ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

রোহিঙ্গা ইস্যুতে কেন বৈশ্বিক সমর্থন পাচ্ছে না বাংলাদেশ?

প্রকাশ: ১১:০০ এএম, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২


Thumbnail রোহিঙ্গা ইস্যুতে কেন বৈশ্বিক সমর্থন পাচ্ছেনা বাংলাদেশ?

মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নিপীড়নের শিকার হয়ে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার পাঁচ বছর পার হয়ে গেলছে। অথচ সংকট সমাধানের কোন জোরালো পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। দিনে দিনে বরং রোহিঙ্গাদের নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আগ্রহই হারিয়ে ফেলছেন।

মূলত আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং অর্থনৈতিক স্বার্থের কারণেই বিনা সমাধানে ঘুরপাক খাচ্ছে রোহিঙ্গা সংকট। রোহিঙ্গাদের উচ্ছেদের কয়েক বছরের মধ্যেই মিয়ানমারে আবারও সেনা অভ্যুত্থান হয়েছে। ক্ষমতায় আসীন হওয়ার পর সামরিক জান্তা এখন দেশটির গণতন্ত্রপন্থী এবং বিভিন্ন মুক্তিকামী জাতিগোষ্ঠীর উপর দমন পীড়ন চালাচ্ছে।

এতো কিছুর পরেও মিয়ানমার কিংবা দেশটির সরকারের বিরুদ্ধে প্রভাবশালী রাষ্ট্রগুলো কেন কড়া পদক্ষেপ নিতে পারছে না? উত্তর হচ্ছে মিয়ানমারের প্রাকৃতিক সম্পদ এবং দেশটির কৌশলগত গুরুত্ব।

চীন, জাপান, রাশিয়া এবং ভারতের সাথে মিয়ানমারের সম্পর্ক বেশ ভালো। এছাড়া দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অর্থনৈতিক জোট আসিয়ানের সদস্য হওয়ায় আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোর সাথেও মিয়ানমারের ভালো সম্পর্ক রয়েছে।

বিশ্ব রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ দুটি দেশ - চীন এবং রাশিয়া এ পর্যন্ত কখনও, কোনো ফোরামেই মিয়ানমারের বিপক্ষে যায়নি। চীনের ব্যাপক স্বার্থ চীনের সঙ্গে মিয়ানমারের ব্যাপক অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক এবং রাজনৈতিক সম্পর্ক আছে। মিয়ানমারে অবকাঠামো এবং জ্বালানি খাতে চীনের ব্যাপক বিনিয়োগ রয়েছে। তাছাড়া চীনের অর্থনৈতিক মহাপ্রকল্প বেল্ট এন্ড রোড ইনিশিয়েটিভের (বিআরআই) গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার মিয়ানমার।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, ক্ষমতা নেওয়ার পর গত এক বছরে পরবর্তী এক বছরে মিয়ানমারে ৩৮০ কোটি ডলারের বিদেশি বিনিয়োগ অনুমোদন দিয়েছে জান্তা।

এসব বিনিয়োগের মধ্যে চীনের একটি তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস প্ল্যান্ট প্রকল্পও রয়েছে। চীনের এই প্রকল্পটি ২৫০ কোটি ডলারের। তার বাইরে বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের আওতায় মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের তেল ও গ্যাস ক্ষেত্র থেকে চীনের ইউনান প্রদেশে একটি জ্বালানি করিডোর স্থাপনের পরিকল্পনাও আছে চীনের।

কেননা, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের কোন সংঘাত হলে তারা মালাক্কা প্রণালী বন্ধ করে দেবে এবং এটা চীন বেশ ভালোভাবেই জানে। সেক্ষেত্রে তারা তেল ও গ্যাসের সরবরাহ কোথায় পাবে?’ চীন প্রচুর তেল-গ্যাস আমদানি করে এবং তার একটি বড় যোগান আসে মিয়ানমার থেকে।  মিয়ানমার আকিয়াব বন্দরে পাইপলাইনের মাধ্যমে চীনে তেল-গ্যাস সরবরাহ করছে মিয়ানমার। এসব কারণে মিয়ানমারের প্রতি চীনের সমর্থন এবং সহানুভূতি আছে।

আসিয়ান জোট ও জাপানের সমর্থন দক্ষিণপূর্ব এশিয়া অঞ্চলে অঞ্চলে সবচেয়ে কার্যকরী অর্থনৈতিক জোট আসিয়ান; কিন্তু রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আসিয়ান মিয়ানমারের বিরুদ্ধে শক্ত কোন অবস্থান নেয়নি। সেটিরও বড় কারণ ব্যবসায়িক বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। আসিয়ানের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য রাষ্ট্র সিঙ্গাপুর মিয়ানমারে শীর্ষ বিনিয়োগকারী। মিয়ানমারে সিঙ্গাপুরের অনুমোদিত বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় ২৪০০ কোটি ডলার। মিয়ানমারে যত বিদেশি বিনিয়োগ আছে তার এক-চতুর্থাংশই সিঙ্গাপুরের।

এছাড়া জাপান, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড এবং দক্ষিণ কোরিয়া থেকেও বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে বলে মিয়ানমার সরকারের বরাত দিয়ে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। যদিও জান্তা ক্ষমতা দখলের পর মিয়ানমারে বিদেশি বিনিয়োগ সার্বিকভাবে কমেছে বলে জানিয়েছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ সূচক।

সমর্থন দিয়েই যাচ্ছে রাশিয়া

জাতিসংঘের মিয়ানমার বিষয়ক মানবাধিকার বিশেষজ্ঞ টমাস এন্ড্রুস সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন, চীন এবং রাশিয়া কয়েক দশক ধরে মিয়ানমারের সামরিক সরকারের কাছে অস্ত্র বিক্রি করছে।

জাতিসংঘের এই বিশেষজ্ঞ আরও বলেছেন, চীন এবং রাশিয়ার পাশাপাশি সার্বিয়াও মিয়ানমারের সামরিক সরকারকে অস্ত্র দিচ্ছে, যদিও তারা জানে যে এসব অস্ত্র বেসামরিক মানুষের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হবে।

মিয়ানমারে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করার আহবান জানিয়ে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে গত বছর একটি প্রস্তাব পাশ হয়েছে। চীন এবং রাশিয়া ওই প্রস্তাবে ভোট দান থেকে বিরত ছিল।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ কূটনীতিক জোসেপ বোরেল বলেছেন, মিয়ানমারের সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যেসব পদক্ষেপ নিচ্ছে, বারবার সেসব বাধাগ্রস্ত হচ্ছে এবং তার প্রধান কারণ চীন-রাশিয়া।

রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়ন নিয়ে বিভিন্ন দেশ যখন ব্যাপক সরব ছিল তখন মিয়ানমার প্রসঙ্গে চীন-রাশিয়া কোন উচ্চবাচ্য করেনি, বরং মিয়ানমারের সাথে এ দুটি দেশ বেশ সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখেছে। রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে তারা কখনো মিয়ানমারের নিন্দা করেনি, কিংবা দেশটির সামরিক বাহিনী তাতমাদৌয়ের বিরুদ্ধে কোনো কথা বলেনি।

মিয়ানমারের সাথে রাশিয়ার সম্পর্ক সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তৈরি হয়েছে। সমরাস্ত্র বেচা-কেনাই এই সম্পর্কের মূলভিত্তি।

ভারতের স্বার্থ কোথায়?

ভারতের সাথে মিয়ানমারের প্রায় ১৬০০ কিলোমিটার স্থল সীমান্ত আছে। এছাড়া বঙ্গোবসাগরেও উভয় দেশের সীমান্ত রয়েছে। ভারত ও মিয়ানমার ১৯৫১ সালে একটি মৈত্রী চুক্তি করেছিল। এই চুক্তির কারণে ২০১৭ সালে তাতমাদৌ রোহিঙ্গাদের উপর ব্যাপক নিপীড়ন চালালেও ভারত কড়াভাবে সেটির নিন্দা করতে পারেনি।

এছাড়া বিভিন্ন সময়ে মিয়ানমারে দমন-পীড়ন নিয়ে ভারত উদ্বেগ জানালেও তারা শক্ত অবস্থান নিতে পারেনি। সেটিও সেই মৈত্রী চুক্তির কারণেই।

রোহিঙ্গা সংকটের শুরুর দিকে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে যত প্রস্তাব এসেছিল সেগুলোতে ভোটদানে বিরত ছিল ভারত। ভারতের সাথে মিয়ানমারের বাণিজ্যিক সম্পর্কও আছে। অবকাঠামো, তথ্যপ্রযুক্তি, জ্বালানিসহ বিভিন্ন খাতে ভারতের বিনিয়োগ আছে মিয়ানমারে।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, মিয়ানমারের জ্বালানি সম্পদ এবং বিভিন্ন বিরল প্রাকৃতিক পদার্থ ভারতের তথ্য প্রযুক্তি খাতের জন্য প্রয়োজনীয়। তাছাড়া মিয়ানমারের ভৌগোলিক অবস্থান ভারতের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, মিয়ানমার হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে সংযোগকারী।

ভারত থেকে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা যাতে মিয়ানমারে গিয়ে আশ্রয় নিতে না পারে সেজন্য দুই দেশের মধ্যে একটি চুক্তিও রয়েছে। তাছাড়া ভারতের এক বড় আশঙ্কার নাম চীন। আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকদের মতে, চীন যদি মিয়ানমারে একক আধিপত্য পেয়ে যায়, সেক্ষেত্রে মিয়ানমারকে ব্যবহার করে তারা ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সমস্যা তৈরি করতে পারে।

ব্যর্থ পশ্চিমারাও

মিয়ানমার ইস্যুতে পশ্চিমা দেশগুলো শক্ত অবস্থানে আছে। রোহিঙ্গা সংকট এবং সামরিক অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এবং তাদের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার ওপর যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশ কিছু নিষেধাজ্ঞা দেওয়া ছাড়া আর কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে পারেনি।

এর পেছনেও একটি দীর্ঘমেয়াদী বাণিজ্যিক স্বার্থ আছে বলে মনে করেন অনেক বিশ্লেষক। তাদের বক্তব্য পশ্চিমা দেশগুলো মিয়ানমারকে পুরোপুরি ছেড়ে দিতে চায় না।

দু'হাজার এগারো সালে মিয়ানমারে সামরিক শাসন প্রত্যাহারের পর পশ্চিমা ব্যবসায়ীরা দেশটিতে ভিড় করতে শুরু করে। মিয়ানমারের প্রাকৃতিক সম্পদের দিকই ছিল তাদের নজর। জ্বালানি, টেলিযোগাযোগ, হোটেল, তথ্য প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করেছিল পশ্চিমা কোম্পানিগুলো। ২০১৫ সালে বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল মিয়ানমারে ব্যাপকভাবে বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে। দেশটির মোট জিডিপির ছয় শতাংশই ছিল বিদেশি বিনিয়োগ।

ইউরোপিয়ান কমিশনের ওয়েবসাইটে ২০২১ সালে দেয়া তথ্যে বলা হয়েছে চীন, থাইল্যান্ড এবং সিঙ্গাপুরের পরে মিয়ানমারের চতুর্থ ব্যবসায়ী-অংশীদার ইউরোপীয় ইউনিয়ন। উভয় পক্ষের মধ্যে বছরে ২৫০ কোটি ডলারের বেশি বাণিজ্য হয়।

সামরিক শাসন প্রত্যাহারের পর ইউরোপের অন্যতম বৃহৎ মোবাইল ফোন পরিষেবা কোম্পানি নরওয়ের টেলিনরও বিনিয়োগ করেছিল। যদিও ২০২১ সালে সামরিক শাসন পুনরায় ফিরে আসার পরে টেলিনর তাদের মিয়ানমারের ব্যবসা লেবাননের একটি কোম্পানির কাছে বিক্রি করে দেশটি ত্যাগ করে।

মিয়ানমারের সবচেয়ে বড় আয়ের উৎস দেশটির তেল গ্যাস। তাদের রাজস্ব আয়ের অর্ধেক আসে এই খাত থেকে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে মিয়ানমারের বিক্ষোভকারীরা দেশটির তেল-গ্যাস ফান্ডের উপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার দাবি তুলেছিল; কিন্তু পশ্চিমা কোম্পানিগুলো তার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়।

রোহিঙ্গা   বৈশ্বিক সমর্থন   বাংলাদেশ   রাশিয়া   আসিয়ান জোট   চীন  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

রাশিয়ার ২৬ ড্রোন ধ্বংস; দাবি ইউক্রেনের

প্রকাশ: ১১:১১ এএম, ২৯ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

রাশিয়ার ২৮টি অ্যাটাক ড্রোনের মধ্যে ২৬টি ড্রোন আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে গুলি করে ভূপাতিত করার দাবি করেছে ইউক্রেন।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) ইউক্রেনের বিমান বাহিনী জানিয়েছে, ইরান নির্মিত ড্রোনগুলো ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চল, দক্ষিণাঞ্চল ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ধ্বংস করা হয়েছে।

রয়টার্স সূত্র বলছে, জাপোরিঝিয়া অঞ্চলের গভর্নর টেলিগ্রামে বলেছেন, সেখানকার আঞ্চলিক রাজধানীতে বিধ্বস্ত ড্রোনের ধ্বংসাবশেষের আঘাতে দুই নারী আহত হয়েছেন।

ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় খারকিভ এলাকার প্রসিকিউটররা জানিয়েছেন, বিধ্বস্ত তিনটি ড্রোনের ধ্বংসাবশেষের আঘাতে একটি রেস্তোরাঁ, একটি স্টোর এবং বেশ কয়েকটি অফিস ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ইউক্রেনের বিমান বাহিনী আরও জানিয়েছে, সারারাত ধরে করা হামলায় ড্রোনের পাশাপাশি ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে রাশিয়ান বাহিনী।



মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

সিরিয়ায় ইসরায়েলের বিমান হামলা, ৩৬ সেনা নিহত

প্রকাশ: ১১:০০ এএম, ২৯ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

সিরিয়ার আলেপ্পো প্রদেশে ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ৩৬ সিরীয় সেনা নিহত হয়েছেন। একটি যুদ্ধ পর্যবেক্ষক সংস্থার বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি শুক্রবার (২৯ মার্চ) এ তথ্য জানিয়েছে।

এএফপির ওই খবরে ব্রিটেনভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটসের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লার অধীনে থাকা একটি রকেট ডিপোর কাছে এই হামলা চালানো হয়।

সংস্থাটি জানায়, ইসরায়েলের হামলায় অন্তত ৩৬ জন নিহত হওয়ার পাশাপাশি কয়েক ডজন আহত হয়েছেন।

সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সানা জানিয়েছে, ভোরের আগে চালানো হামলায় বেসামরিক মানুষ ও সামরিক কর্মী নিহত ও আহত হয়েছেন।

এর আগে সিরিয়ায় বিমান হামলায় ১৩ জন নিহত হন। তাদের মধ্যে ইরানপন্থি অন্তত ৯ জনসহ একজন কমান্ডার ছিলেন। মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) সিরিয়ার পূর্বাঞ্চলে ওই হামলা চালানো হয়।

সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছিল, একটি হামলায় ইরানপন্থি নয় যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন আইআরজিসির কমান্ডার রয়েছেন। একটি উপত্যকায় তাদের লক্ষ্য করে হামলাটি চালানো হয়।

গত কয়েক বছর ধরেই সিরিয়ায় হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। কিন্তু কখনই তারা এসব হামলার দায় স্বীকার করে না।


সিরিয়া   ইসরায়েল   বিমান হামলা   লেবানন  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

নিউইয়র্কে পুলিশের গুলিতে নিহত রোজারিওর হলো না স্বপ্নপূরণ

প্রকাশ: ১০:২৮ এএম, ২৯ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

প্রায় দশ বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ভ্রমণে পাড়ি জমান রোজারিও পরিবার। স্বপ্নপূরণে স্থায়ীভাবে থাকতে আবেদনও করেছিল আমেরিকায়। তাই দুই বছর আগে গ্রিনকার্ড অনুমোদন হয়। তবে আর দু-এক মাসের মধ্যেই উইন রোজারিও পেয়ে যেত স্বপ্নের গ্রিনকার্ড। তার স্বপ্ন ছিল গ্রিনকার্ড পেলে যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীতে যোগ দেবেন। কিন্তু এর আগেই পুলিশের গুলিতে প্রাণ গেল উইনের। ধরে দেখা হলো না কাঙ্ক্ষিত গ্রিনকার্ড, আর অপূর্ণই থেকে গেল নৌবাহিনীতে যোগ দেওয়ার স্বপ্ন।

বুধবার (২৭ মার্চ) স্থানীয় সময় নিউইয়র্কের কুইন্স এলাকায় নিজ বাসায় পুলিশের গুলিতে নিহত হন ১৯ বছরের উইন।

স্থানীয় কর্মকর্তারা বলছেন, ওই তরুণ পুলিশ সদস্যদের দিকে এক জোড়া কাঁচি নিয়ে তেড়ে গেলে আত্মরক্ষার্থে পুলিশ গুলি চালিয়েছিল। ছেলে হারানোর শোকে ভালো করে কথাও বলতে পারছেন না বাবা ফ্রান্সিস রোজারিও।

বাষ্পরুদ্ধ কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘ছেলে আমার নিউইয়র্কের জন এডাম স্কুল থেকে থেকে গ্র্যাজুয়েশন করেছিল। তাকে নিয়ে আমাদের কত স্বপ্ন ছিল!’

ফ্রান্সিস রোজারিও বলেন, মানসিক সমস্যার কারণে দুবার জ্যামাইকা হসপিটালে ভর্তি হয়েছিল উইন। এ সমস্যার জন্যই আমাদের কাছে বেশি আদরের ছিল সে। আর সে ছেলেই হারিয়ে গেল মায়ের কোলে গুলিবিদ্ধ হয়ে।

উইনের ছোট ভাই উৎস রোজারিও বলেন, পুলিশ গুলি ছোড়ার আগে পুরোটা সময় তার মা ভাইকে জাপটে ধরে রেখেছিলেন। এমনকি ভাইকে ধরে রাখা অবস্থায়ই গুলি ছোড়ে পুলিশ। এই গুলি ছোড়ার কোনো প্রয়োজন ছিল না।

মর্মন্তুদ ঘটনার সাক্ষী মা ইভা ডি কস্টার আর্তনাদ যেন থামার নয়। ক্রমাগত কেঁদেই চলেছেন ছেলের কথা বলতে বলতে। বাঙালি কমিউনিটির আইনি পরামর্শকেরা এসেছেন তাঁদের সান্ত্বনা দিতে এবং মামলার বিষয়ে পরামর্শ করতে। কমিউনিটির নেতাদের সিদ্ধান্ত মেনে নেবেন বলে জানিয়েছেন ফ্রান্সিস রোজারিও।

রোজারিও পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যান আইনজীবী মঈন চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘পরিবারের অনুমতি নিয়ে আমরা পুলিশের কার্যক্রম তদন্ত করছি। তাদের কোনো ত্রুটি থাকলে আমরা নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টের বিরুদ্ধে শিগগিরই মামলা করব।’

নিহত উইনের দূর সম্পর্কের আত্মীয় সুখেন জোসেফ গোমেজ। তিনি বলেন, উইনের মায়ের বাড়ি গাজীপুরের কালীগঞ্জ আর বাবার বাড়ি পুবাইলে। আমার মা এবং উইনের মা বাংলাদেশ থেকেই পরিচিত। এ ছাড়া রোজারিও পরিবারের সঙ্গে অন্য কারও খুব একটা যোগাযোগ ছিল না।’

সুখেন বলেন, রোজারিও পরিবার এখানে আসার পর গুটিকয় পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল। ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলোতে খুব একটা দেখা যেত না। তাঁদের বাসায় যতবার গিয়েছি, উইনকে দেখেছি পড়ালেখা এবং অন্যান্য বিষয় নিয়ে ব্যস্ত থাকতে।

উইনের ভাই উৎস রোজারিও বলেন, ‘ভাই ছিলেন খুবই অন্তর্মুখী স্বভাবের। খেলাধুলা নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন সব সময়। আমেরিকার মেরিনে (নৌবাহিনী) যোগ দেওয়ার স্বপ্ন ছাড়াও তাঁর ইচ্ছা ছিল বড় অ্যাথলেট হওয়ার। বাসায় চর্চাও করতেন। খুব একটা বন্ধুবান্ধব ছিল না তাঁর। আমিই ছিলাম তাঁর বন্ধু।’


নিউইয়র্ক   গুলি করে হত্যা  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

মমতার ‘মৃত্যু কামনা’ করে বিতর্কে বিজেপির প্রার্থী

প্রকাশ: ০৯:৪৪ এএম, ২৯ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

প্রচার-প্রচারণা জমে উঠেছে ভারতে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের। প্রচারের পাশাপাশি বিতর্কিত মন্তব্যে জড়াচ্ছেন প্রার্থীরা। এসব বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে অনেকের প্রার্থিতাও বাতিল হচ্ছে। অনেকের প্রচারে বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগও উঠেছে।

পশ্চিমবঙ্গে দিলীপ ঘোষের পর এবার বিতর্কে জড়ালেন বিজেপির প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে ‘বেফাঁস’ মন্তব্য করে বিতর্কে জড়িয়েছেন তমলুকের এ বিজেপি প্রার্থী। তার একটি মন্তব্য তুলে ধরে তৃণমূল অভিযোগ করেছে, নেত্রী মমতার মৃত্যু কামনা করেছেন সদ্য প্রাক্তন বিচারপতি তথা বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ। এ নিয়ে অভিজিতের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দায়ের করারও প্রস্তুতি শুরু করেছে তৃণমূল। খবর আনন্দবাজার অনলাইনের।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে অভিজিৎকে বলতে শোনা যায়, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মনে হচ্ছে মৃত্যুঘণ্টা বেজে গেছে। মনে হচ্ছে!’ যদিও সেই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। অভিজিতের বক্তব্যের যে অংশটি তুলে তৃণমূল কংগ্রেস সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার শুরু করেছে, তা ছয় সেকেন্ডের। তার আগে পরে তিনি কী বলেছেন তার কোনো উল্লেখ নেই। এই মন্তব্য নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী শশী পাঁজা বলেন, ‘বিজেপির দিলীপ ঘোষ এবং অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের মধ্যে প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। কে কত নিম্নরুচির পরিচয় দিতে পারেন, সেই প্রতিযোগিতায় নেমেছেন বিজেপির প্রার্থীরা। কী অবস্থা! এরা এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মৃত্যু কামনা করছেন।’

তৃণমূলের তরফে দাবি জানানো হয়েছে, অভিজিৎকে অবিলম্বে ক্ষমা চাইতে হবে। না হলে বাংলার মানুষ এর জবাব দেবে। তৃণমূলপ্রধান মমতা ব্যানার্জিকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করে অবশ্য বিপাকে পড়েছেন দিলীপ ঘোষ। তাকে তার দল বিজেপি শোকজ করেছে। পাশাপাশি, নির্বাচন কমিশনও মেদিনীপুরের বিদায়ী সাংসদ তথা বর্ধমান-দুর্গাপুরের এবারের বিজেপি প্রার্থী দিলীপকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠিয়েছে। দিলীপের বিরুদ্ধে থানায় এফআইআরও দায়ের হয়েছে। দিলীপের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিল তৃণমূল। মমতার পিতৃপরিচয় তুলে মন্তব্য করেছিলেন দিলীপ। এবার অভিজিতের বিরুদ্ধেও কমিশনের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের শাসকদল।


ভারত   বিজেপি   মমতা ব্যানার্জী  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

দক্ষিণ আফ্রিকায় ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনা, নিহত ৪৫

প্রকাশ: ০৮:৫২ এএম, ২৯ মার্চ, ২০২৪


Thumbnail

দক্ষিণ আফ্রিকায় ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৫ জন নিহত হয়েছেন। যাত্রীবাহী একটি বাস সেতু থেকে গভীর খাদে পড়ে যাওয়ার পর প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটে। ভয়াবহ এই দুর্ঘটনায় কেবল একটি মেয়ে শিশু বেঁচে গেছে। জরুরী অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। শুক্রবার (২৯ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ আফ্রিকায় একটি বাস সেতু থেকে প্রায় ৫০ মিটার (১৬৫ ফুট) গভীর খাদে পড়ে যাওয়ার পর পঁয়তাল্লিশ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। অবশ্য এই ঘটনায় আট বছর বয়সী এক মেয়ে শিশুকে একমাত্র জীবিত অবস্থায় পাওয়া গেছে এবং গুরুতর আহত অবস্থায় পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

বিবিসি বলছে, উত্তর-পূর্ব লিম্পোপো প্রদেশে বাসটি একটি ব্যারিয়ারে ধাক্কা দেওয়ার পর দুর্ঘটনার কবলে পড়ে এবং পরে এটিতে আগুন ধরে যায়। যাত্রীরা সবাই ছিলেন তীর্থযাত্রী এবং তারা বতসোয়ানার রাজধানী গ্যাবোরোন থেকে মোরিয়া শহরে ইস্টার সার্ভিসে যাচ্ছিলেন।

এদিকে দক্ষিণ আফ্রিকার পাবলিক ব্রডকাস্টার এসএবিসি জানিয়েছে, গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে জোহানেসবার্গের প্রায় ৩০০ কিলোমিটার (১৯০ মাইল) উত্তরে মোকোপানে এবং মার্কেনের মধ্যে মামামতলাকালা পর্বত গিরিপথে একটি সেতু থেকে ছিটকে পড়ে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত চলেছে উদ্ধার তৎপরতা এবং ধ্বংসস্তূপের মধ্যে নিহত কয়েকজনের কাছে পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়েছে বলে জানা গেছে।

দেশটির পরিবহন মন্ত্রী সিন্দিসিওয়ে চিকুঙ্গা দুর্ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন এবং পরে তিনি ‘মর্মান্তিক বাস দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর প্রতি আন্তরিক সমবেদনা’ জানান। তিনি বলেন, দক্ষিণ আফ্রিকার সরকার মৃতদেহ ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করবে এবং দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখতে পূর্ণ তদন্ত করবে।

তিনি আরও বলেন, ‘এই কঠিন সময়ে আমাদের চিন্তাভাবনা এবং প্রার্থনা আপনার সাথে আছে। আমরা এই ইস্টার উইকএন্ডে আমাদের রাস্তায় আরও বেশি লোক থাকায় আরও বেশি সতর্কতার সাথে সবসময় দায়িত্বশীল ভাবে ড্রাইভিং করার জন্য অনুরোধ করছি।’

অবশ্য দক্ষিণ আফ্রিকার খারাপ সড়ক নিরাপত্তার রেকর্ড রয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।


সড়ক দুর্ঘটনা   দক্ষিণ আফ্রিকা  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন