্মতারিখ, মোবাইল নম্বর, ব্যাংক হিসাবের নম্বর এসব তথ্য অন্য কারও হাতে থাকা মানে ওই ব্যক্তির সবকিছুই হ্যাকারের দখলে। খেয়াল করলে দেখবেন, সম্প্রতি আপনার আমার মোবাইল ফোনে কল দিয়ে ইংরেজিতে কথা বলে চাকরির প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে। এটা মূলত চায়নিজ হ্যাকারদের কাজ। তারা আমাদের নম্বর, নাম এবং অন্যান্য তথ্য কীভাবে পায়? এভাবেই কারও বিক্রি করা বা ফাঁস করা থেকে পায়। এ ধরনের তথ্য গড়ে ১৫ থেকে ২০ হাজার ডলারে বেচাকেনা হয়ে থাকে ভার্চুয়াল জগতে।’

তবে এক কোটির বেশি মানুষের তথ্য বিক্রির বিজ্ঞাপনকে প্রতারণার উদ্দেশ্যে পাতা ফাঁদ উল্লেখ করে পুলিশ সদর দপ্তরের মুখপাত্র ইনামুল হক সাগর বলেন, ‘এ ধরনের তথ্য তাদের কাছে আছে বলে প্রতারণার ফাঁদ পাতা হয়। মানুষকে বিভ্রান্ত করতে এটা করে তারা। এটা তেমনি একটা জিনিস। আমাদের কোনো ধরনের তথ্য ডার্ক ওয়েবে বিক্রির কথা কেউ যদি বলে থাকে তাহলে সেটা মিথ্যা বলছে। ওরা প্রতারণার উদ্দেশ্যে এটা করছে।’

উল্লেখ্য, গত বছরের জুনের শেষ দিকে বাংলাদেশের জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়ের তথ্যভান্ডার থেকে বড় পরিসরে নাগরিকদের তথ্য উন্মুক্ত থাকার খবরে দেশজুড়ে আলোড়ন তৈরি হয়। ভিক্টর মার্কোপোলস নামে একজন সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ, রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়ের কারিগরি দুর্বলতা তুলে ধরে সেসব তথ্য খুব সহজেই উন্মুক্ত অবস্থায় পেয়েছিলেন বলে জানান।


হ্যাকার   বাংলাদেশি   ডাটাভেঞ্চার  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন