সময়টা ২০১৯
সাল, শীতকাল। ইতালির নৈশক্লাবগুলো থেকে বাজনার তালে তালে ভেসে আসছিল—‘আমি জর্জিয়া,
আমি একজন নারী, আমি একজন মা, আমি একজন ইতালীয়, আমি একজন খ্রিষ্টান।’ বক্তব্যটি ছিল
জর্জিয়া মেলোনির। তাঁর এই বক্তব্য অনেকেরই নজর কেড়েছিল।
মেলোনি ইতালির
রাজনৈতিক দল ফ্রাতেল্লি দি’ ইতালিয়ার (ব্রাদার্স অব ইতালি) নেতা। ২০১৯ সালের অক্টোবরে
তিনি যখন ওই বক্তব্য দিয়েছিলেন, তখন তাঁর কট্টর ডানপন্থী দলটি বেশ ছোট ছিল। বক্তব্যটি
নৈশক্লাবগুলোতে বারবার বাজানো হচ্ছিল মেলোনিকে নিয়ে হাসি-ঠাট্টা করার জন্য।
সেই অবস্থান
থেকে উঠে এসে আজ ইতালির প্রধানমন্ত্রী হলেন জর্জিয়া মেলোনি। মেলোনির অতিরক্ষণশীল ও
জাতীয়তাবাদী আচরণ তাঁকে জনপ্রিয়তা এনে দিয়েছে। তাঁর আপসহীন মনোভাব নেতৃত্ব নিয়ে দৃশ্যত
হতাশ ইতালীয়দের মধ্যে নতুন জায়গা করে নিয়েছে। গত ১১ বছরে সাতটি সরকার দেখেছে ইতালির
জনগণ। বর্তমান নেতাদের মধ্যে মেলোনিই একমাত্র আছেন, যিনি এখনো দায়িত্বে এসে জনগণের
পরীক্ষায় পড়েননি।
২০১৮ সালের
সর্বশেষ নির্বাচনে মেলোনির দল পেয়েছিল মাত্র ৪ শতাংশ ভোট। তখন থেকে তাদের জনপ্রিয়তা
বেড়ে চলেছে। ইতালির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাগি নেতৃত্বাধীন সরকারকে সমর্থন
জানাননি মেলোনি। সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বিরোধীদের কাতারে দাঁড়ানোর। তাঁর জোটের শরিক দল
লিগ পার্টির নেতা মাত্তেও সালভানি ও ফোরজা ইতালিয়ার নেতা সিলভিও বেরলুসকোনি কিন্তু
সরকারকে সমর্থনের পথেই হেঁটেছিলেন। পর্যবেক্ষকদের ভাষ্য, সরকারের সঙ্গে হাত না মেলানোই
মেলোনিকে বড় জনপ্রিয়তা এনে দিয়েছে।
মেলোনির যে
দর্শন সেটি ‘ঈশ্বর, পরিবার ও স্বদেশ’ নীতিকে অনুসরণ করে। এই নীতির ভিত্তি খ্রিষ্টান
পরিচয়, ঐতিহ্যগত পারিবারিক কাঠামো এবং ইতালীয় দেশপ্রেমিকদের নিয়ে গড়ে ওঠা একটি জাতি।
মেলোনির এই
দর্শন ইতালির নাগরিকদের দুই ভাগে ভাগ করবে বলে মনে করেন এদওয়ার্দো নোভেলি। তাঁর ভাষ্যমতে,
মেলোনি প্রধানমন্ত্রী হলে তাঁর এই দর্শনের প্রভাব আসবে ইতালির আইন, সরকারি কর্মকাণ্ড
ও অর্থনীতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে।
সম্প্রতি নিজেকে
খানিকটা উদার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন মেলোনি। রাশিয়ার ওপর পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞায়ও
সমর্থন রয়েছে তাঁর। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন নিন্দিত ফ্যাসিস্টদের ‘ঈশ্বর, মাতৃভূমি,
পরিবার’ স্লোগানে আস্থা রয়েছে তাঁর। ইতালিতে অভিবাসীদের আগমন ঠেকাতে উপকূলে নৌ অবরোধ
দেওয়ারও পক্ষে মেলোনি। রোমের লুইস বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের অধ্যাপক লরেঞ্জো কাস্তেলানি
বলেন, নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ে সুর বেশ নরম করেছেন মেলোনি। আন্তর্জাতিক আর্থিক বাজার ও
ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতি তাঁর যে অবিশ্বাস ছিল, সেদিক দিয়েও নরম হয়েছেন।
সমালোচকেরা
বলছেন, মেলোনির এই সুরবদল শুধুই লোক দেখানোর জন্য। ইতালির ইউনিভার্সিটি অব বোলোনিয়ার
অধ্যাপক পিয়েরো ইগনাজি বলেছেন, ‘কোনো পরিবর্তন আসেনি। ইতালির ডানপন্থী রাজনীতির যে
চরিত্র, তা নতুনভাবে দেখা যাচ্ছে। আর নব্য–ফ্যাসিবাদকে আরও আকর্ষণীয়ভাবে তুলে ধরা হচ্ছে।’
তাঁর ভাষ্যমতে, মেলোনির সুরে যে পরিবর্তন, সেখানে ছদ্মবেশ রয়েছে।
এমন ধারণার
কারণও আছে। নির্বাচনের আগেই সম্প্রতি এক সমাবেশে তিনি বলেছিলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভালো
সময় শেষ হয়েছে। সেখানে সমালোচনা করেন গণহারে অভিবাসনের। নাগরিক স্বাধীনতার ওপর হাঙ্গেরির
বিধিনিষেধের নিন্দা জানিয়ে গত শুক্রবার ইউরোপীয় পার্লামেন্টের একটি প্রতিবেদনেও সমর্থন
জানায়নি তাঁর দল।
ইতালির সংবিধানে
একটি পরিবর্তন আনতে মেলোনির রাজনৈতিক জোটের প্রস্তাবের সমালোচনাও হচ্ছে। ওই পরিবর্তন
এলে দেশটিতে জনগণের ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পথ খুলে যাবে। এর ফলে প্রেসিডেন্ট–শাসিত
সরকারব্যবস্থার কাছাকাছি চলে যাবে ইতালির সংসদীয় গণতন্ত্র। তবে সংবিধানে কোনো পরিবর্তন
এবং ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণে দেশটির বামধারার রাজনীতিকদের আপত্তি রয়েছে।
দেশটি রাশিয়ার
দিকে ঝুঁকে পড়বে কি না, এ নিয়েও গুঞ্জন শুরু হয়েছে। ভ্লাদিমির পুতিন ২০১৮ সালে চতুর্থ
মেয়াদে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। ওই সময় পুতিনকে অভিনন্দন জানাতে ইতালির কয়েকজন
ডানপন্থী নেতাকে রীতিমতো তাড়াহুড়া করতে দেখা যায়। ব্রাদার্স অব ইতালি দলের প্রধান জর্জিয়া
মেলোনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছিলেন, ‘রাশিয়ার এই নির্বাচন জনগণের ইচ্ছার দ্ব্যর্থহীন
প্রতিফলন।’
মেলোনির সেই
মন্তব্য সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ফের সামনে এসেছে। ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা বন্ধে সামর্থ্যের সবকিছুই
করে যাচ্ছে ইউরোপ। ঠিক সেই সময়ে রাশিয়ার সঙ্গে ঐতিহাসিকভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক
রয়েছে এমন দলগুলোর সঙ্গে জোটের সম্ভাবনা রোম মস্কোর ঘনিষ্ঠ হতে পারে এমন আশঙ্কা বাড়িয়েছে।
ইনস্টিটিউট
অব ইন্টারন্যাশনাল পলিটিক্যাল স্টাডিজের (আইএসপিআই) রাশিয়াবিষয়ক কর্মসূচির প্রধান আলদো
ফেরারি বলেন, এটি একটি যৌক্তিক বিতর্ক। কিন্তু (মস্কোর সঙ্গে তাদের সম্পর্কের) গুরুত্ব
অনুপাতে বিষয়টি উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে নির্বাচনী প্রচারণায়
বিষয়টি ব্যবহার করা হচ্ছে।
ডানপন্থীদের
উত্থানে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন অনেক ইতালীয়। ৬০ বছর বয়সী মালাতেস্তা তাঁদের একজন। গতকাল
ভোট দিতে এসে তিনি বলেন, ‘এই ঐতিহাসিক মুহূূর্তে ভোট দেওয়া আমার দায়িত্ব। আমি ভীত,
কারণ দেশের মানুষ ডানপন্থীদের দিকে ঝুঁকছে। আমি বেশ উদ্বিগ্ন।’
তবে ভিন্নমতও
আছে। ৭৯ বছর বয়সী ভোটার লুসিয়ানো বলেন, ‘আমার মতে মেলোনিই একমাত্র রাজনীতিক, যিনি ইতালির
অবস্থার পরিবর্তন করতে পারেন। তিনি সব সময় ইতালীয়দের স্বার্থকে প্রাধান্য দেবেন।’
উগ্র ডানপন্থীদের
অভিবাসীবিরোধী নীতির কারণে ইতালিতে থাকা বাংলাদেশি প্রবাসী তথা অভিবাসীদের মধ্যেও উদ্বেগ
দেখা দিয়েছে। ইতালিতে স্বামী-সন্তান নিয়ে বাস করা বাংলাদেশি নারী রোকসানা মাহমুদ কালের
কণ্ঠকে বলেন, ‘নির্বাচনী প্রচারণায় ডানপন্থীরা অভিবাসীদের কটাক্ষ করার পাশাপাশি কঠোর
হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে। আমাদের ধারণা তারা ক্ষমতায় এলে অভিবাসীদের জন্য কঠোর আইন হবে।’
ইতালির এবারের
নির্বাচনে ভোটারের সংখ্যা পাঁচ কোটি ১০ লাখ। এর মধ্যে নতুন ভোটারের সংখ্যা ২৬ লাখ।
একজন ভোটার দুটি করে ভোট দেবেন। একটি পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ ও অন্যটি নিম্নকক্ষের
প্রতিনিধি নির্বাচনের জন্য।
ইউরোপ ইতালি ফ্যাসিবাদ জর্জিয়া মেলোনি ডানপন্থী
মন্তব্য করুন
ভারতে বিজেপির উত্থান হলেও দক্ষিণের রাজ্য কেরালার চিত্র একেবারেই বিপরীত। বামদের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত কেরালা একমাত্র রাজ্য, যেখানে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি কখনো একটি আসনও জেতেনি। রাজ্যটি দখলে প্রাণপণ চেষ্টা করলেও গেরুয়া শিবির কেন তা পারছে না? রাজ্যটিতে বিজেপির পিছিয়ে থাকার কারণ কী?
স্বাধীনতার পর থেকে কেরালা রাজ্য বিধানসভায় ক্ষমতায় বসতে পারেনি ভারতীয় জনতা পার্টি। দেশটির দক্ষিণের এ রাজ্যে বরাবরই বাম-কংগ্রেসের প্রতি সমর্থন দিয়ে আসছে জনগণ। প্রগতিশীল মানুষের ঘনত্বের গড় বিচারে কেরালা রাজ্যটির অবস্থান সবার ওপরে।
শুধু তাই নয়, শিক্ষাতেও এগিয়ে রাজ্যটি। অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং আধুনিকতা ছাড়াও এ রাজ্যের মানুষ ভারতের অন্য রাজ্যের তুলনায় চিন্তাশীল, বন্ধুত্বপরায়ণ এবং গঠনমূলক বলেও মনে করা হয়। প্রশ্ন আসতে পারে, এসবের সঙ্গে বিজেপির জনপ্রিয়তা না বাড়া কিংবা ভোট না পাওয়ার সম্পর্ক কী?
বিজেপিকে এ রাজ্যে ভোট পেতে হলে রাজ্যটির ৪৫ শতাংশ অ-হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের মত পেতে হবে। অর্থাৎ খ্রিষ্টান এবং মুসলমানদের ভোট পেতে হবে। নারী ভোটাররা এখানকার আরেকটি ট্রাম্প কার্ড। রাজ্যের মোট ভোটারের অর্ধেকের বেশি নারী; তারা রাজনৈতিকভাবে শুধু সচেতনই নন, সাম্প্রদায়িক রাজনীতির ঘোর বিরোধী।
ধর্মীয় আবেগকে সামনে রেখে পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, আসাম, বিহার, ঝাড়খন্ড, হরিয়ানা ও পাঞ্জাবসহ বহু রাজ্যে বিজেপির রকেট গতিতে উত্থান হলেও কেরালায় বিজেপির সলতেতে আগুন তো দূরের কথা, তেলও দিতে পারছেন না শীর্ষ নেতারা।
গেলো লোকসভা নির্বাচনে ২০ আসনের রাজ্যটিতে বিজেপি শূন্য। একইভাবে ২০২১ সালের রাজ্যটির বিধানসভা ভোটেও বিজেপির ঝুলিতে যায়নি ১৪০ আসনের একটিও। পৌরসভা, গ্রাম পঞ্চায়েতেও গেরুয়া শিবিরের উপস্থিতি টিমটিম করে জ্বলা বাতির মতোই।
যদিও এবারের লোকসভা নির্বাচনের আগে আত্মবিশ্বাসী বিজেপি। তবে শেষ কথা বলবে কেরালার শিক্ষিত ও প্রগতিশীল ধর্ম নিরপেক্ষ মানুষ বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
মন্তব্য করুন
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ সাইয়্যেদ আলী খামেনেয়ী বুধবার তেহরানে হাজার হাজার শ্রমিকের সঙ্গে এক বৈঠকে বলেছেন, ইরানের বিরুদ্ধে পশ্চিমাদের চাপ ও নিষেধাজ্ঞার উদ্দেশ্য হলো ইরানকে তাদের সামনে নতজানু করা এবং তাদের পুরোপুরি অনুসরণে বাধ্য করা। কিন্তু ইতিহাস-ঐতিহ্যের অধিকারী মহান ইরানি জাতি ও ইসলামি প্রজাতন্ত্র গুণ্ডামি ও বাড়াবাড়ির সামনে নত হবে না। ইরানি জাতি কখনই বৈশ্বিক অহংকার দ্বারা আরোপিত নিষেধাজ্ঞার কাছে নতি স্বীকার করবে না এবং নিষেধাজ্ঞাকে সুযোগে পরিণত করে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নির্মাণ করবে।
সর্বোচ্চ নেতা বলেন, 'আমরা বহু বছর ধরে আমেরিকা এবং ইউরোপের কঠোর নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন। তাদের নিষেধাজ্ঞার উদ্দেশ্য কী? তারা পারমাণবিক অস্ত্র এবং মানবাধিকারের কথা বলছে। এটা মিথ্যাচার। এগুলো কিছু নয়। সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করা হচ্ছে এই অভিযোগে ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হচ্ছে। তাদের দৃষ্টিতে সন্ত্রাসবাদী কারা? গাজাবাসীরা সন্ত্রাসী!'
তিনি আরও বলেন, 'আমেরিকা ও ইউরোপের মতে গাজার জনগণ সন্ত্রাসী। একটি বদমাইশ, দখলদার ও অবৈধ সরকার মাত্র ছয় মাসে প্রায় ৪০ হাজার মানুষকে হত্যা করেছে, এর মধ্যে শিশু রয়েছে কয়েক হাজার। এরপরও তারা সন্ত্রাসী নয়, কিন্তু যারা প্রতিনিয়ত বোমা হামলার মধ্যে রয়েছে তারা সন্ত্রাসী! ইহুদিবাদী ইসরায়েল (ফিলিস্তিনিদের) ক্ষেত-খামার ও ঘর-বাড়ি বুলডোজার দিয়ে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিচ্ছে যাতে উপশহর নির্মাণ করতে পারে। ফিলিস্তিনিরা তাদের কাছ থেকে জোর করে কেড়ে নেওয়া বাড়িটি রক্ষার চেষ্টা করছে। সে কীভাবে সন্ত্রাসী হতে পারে? তারাই সন্ত্রাসী যারা তাদের ওপর বোমাবর্ষণ করছে।'
মন্তব্য করুন
ইউক্রেনে গোপনে দূরপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পাঠিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এরই মধ্যে ইউক্রেনীয় বাহিনী রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে ওইসব ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারওে শুরু করেছে। মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, অস্ত্রগুলো গত মার্চ মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ৩০০ মিলিয়ন ডলার সহায়তা প্যাকেজের অংশ ছিল, যা চলতি মাসে কিয়েভে পৌঁছেছে।
মার্কিন মিডিয়ার প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, অধিকৃত ক্রিমিয়ায় রাশিয়ার লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার জন্য ইতোমধ্যে অন্তত একবার ওই ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে ইউক্রেনীয় বাহিনী।
বুধবার ইউক্রেনের জন্য আরও ৬১ বিলিয়ন ডলারের নতুন সহায়তা প্যাকেজ স্বাক্ষর করেছেন বাইডেন।
এর আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে আর্মি ট্যাকটিক্যাল মিসাইল সিস্টেম (এটিএসিএমএস) এর মধ্য-পাল্লার সংস্করণ সরবরাহ করেছিল। সে সময় আরও শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা পাঠানো ব্যাপারে অনাগ্রহ প্রকাশ করেছিল।
তবে গত ফেব্রুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট বাইডেন ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গোপনে ইউক্রেনে দূর-পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা- যা ৩০০ কিলোমিটার (১৮৬ মাইল) পর্যন্ত দূরত্বের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম পাঠাতে পারে।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল বলেছেন, “আমি নিশ্চিত করতে পারি যে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সরাসরি নির্দেশে ইউক্রেনকে দূরপাল্লার এটিএসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্র প্রদান করা হয়েছে।
ইউক্রেনের অপারেশনাল নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য তাদের অনুরোধে বিষয়টি এটি আগে ঘোষণা করা হয়নি বলে জানান তিনি।
ইতোমধ্যে কতগুলো ব্যালিস্টি অস্ত্র পাঠানো হয়েছে তা স্পষ্ট নয়, তবে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান বলেছেন, “ওয়াশিংটন আরও ক্ষেপণাস্ত্র পাঠানোর পরিকল্পনা করছে, যা একটি পার্থক্য তৈরি করবে। কিন্তু আমি যেমন এই মঞ্চে আগেই বলেছি... কোনও রূপালী বুলেট নেই।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, অধিকৃত ক্রিমিয়ায় রাশিয়ার একটি বিমানঘাঁটিতে আঘাত হানতে গত সপ্তাহে প্রথমবারের মতো দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, মঙ্গলবার রাতে অধিকৃত বন্দর শহর বারডিয়ানস্কে রাশিয়ার সেনাদের ওপর হামলায় নতুন ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে।
ইউক্রেন ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র আমেরিকা
মন্তব্য করুন
নারী চিকিৎসকদের কাছ থেকে চিকিৎসা নিলে রোগীদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা অনেকাংশেই বেড়ে যায়। একইসাথে নারী ডাক্তাদের কাছ থেকে চিকিৎসা গ্রহণ শেষে পুনরায় অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হবার সম্ভাবনাও অনেকাংশে কম।
চিকিৎসা ক্ষেত্রে নারীদের সুনাম দীর্ঘদিনের। তবে এবার সামনে এসেছে নতুন তথ্য। গবেষণা বলছে, নারী চিকিৎসকের সেবা নেওয়া রোগীদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা বেশি। বুধবার (২৪ এপ্রিল) এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
চিকিৎসা ও গবেষণাবিষয়ক জার্নাল ‘অ্যানালস অব ইন্টারনাল মেডিসিন’ জানিয়েছে, নারী চিকিৎসকদের কাছে চিকিৎসা নেওয়া রোগীদের মৃত্যুহার কম। এমনকি নারীদের কাছে চিকিৎসা নেওয়া রোগীদের পুনরায় হাসপাতালে ভর্তির সম্ভাবনাও কম।
সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ১০১৬ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত সময়ে এ গবেষণা চালানো হয়েছে। এ সময়ে ৭ লাখ ৭৬ হাজার রোগীর ওপর এ গবেষণা চালানো হয়। এরমধ্যে ৪ লাখ ৫৮ হাজার ১০০ নারী ও তিন লাখ ১৮ হাজার ৮০০ জন পুরুষ ছিলেন।
ওই গবেষণার ফলে বলা হয়েছে, নারী চিকিৎসকদের কাছে চিকিৎসা নেওয়া রোগীদের মৃত্যু ও পুনরায় হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার হার কম ছিল।
এতে দেখা গেছে, নারী চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নেওয়া নারী রোগীদের মধ্যে মৃত্যুর হার ছিল ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ। অন্যদিকে পুরুষ চিকিৎসকের কাছে নারী চিকিৎসা নেওয়া রোগীর মৃত্যুর হার ছিল ৮ দশমিক ৩৮ শতাংশ।
অন্যদিকে নারী চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নেওয়া পুরুষ রোগীদের মৃত্যুর হার ছিল ১০ দশমিক ১৫ শতাংশ। আর পুরুষ চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নেওয়া পুরুষ রোগীদের মৃত্যুর হার ছিল ১০ দশমিক ২৩ শতাংশ।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ইয়োসুকে তুগাওয়া নামের এক গবেষক বলেন, নারী চিকিৎসকরা ভালো মানের চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। সামাজিক দিক দিয়ে নারী চিকিসৎকদের দিয়ে চিকিৎসা করালে রোগীরা লাভবান হন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রোগীদের সঙ্গে কথা বলার সময়ে নারী চিকিৎসকরা বেশি সময় ব্যয় করেন। তারা রোগীদের রোগ নিয়ে ভালোভাবে খোঁজ নেন। এছাড়া নারী রোগীরা নারী চিকিৎসকদের নিয়ে চিকিৎসা সেবা নিতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন।
এর আগে ২০২২ সালের এক গবেষণায় দেখা যায়, একজন নারী চিকিৎসক একজন রোগীর পেছনে গড়ে ২৩ মিনিট সময় ব্যয় করেন। অন্যদিকে একজন পুরুষ চিকিৎসক গড়ে একজন রোগীর পেছনে ২১ মিনিট সময় ব্যয় করেন।
মন্তব্য করুন
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বর্বর হামলায় আরও ৭৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে করে উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ৩৪ হাজার হাজার ২৫০ জন।
এছাড়া গত অক্টোবর থেকে চলা এই হামলায় আহত হয়েছেন আরও ৭৭ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। বুধবার (২৪ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
প্রতিবেদনে জানায়, অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের আক্রমণ অব্যাহত রয়েছে এবং গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত আরও ৭৯ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৮৬ জন আহত হয়েছেন বলে বুধবার ওই অঞ্চলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকা পড়ে আছেন কারণ উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছে না বলেও জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতে, ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসের একটি অস্থায়ী রায়কে লঙ্ঘন করে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে। গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে চালানো বর্বর এই আগ্রাসনে অন্তত ৩৪ হাজার ২৬২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহত এসব বিপুল সংখ্যক ফিলিস্তিনির বেশিরভাগই নারী এবং শিশু। এছাড়া ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় আহত হয়েছেন আরও ৭৭ হাজার ২২৯ জন।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।
মূলত ইসরায়েলি আক্রমণ গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন।
এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। হাজার হাজার মানুষ কোনও ধরনের আশ্রয় ছাড়াই বসবাস করছে এবং প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম ত্রাণবাহী ট্রাক এই অঞ্চলে প্রবেশ করছে।
ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে এক অন্তর্বর্তী রায়ে এই আদালত তেল আবিবকে গণহত্যামূলক কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে এবং গাজার বেসামরিক নাগরিকদের মানবিক সহায়তা প্রদানের নিশ্চয়তা দেওয়ার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়।
ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তুদের জন্য জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএর প্রধান ফিলিপ লাজারিনির মতে, সাহায্যের ‘অর্থপূর্ণ ও নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহের’ মাধ্যমেই শুধুমাত্র উত্তর গাজার দুর্ভিক্ষ এড়ানো যেতে পারে।
মন্তব্য করুন
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ সাইয়্যেদ আলী খামেনেয়ী বুধবার তেহরানে হাজার হাজার শ্রমিকের সঙ্গে এক বৈঠকে বলেছেন, ইরানের বিরুদ্ধে পশ্চিমাদের চাপ ও নিষেধাজ্ঞার উদ্দেশ্য হলো ইরানকে তাদের সামনে নতজানু করা এবং তাদের পুরোপুরি অনুসরণে বাধ্য করা। কিন্তু ইতিহাস-ঐতিহ্যের অধিকারী মহান ইরানি জাতি ও ইসলামি প্রজাতন্ত্র গুণ্ডামি ও বাড়াবাড়ির সামনে নত হবে না। ইরানি জাতি কখনই বৈশ্বিক অহংকার দ্বারা আরোপিত নিষেধাজ্ঞার কাছে নতি স্বীকার করবে না এবং নিষেধাজ্ঞাকে সুযোগে পরিণত করে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নির্মাণ করবে।
নারী চিকিৎসকদের কাছ থেকে চিকিৎসা নিলে রোগীদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা অনেকাংশেই বেড়ে যায়। একইসাথে নারী ডাক্তাদের কাছ থেকে চিকিৎসা গ্রহণ শেষে পুনরায় অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হবার সম্ভাবনাও অনেকাংশে কম। চিকিৎসা ক্ষেত্রে নারীদের সুনাম দীর্ঘদিনের। তবে এবার সামনে এসেছে নতুন তথ্য। গবেষণা বলছে, নারী চিকিৎসকের সেবা নেওয়া রোগীদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা বেশি। বুধবার (২৪ এপ্রিল) এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বর্বর হামলায় আরও ৭৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে করে উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ৩৪ হাজার হাজার ২৫০ জন। এছাড়া গত অক্টোবর থেকে চলা এই হামলায় আহত হয়েছেন আরও ৭৭ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। বুধবার (২৪ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।