ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

নেপালে ভূমিধসে ৩ শিশুসহ ৯ জনের মৃত্যু

প্রকাশ: ০৫:২০ পিএম, ২৯ জুন, ২০২৪


Thumbnail

নেপালের পশ্চিমাঞ্চলে ভারি বৃষ্টির মধ্যে ভূমিধসে তিন শিশুসহ অন্তত ৯ জন নিহত হয়েছেন। শনিবার (২৯ জুন) ভারতীয় গণমাধ্যম টইমস অফ ইন্ডিয়া এ তথ্য জানায়।

ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসকিউ অ্যান্ড রিডাকশন ম্যানেজমেন্ট অথরিটির মুখপাত্র ডিজান ভাট্টরাই জানিয়েছেন, কাঠমান্ডু থেকে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার পশ্চিমে গুলমি জেলার মালিকা গ্রামে ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। এতে একটি পরিবারের পাঁচজন সদস্য নিহত হয়েছেন। ভূমিধসের সময় তারা বাড়িতে ঘুমিয়ে ছিলেন।

তিনি বলেন, ৫ জনের মধ্যে দুইজন শিশুও রয়েছে।

গুলমির পার্শ্ববর্তী স্যায়াংজা জেলার এক এলাকাতেও ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। এতে একটি পরিবারের বাড়িঘর পুরোপুরি ধসে গেছে। এ সময় ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে এক নারী ও তার তিন বছর বয়সী মেয়ে নিহত হয়েছেন।

এছাড়া গুলমির সীমান্ত লাগোয়া বাগলুং জেলায় আরেক ভূমিধসের ঘটনায় দুজন মারা গেছেন।

চলতি জুন মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে নেপালে বর্ষা মৌসুম শুরু হয়েছে। তখন থেকে দেশটিতে ভূমিধস, বন্যা এবং বজ্রপাতে অন্তত ৩৫ জন নিহত হয়েছেন। নেপালে বর্ষা মৌসুমে সাধারণত সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকে।

তবে বর্ষা মৌসুমে বেশিরভাগ পার্বত্য এলাকায় ভূমিধস ও আকস্মিক বন্যা প্রায়ই দেখা যায়। আর প্রাকৃতিক এসব দুর্যোগে দেশটিতে প্রত্যেক বছর শত শত মানুষের প্রাণহানি ঘটে।



নেপাল   ভূমিধস   মৃত্যু  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থীতা টিকানো নিয়ে বাইডেনের শঙ্কা প্রকাশ

প্রকাশ: ১০:১৪ পিএম, ০৩ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে সদ্য সমাপ্ত প্রথম রাউন্ডের ডিবেটে সাবেক রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে ধরাশায়ী হয়েছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। আর এবারে  নির্বাচনকে ঘিরে বাইডেন ব্যক্তিগতভাবে স্বীকার করেছেন যে, তিনি প্রেসিডেন্ট পদে লড়াইয়ে আদৌ টিকে থাকতে পারবেন কিনা এ নিয়ে ভুগছেন সন্দেহে। এমনকি তার সামনের দিনগুলো নিয়েও নিজের মাঝে কিছুটা রয়েছে আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি।

আর এ থেকেই হয়তো মঙ্গলবার (৩ জুলাই) তিনি তার মিত্রকে স্পষ্ট করে বলেই ফেলেন-"এটি কাজ করছে না।" পরে সিএনএন’র কাছে বাইডেনের এই মিত্র বলেন, “তিনি মুহূর্তটি পরিষ্কার চোখে দেখেছেন"। তিনি বলেন, দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস সর্বপ্রথম বাইডেনের প্রার্থীতার বিষয়ে বিরোধিতা করে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। 

এ ব্যক্তি বলেন, “নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসছে আর অন্যদিকে তহবিল সংগ্রহেও দেখা গেছে জটিলতা। এমনকি বাইডেনকে নিয়ে সাক্ষাৎকারগুলোও বাজেভাবে প্রচারিত হয়েছে। 

এদিকে প্রেসিডেন্ট ডিবেটে বাইডেনের পর্যুদস্ত হবার পরে তার নিজ দল ডেমোক্র্যাটদের বেশ কজন শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ তাকে বাদ দেওয়ার ব্যাপারে আহ্বান জানাতে শুরু করেছেন।

মঙ্গলবারে প্রকাশিত এক ব্যক্তিগত কথোপকথনে বাইডেনের মিত্র বলেন, ‘’তিনি (বাইডেন) ডিবেটে বাজে পারফরম্যান্সের জন্য তার নিজেকে দোষারোপ করেছিলেন, তার কর্মীদের নয়’’। 

তিনি আরো জানান, "তিনি (বাইডেন) বলেছিলেন: 'আমি খুব বেশি বৈদেশিক নীতি অবলম্বন করেছি।" 

এদিকে মঙ্গলবার রাতে ভার্জিনিয়ায় একটি তহবিল সংগ্রহ প্রচারণার অনুষ্ঠানে বাইডেন বিতর্কের ঠিক আগে দুটো গুরুত্বপূর্ণ বিদেশ সফরে তার ভ্রমণ নিয়ে সমালচনা করে বলেন, এটি একটি খারাপ বিষয় ছিল।


জো বাইডেন   যুক্তরাষ্ট্র  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

রাত পোহালেই ভোট, সুনাক নাকি স্টারমার লন্ডনের মসনদে বসবে কে?

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ০৩ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

বর্তমানে নানা সমস্যায় জর্জরিত যুক্তরাজ্যের কাণ্ডারি কে ধরতে যাচ্ছেন সে বিষয়টি হতে চলেছে আগামীকাল বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনের মধ্যদিয়ে। এদিন ব্যালটের মাধ্যমে ব্রিটেনের জনগণ বেছে নিবেন কে হবেন পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী। ঋষি সুনাক নাকি কিয়ার স্টারমার এই আবর্তেই ঘুরপাক খাচ্ছে ভোটের মাঠ। দেড় মাসের নির্বাচনী প্রচারণা শেষে দেশজুড়ে বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত একটানা ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। আর এই নির্বাচনে কনজারভেটিভ পার্টি, লেবার পার্টি, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি, গ্রিন পার্টি, রিফর্ম পার্টি, স্কটিশ ন্যাশনালিস্ট পার্টিসহ ছোট–বড় অন্তত ৯৮টি রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করতে চলেছে।

তবে এবারের নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন রেকর্ড সংখ্যক প্রার্থীও। ইংল্যান্ড, ওয়েলস, স্কটল্যান্ড এবং উত্তর আয়ারল্যান্ডজুড়ে ৬৫০টি নির্বাচনী এলাকায় ৪ হাজার ৫০০ এরও বেশি প্রার্থী লড়াই করবেন। অথচ গত নির্বাচনে সবদল মিলিয়ে ছিল ৩৩২জন প্রার্থী। ফলে দেখা যাচ্ছে, ২০১৯ সালের তুলনায় আগামী ৪ জুলাইয়ের নির্বাচনে ৩৫.৭ শতাংশ প্রার্থী বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রাথমিকভাবে যুক্তরাজ্যের ডানপন্থী রাজনৈতিক দল রিফর্ম ইউকের প্রার্থী সংখ্যাও বেড়েছে বহুগুণ।

এদিকে জনমত জরিপে এখনও এগিয়ে রয়েছে লেবার পার্টি। হাউস অব কমন্সের ৬৫০টি আসনের বিপরীতে রাজনৈতিক দলগুলোর মনোনীত, স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ এই নির্বাচনে রেকর্ডসংখ্যক ৪ হাজার ৫১৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

২০১৯ সালে রিফর্ম ইউকে দলের নেতা নাইজেল ফারাজ বরিস জনসনের রক্ষণশীলদের জন্য ব্রেক্সিট (ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে যাবার প্রক্রিয়া) সুরক্ষিত করতে কৌশলগত সিদ্ধান্ত হিসেবে ৩০০ টিরও বেশি আসনে প্রার্থী না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তবে ফারাজ এই নির্বাচনে কনজারভেটিভ এবং ইউনিয়নিস্ট পার্টি সঙ্গে অনুরূপ চুক্তি বাতিল করেছেন। অন্যদিকে গ্রিন পার্টি থেকেও পূর্বের তুলনায় আরো বেশি প্রার্থী নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করতে যাচ্ছে। গত নির্বাচনের চেয়ে ১৩১ জন বেশি প্রার্থীকে নির্বাচনে দাঁড়ানোর সুযোগ দিয়েছে দলটি।

এদিকে জর্জ গ্যালোওয়ের নেতৃত্বে ব্রিটেনের ওয়ার্কার্স পার্টিও ১৫২ জন প্রার্থী নিয়ে প্রথমবারের মতো নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। এ ছাড়া স্বতন্ত্র ও ছোট দলের প্রার্থীর সংখ্যাও ব্যাপকভাবে বেড়েছে। মোট মিলিয়ে এবারের সাধারণ নির্বাচনে প্রার্থী সংখ্যা (৪৫১৫জন) ২০১০ সালের নির্বাচনের (৪১৫০ জন) প্রার্থীর রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে।

এবারের নির্বাচনে পার্লামেন্ট প্রার্থী হিসেবে বেশ কয়েকজন বিশিষ্ট ব্রিটিশ ফিলিস্তিনিও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে জানা গেছে। মূলত গাজায় চলমান যুদ্ধ, ইসরায়েলের প্রতি লেবার ও রক্ষণশীলদের সমর্থন তাদের নির্বাচনে দাঁড়ানোর প্রধান কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

বর্তমান সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার ছয় মাস আগে গত ২২ মে অনেকটা আকস্মিকভাবেই আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। যদিও ২ মে অনুষ্ঠিত স্থানীয় নির্বাচনের পর লেবার পার্টি জাতীয় নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছিল। নির্বাচন ঘিরে প্রধান দলগুলো জনমত নিজেদের দিকে টানতে চলমান সমস্যার সমাধানে ও সুসংহত যুক্তরাজ্য গড়ে তুলতে নির্বাচনী ইশতেহারে তুলে ধরেছে নানা প্রতিশ্রুতি।

ব্রেক্সিট–পরবর্তী সময় থেকে যুক্তরাজ্যের ভঙ্গুর অর্থনীতি, জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি, অভিবাসন সমস্যাসহ সাম্প্রতিক সময়ে অপরাধের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় দেশটির জনগণ বেশ বিরক্ত। তা ছাড়া টানা ১৪ বছর ক্ষমতায় থাকা কনজারভেটিভ পার্টির নেতৃত্বের প্রতিও আস্থা রাখতে পারছে না সাধারণ মানুষ।

এমন বাস্তবতায় পরিবর্তনের সমূহ সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি জনগণ ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে লেবার পার্টির কাছে আত্মসমর্পণ না করতে বলেছেন। বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ঋষি সুনাক বলেন, লেবার পার্টির বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতার কথা বলা হলেও নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে তিনি একদম হাল ছেড়ে দেননি।

২০১০ সাল থেকে টানা তিনবার ক্ষমতায় আছে ঋষি সুনাকের নেতৃত্বাধীন কনজারভেটিভ পার্টি। আর মে মাসে অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ভূমিধস বিজয়ের পর ফুরফুরে মেজাজে থাকা আত্মবিশ্বাসী লেবার পার্টি জাতীয় নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে বেশ আশাবাদী।

অন্যদিকে নির্বাচনী জনমত জরিপগুলোতেও এগিয়ে লেবার পার্টি। সবশেষ জনমত জরিপে ৪০ পয়েন্ট নিয়ে প্রথম অবস্থানে রয়েছে লেবার পার্টি। লেবার পার্টি থেকে ১৯ পয়েন্ট কম, অর্থাৎ ২১ পয়েন্টে নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে বর্তমান ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টি। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি ভালো ফলাফল করলেও নির্বাচনী জরিপে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে উঠে এসেছে রিফর্ম ইউকে।

অন্যদিকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার এই জয়জয়কারের যুগে এক এআই প্রার্থীও কিনা এমপি হিসেবে লড়বেন নির্বাচনে। আর নির্বাচনে জিতলে তিনিই বিশ্বের প্রথম ‘এআই আইনপ্রণেতা’ হবেন বলে দাবি করা হচ্ছে। যুক্তরাজ্যে এবারের সাধারণ নির্বাচনে সংসদ-সদস্য হওয়ার জন্য লড়তে চলা কয়েকশ প্রার্থীর মধ্যে একজন হলেন স্টিভ এন্ডাকট। তার প্রচারণার ধরন অন্যদের থেকে একেবারেই আলাদা। তিনি নির্বাচনি প্রচারাভিযানের লিফলেটে নিজের মুখচ্ছবির পরিবর্তে ব্যবহার করছেন এআই তৈরি করা একটি অবতার।

৫৯ বছর বয়সি এ ব্যবসায়ী বলেছন, আমরা একটি দল গঠন করছি। এ নির্বাচনের পরে আমরা সারা দেশে আরও এআই প্রার্থী নিয়োগ করব। আমরা বড় এবং গণতান্ত্রিক কিছু ব্লক তৈরিতে এটিকে উদ্বোধন হিসাবে দেখছি।

তবে এআই স্টিভ সম্পর্কে ব্রিটিশ নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, নির্বাচনে জিতলে এন্ডাকটই সংসদ সদস্য হবেন, তার এআই সংস্করণ নয়। অবশ্য এআই স্টিভের নির্বাচনে জেতার এখন পর্যন্ত খুব একটা সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। স্থানীয় বেশিরভাগ ভোটারই এআই প্রার্থীকে ভোট দিতে অনিচ্ছুক বলে মনে হয়েছে।

নির্বাচনী প্রচারণায় লেবার পার্টির নেতা স্যার কিয়ার স্টারমার বলেছেন, ক্ষমতায় গেলে অর্থনীতি পুনর্গঠন, স্বাস্থ্যসেবাকে গতিশীল করা, জনগণের জীবনযাত্রার ব্যয় কমানো, স্কুলগুলোতে আরও শিক্ষক নিয়োগসহ অবৈধ অভিবাসীদের রুয়ান্ডা না পাঠিয়ে নিজ নিজ দেশে পাঠাবেন। স্টারমার কনজারভেটিভ পার্টির টানা ১৪ বছরের ‘বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি’ থেকে দেশকে পুনর্গঠনের জন্য ৪ জুলাই লেবার পার্টিকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

নির্বাচন ঘোষণার পর থেকে অংশগ্রহণকারী সব রাজনৈতিক দল ও তাদের মনোনীত প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সভা–সমাবেশ, লিফলেট বিতরণের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নির্বাচনী প্রচার–প্রচারণা চালিয়েছেন। রাজনৈতিক দলগুলোর শীর্ষ নেতৃত্ব বিভিন্ন গণমাধ্যমের নির্বাচনী বিতর্কে অংশ নিয়ে মুখোমুখিও হয়েছেন নানা প্রশ্নের।

গত ২৭ জুন ডেইলি সানের এক বিতর্কে অংশ নিয়ে লেবার নেতা স্যার কিয়ার স্টারমার অবৈধ অভিবাসন বিষয়ে প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে অযাচিতভাবে বাংলাদেশের নাম উচ্চারণ করে কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েন। পরবর্তীকালে লেবার পার্টির ব্যাখ্যায়ও প্রশমিত হয়নি বাংলাদেশি কমিউনিটির ক্ষোভ। পরে অবশ্য যুক্তরাজ্যের একটি বাংলা গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে স্টারমার বাংলাদেশি কমিউনিটিকে আঘাত করা তার উদ্দেশ্য ছিল না এবং এই ঘটনায় তিনি অনুতপ্ত বলে জানান।

উল্লেখ্য, ৯ নারীসহ মোট ৩৪ জন ব্রিটিশ বাংলাদেশি যুক্তরাজ্যের জাতীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে বর্তমান এমপি রুশনারা আলী, রুপা হক, টিউলিপ সিদ্দিক, আপসানা বেগমসহ লেবার পার্টি মনোনীত প্রার্থী রয়েছেন আটজন। তাদের প্রত্যেকের জয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। লেবার পার্টি সরকার গঠন করলে প্রথমবার মন্ত্রিসভায়ও স্থান পেতে পারেন কোনো কোনো ব্রিটিশ বাংলাদেশি এমপি।

এদিকে যুক্তরাজ্যের প্রধান দলগুলো ৪ জুলাই সাধারণ নির্বাচনের আগে তাদের প্রচারণার প্রতিশ্রুতি ঘোষণা করছে। কিন্তু দেশটির জনগণের কাছে এবারে প্রশ্ন উঠেছে আসলেই কাকে ভোট দেবেন তারা? অন্যদিকে মনোলোভা পসার সাজিয়ে ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখে চলেছে যুক্তরাজ্যের রাজনৈতিক দলগুলো। বিবিসি এ নিয়ে একটি বিশেষ প্রতিবেদনে নির্বাচনে অংশ নেওয়া দলগুলোকে নিয়ে ছোটখাটো একটি গবেষণাও করে ফেলেছে। আর সেই আলোকে দলগুলোর ইশতেহার নিয়েও রয়েছে নানা আকর্ষণীয় তথ্য। রাজনৈতিক দলগুলো মূলত ভোটারদের স্বার্থরক্ষায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো তুলে ধরেই তাদের প্রচার চালিয়েছে।

ইশতেহার হলো নির্বাচনের আগে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিশ্রুতি যা কিনা ভোটারদের কাছে প্রার্থীরা নির্বাচনে বিজয়ী হলে কি কি করবে তার ব্যাখ্যার এক ফিরিস্তি। আর এবিষয়ে বিবিসির ভিজ্যুয়াল জার্নালিজমের একটি টিম ও লন্ডনে বিবিসির রাজনৈতিক গবেষণা ইউনিট এবং বেলফাস্ট, কার্ডিফ এবং গ্লাসগোতে অবস্থিত গণমাধ্যমটির বিবিসি সাংবাদিকরা গবেষণা চালায়।

ব্যালট বাক্সে ভোটারদের সিদ্ধান্ত কোনদিকে যেতে পারে তার একটি সম্ভাব্যতা যাচাই ও দলগুলোর মূল বিষয়গুলিতে কতটা জনকল্যাণমুখী প্রভাব রয়েছে তা নিয়েই একটা রিপোর্ট প্রকাশ করেছে বিবিসি।

নীতি নির্বাচনের পদ্ধতি
মূলত এটি বিবিসি সাংবাদিকদের তত্ত্বাবধানে একটি সম্পাদকীয় প্রক্রিয়া। ইশতেহারে লিপিবদ্ধ বিষয়গুলো জানতে বিবিসি রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে যোগাযোগ করে তাদের মূল নীতিগুলি চিহ্নিত করেছে।

যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট থেকে গৃহীত বিষয়সমূহ:  
ব্রিটেনের পার্লামেন্টের নীতি অনুযায়ী ইশতেহারে দেওয়া সব বিষয় নিয়েই বাস্তবে দলগুলো কাজ করতে পারবে না তথাপি তারা জেনারেল ইলেকশনকে সামনে রেখে এসব বিষয়ে প্রচারণা চালিয়ে থাকে। উদাহরণ স্বরূপ, "স্বাস্থ্য" খাতের বিষয়সমূহ উত্তর আয়ারল্যান্ড, স্কটল্যান্ড এবং ওয়েলসের জন্য অধিক প্রযোজ্য। তা স্বত্বেও জেনারেল ইলেকশনের জন্য নির্বাচনে অংশ নেওয়া দলগুলো দলগুলো স্থানীয়ভাবে এ বিষয়ে মনকাড়া প্রচারণা চালায়।

আর এ কারণেই নির্দেশনা অনুযায়ী এমন বিষয়গুলোকে তারা হাইলাইট করে  ওয়েস্টমিনস্টারে পাস করা হলেও এসব নীতি সেই দেশে আইন হয়ে উঠতে পারে না। বাকিংহাম প্যালেসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে রাজা চার্লস তার সকল অনুষ্ঠান পিছিয়ে দিয়েছেন নির্বাচন ঘিরে যাতে করে জনসাধারণের মনোযোগ নির্বাচন থেকে সরে না যায়।

২০১৯ সালের নির্বাচনে একই দলের পক্ষ থেকে নির্বাচনে অংশ নিয়ে বরিস জনসন জয়লাভ করলেও পরবর্তীতে ব্রেক্সিট ইস্যু ও কোভিড পেন্ডামিকের নানা বিতর্কে জড়িয়ে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হোন। তার পরবর্তী উত্তরসূরী লিজ ট্রাসও খুব একটা সুবিধা করতে না পেরে মাত্র ৪৯ দিনের মাথায় প্রধানমন্ত্রীত্ব ছেড়ে দিয়েছিলেন মিনি বাজেট প্রণয়নের জন্য।
নির্বাচন প্রসঙ্গে শেফিল্ড ইউনিভার্সিটির রাজনীতির অধ্যাপক ম্যাথিউ ফ্লিন্ডার্স বলেছেন, ‘নির্বাচনে প্রার্থী বৃদ্ধির অর্থ, পরবর্তী সরকারের পার্লামেন্টে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকার সম্ভবনা কম এবং নির্বাচনের মধ্যবর্তী সমযে ঘন ঘন রাজনৈতিক পরিবর্তন দেখতে পাবে।


যুক্তরাজ্য নির্বাচন   ঋষি সুনাক   স্টারমার  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

স্বজনের কফিন সামনে রেখেই বড় পর্দায় খেলা উপভোগ পরিবারের সদস্যদের

প্রকাশ: ০৮:৫৮ পিএম, ০৩ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

যান্ত্রিক সভ্যতার এই বিশ্বে প্রতিনিয়ত ঘটে চলেছে নানা বিচিত্র ঘটনা। আর এসব ঘটনা প্রতিনিয়ত  কখনও জন্ম দিচ্ছে আলোচনা আবার কখনও সমালোচনার। আবার বিশ্বের বর্তমান সময়টাকে অনেক বিশ্লেষক আধুনিকতার শীর্ষে অবস্থান করছে বলেও তাদের মত প্রকাশ করে থাকেন। কিন্তু চলমান অস্থির এই সময়টাতে মানুষের মধ্য থেকে মানবতাও অনেকটাই হয়ে গেছে উধাও। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে আপন স্বজনদের মৃত্যুর খবরেও অনেকে বিচলিত হন না। আবার এমনও ঘটনা ঘটছে যা কারো কারো অস্বাভাবিক মনে হলেও কারো কারো কাছে সেটাই স্বাভাবিক।

বিশ্বজুড়ে ফুটবল এক উন্মাদনার নাম। আর এই উন্মাদনাকে কেন্দ্র করে দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোতে প্রায় সময়ই ঘটে বিচিত্র রকমের সব কাণ্ড। ঠিক এমনই এক অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটল চিলিতে।

দেশটির একটি পরিবার তাদের সদ্য মৃত স্বজনের শেষকৃত্যানুষ্ঠান থামিয়ে খেলা উপভোগে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। আর এই ঘটনার একটি ভিডিও ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এ তথ্য জানায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ইতোমধ্যে এই অদ্ভুত কাণ্ডের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা গেছে, মৃত স্বজনের কফিনটি পাশে রেখেই পরিবারটি প্রজেক্টরের সাহায্যে একটি বড় পর্দায় চিলি বনাম পেরুর মধ্যে অনুষ্ঠিত কোপা আমেরিকার একটি খেলা দেখছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে ভিডিওটি শেয়ার করেন টম ভ্যালেন্টিনো নামে এক ইনফ্লুয়েন্সার। ভিডিওটির ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, ‘কোপা আমেরিকায় চিলি বনাম পেরুর ম্যাচের সময় বড় পর্দায় খেলা দেখার জন্য পরিবারটি একটি অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় বিরতি দিয়েছিল। এমনকি সৌভাগ্যের জন্য কফিনটিকে তাঁরা খেলোয়াড়দের জার্সি দিয়ে সাজিয়েছিল।’
ভিডিওতে দেখা যায়, কফিনটিকে স্বজনরা ফুল আর ফুটবল খেলোয়াড়দের জার্সি দিয়ে সজ্জিত করে ও কফিনটির কাছেই প্রার্থনার জন্য নির্ধারিত স্থানে একটি পোস্টার নিয়ে হাজির হন। আর তাতে লিখা—‘আংকেল ফেনা, আপনি আমাদের যে আনন্দময় মুহূর্ত দিয়েছেন তার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আমরা আপনাকে এবং আপনার কন্ডোরিয়ান পরিবারকে সব সময় মনে রাখব।’

ইতিমধ্যে গত ২৩ জুন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা ভিডিওটি বর্তমানে ব্যাপক মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।


ফুটবল   আন্তর্জাতিক  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

মার্কিন সুপ্রিম কোর্টের রুলিং, ট্রাম্পের আংশিক দায়মুক্তি ও প্রেসিডেন্টদের ক্ষমতার রুপান্তর

প্রকাশ: ০৮:৩৪ পিএম, ০৩ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্টগণ ফৌজদারি অপরাধের ক্ষেত্রে কিছু ক্ষেত্রে অব্যাহতি লাভের সুযোগ পেতে পারেন এ মর্মে সদ্য ঘোষিত দেশটির সুপ্রিম কোর্টের বিভক্ত রায়টি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকারকে "পরিবর্তন" করতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এমনকি এমন সিদ্ধান্তের ফলে দেশের আইনের শাসন ব্যবস্থা নিয়েও উঠতে পারে প্রশ্ন।

সোমবার, মার্কিন শীর্ষ আদালত সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অপরাধের বিষয়ে জানান, তিনি সেসময় প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনের ফলে সাংবিধানিক ক্ষমতাবলে ফৌজদারি অপরাধ থেকে মুক্ত ছিলেন। এদিকে ট্রাম্প তার শাসনামলের শেষ দিনগুলিতে বিতর্কিত নানা আচরণের জন্য ফৌজদারি অভিযোগের মুখোমুখি হয়েছেন। বিশেষ করে ২০২০ সালের নির্বাচনে তার নির্বাচনী ফলাফল উল্টে দেওয়ার মত গুরুতর চেষ্টার অভিযোগও আনা হয়েছে তার বিরুদ্ধে।

আদালত ট্রাম্পকে গতকালকের রায়ের মধ্যদিয়ে আংশিক বিজয় এনে দিয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকগণ। রায়ে বলা হয়, মার্কিন প্রেসিডেন্টগণ সরকারি দায়িত্বে থাকাকালীন সময়ে যদি কোনো পদক্ষেপ নেয় সেটার বিচার করা যাবে না।

আর এদিকে সোমবারের রায় ঘোষণার ফলে ট্রাম্পের অন্য দুটি ফৌজদারি মামলা বিলম্বিত হবার সম্ভাবনা রয়েছে। জর্জটাউন ইউনিভার্সিটির আইনের অধ্যাপক ডেভিড সুপার এ প্রসঙ্গে বলেন, বিষয়টি তাৎক্ষণিক প্রভাবের বাইরে হলেও, এই সিদ্ধান্ত প্রেসিডেন্টের ক্ষমতার ওপর "উল্লেখযোগ্য" প্রভাব ফেলবে।

সুপার আল জাজিরাকে বলেন, “এটি মৌলিক ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। এগুলি অবশ্যই এমন বিশেষ শক্তি যা গণতান্ত্রিক দেশগুলোর প্রেসিডেন্টদের চেয়ে স্বৈরশাসকদের কাছে বেশি সুপরিচিত।”

এর আগে সুপ্রিম কোর্টের ছয়জন রক্ষণশীল বিচারপতি সোমবার এ রায় অনুমোদন করে তাদের মত প্রকাশ করেন। পক্ষান্তরে তিনজন বিচারপতি এই রায়ের বিরুদ্ধে তাদের মত জানান।

রুলিং
সংখ্যাগরিষ্ঠদের যুক্তি ছিল সরকারী পদক্ষেপগুলোকে যদি আইনি প্রতিক্রিয়া থেকে রক্ষা না করা হয় তবে একজন প্রেসিডেন্ট অফিস ছেড়ে যাওয়ার পরে রাজনৈতিক বিরোধীদের কাছ থেকে প্রতিশোধের মুখোমুখি হতে পারেন। এ প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি জন রবার্টস ব্যাখ্যা করেছেন যে একজন প্রেসিডেন্টের অনাক্রম্যতার সীমা রয়েছে।

রায়ে রবার্টস লিখেছেন, “প্রেসিডেন্ট তার অনানুষ্ঠানিক কাজের জন্য কোনো অনাক্রম্যতা ভোগ করেন না এবং রাষ্ট্রপতি যা করেন তা সরকারি নয়।”

তিনি লিখেন, “একজন প্রেসিডেন্ট আইনের উর্ধ্বে নন। তবে কংগ্রেস সংবিধানের অধীনে নির্বাহী শাখার দায়িত্ব পালনের সময় একজন প্রেসিডেন্টের আচরণের ওপর ভিত্তি করে তাকে অপরাধী করতে পারে না।”

অন্যদিকে ফেডারেল প্রসিকিউটররা তাদের যুক্তিতে দেখিয়েছিলেন যে, ২০২০ সালে ট্রাম্প গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জয়লাভের বিষয়টিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে বিচার বিভাগের কাছে ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করেছিলেন। প্রসিকিউটরদের ভাষ্য, এমনকি ট্রাম্প প্রতারণামূলক নির্বাচনী অপরাধ তদন্ত পরিচালনার জন্য বিচার বিভাগের ক্ষমতা ও কর্তৃত্বকে ব্যবহার করেছেন।

‘রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীকে হত্যা নাকি দায়মুক্তি?

তবে সোমবারের রায় ট্রাম্পের ফৌজদারি মামলাকর ওপর কেমন প্রভাব ফেলবে এ বিষয়ে নিম্ন আদালত সিদ্ধান্ত নিবে। পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও দর্শনের অধ্যাপক ক্লেয়ার ফিঙ্কেলস্টেইন বলেন, এমন সিদ্ধান্তের ফলে ভবিষ্যতে এটি রাষ্ট্রপতিদের দায়মুক্তির সাথে কাজ করার অনুমতি দিতে পারে।

তিনি বলেন, “এই রায়ের দীর্ঘমেয়াদী তাৎপর্যকে এ মুহুর্তেই অবমূল্যায়ন করা উচিত নয়।” ফিঙ্কেলস্টেইন আল জাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসব জানান।

তিনি আরো বলেন, "এ রায়ের ফলে যদি ডোনাল্ড ট্রাম্প যদি আবারও প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন, তবে তিনি তার অফিসিয়াল ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারেন। বিশেষ করে আইনের অবমাননা করে নিজেকে ফৌজদারি দায় থেকে রক্ষা করতে ন্যায়বিচারকে বিকৃতের মধ্যদিয়ে আইন অমান্যের সম্ভাবনা রয়েছে।"

রাজনৈতিক ইতিহাসবিদ এবং জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ম্যাট ডালেকও বলেন, আদালতের সিদ্ধান্ত "ভয়ঙ্কর"। তিনি আল জাজিরাকে বলেন, "ক্ষমতার অপব্যবহার থেকে রক্ষার জন্য এই রায়টি সাংবিধানিক ক্ষমতার ওপর একটি আক্রমণ।"

ট্রাম্পের আগে কোনো সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্টকে এমন অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়নি। অথচ সাবেক এই প্রেসিডেন্ট চারটি ফৌজদারি অভিযোগের মুখোমুখি হয়েছেন। আর যেগুলোর মধ্যে দুটি নির্বাচনী নাশকতার সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত। চলতি বছরের শুরুর দিকে নিউইয়র্কের একটি আদালত ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে একজন পর্ন তারকাকে গোপনে অর্থ প্রদানের মতো ভয়ংকর ঘটনায় অভিযুক্ত করে।

অতীতে সাবেক প্রেসিডেন্টদের নানা কেলেঙ্কারি
ট্রাম্প অবশ্য প্রথম প্রেসিডেন্ট নন যিনি রাষ্ট্রপ্রধান হিসাবে আংশিক দায়মুক্তি পেয়েছেন। এর আগেও রিচার্ড নিক্সন ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারির অভিযোগের মুখোমুখি হতে পারতেন- যখন তিনি রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের ওপর গুপ্তচরবৃত্তি করার জন্য সরকারী সম্পদের ব্যবহার করে অভিযুক্ত হয়েছিলেন। কিন্তু ১৯৭৪ সালে তার উত্তরসূরি জেরাল্ড ফোর্ড তাকে ক্ষমা করে এ দায় থেকে মুক্তি দিয়েছিলেন।

অন্যদিকে নিক্সনের বিরুদ্ধেও দায়ের করা এক মামলায় তিনি বেসামরিক নাগরিকদের ক্ষতির কারণ হলেও সেই অভিযোগ থেকে দায়মুক্তি লাভ করেন।

রোনাল্ড রিগান প্রশাসনের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিকারাগুয়ায় একটি বিদ্রোহী গোষ্ঠীকে অর্থায়নের জন্য ইরানের কাছে অবৈধভাবে অস্ত্র বিক্রি করেছে এমন অভিযোগের সাথে রিগ্যান প্রশাসনের কর্মকর্তাদের জড়িতের অভিযোগ এলেও প্রেসিডেন্ট কিন্তু রিগান আনুষ্ঠানিকভাবে তা অসীকার করেন ও এবিষয়ে তাকে অভিযোগের সম্মুখীন হতে হয়নি।


মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট   জো বাইডেন   ডোনাল্ড ট্রাম্প  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

গ্রেপ্তার আতঙ্কে পলাতক ধর্মগুরু, কৃষক পরিবারে জন্ম নেওয়া ভোলে বাবার আদি-অন্ত

প্রকাশ: ০৪:৫৩ পিএম, ০৩ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

গতকাল মঙ্গলবার (২ জুলাই) বিকেলে ভারতের হাথরস জেলার রতি ভানপুর গ্রামে ভোলে বাবা নামক এক কথিত ধর্মগুরুর অনুষ্ঠানে অংশ নিতে গিয়ে প্রাণ হারান ১২ জন। কিন্তু এখন জনতার কাছে প্রশ্ন এসেছে এই ভোলে বাবা যিনি নারায়ণ সরকার হরি নামেও পরিচিত তিনি আসলে নিজেকে ধর্মগুরু হিসাবে ঘোষণা দিয়ে এতো বড় দূর্ঘটনার পর কেন পলাতক রয়েছেন। মুলত তাকে কেন্দ্র করেই পুণ্যার্থীরা জড়ো হয়েছিলেন এই ধর্মীয় আচার পালনে।

আজ বুধবার (৩ জুলাই) সকালে স্থানীয় কর্মকর্তারা জানান ঘটনার পর থেকেই তিনি পলাতক রয়েছেন। এদিকে এ ঘটনায় আহত অনেককে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

তবে এক আয়োজনে পদদলিত হয়ে এত মানুষ কীভাবে মারা গেলেন, সেই প্রশ্নের বিষয়ে উত্তর প্রদেশের মুখ্য সচিব মনোজ কুমার সিং বলেন, পদদলিত হয়ে মৃত্যুর ঘটনার পেছনে বড় একটি কারণ অধিক ভিড়। প্রচণ্ড ভিড়ের মধ্যে অনেকেই ভোলে বাবার গাড়ির পেছনে দৌড়াচ্ছিলেন। ভোলে বাবা যে পথে যান, পূজা করার জন্য সেই পথের ধুলোমাটি সংগ্রহ করেন অনেকে। এসব কারণে একের পর এক মানুষ পড়ে গিয়ে পদদলিত হন।’

এ ঘটনায় একটি এফআইআর করা হয়েছে। তাতে উল্লেখ আছে, ধর্মীয় ওই আয়োজনে ৮০ হাজার মানুষ জড়ো হওয়ার অনুমতি থাকলেও জমায়েত হয়েছিল আড়াই লাখের বেশি মানুষের।

প্রচণ্ড ভিড়ের কারণে মানুষ একপর্যায়ে সেখানকার মাঠে পূণ্যার্থীরা ঢোকার চেষ্টা করলে ওই সময় ভোলে বাবার ব্যক্তিগত নিরাপত্তাকর্মীরা বাধা দিলে এতে মানুষের চাপ আরও বেড়ে যায়। পরে ধাক্কাধাক্কিতে অনেকে মাটিতে পড়ে পদদলিত হয়ে মারা যান। আর এমনটাই এফআইআরে।

প্রত্যক্ষদর্শী শকুন্তলা দেবী বলেন, ধর্মীয় আয়োজন শেষ হওয়ার পরপর একসঙ্গে অনেক মানুষ বের হয়ে আসছিলেন। রাস্তায় বেরিয়েই প্রচণ্ড ভিড়ের মধ্য পড়ে পদদলিত হয় মানুষ।

সুরেশ নামের আরও একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আমি এখানে এসেছিলাম। আমার ছোট ভাইয়ের স্ত্রীকে এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি। আরও অনেকেই নিখোঁজ রয়েছেন। মাইকে ঘোষণা দিলেও কোনো লাভ হয়নি।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, ভোলে বাবা প্রায়ই তার ভক্তদের কাছে দাবি করে থাকেন তিনি গোয়েন্দা বিভাগে কাজ করেছেন। তিনি ভক্তদের আরও বলে থাকেন, গোয়েন্দা কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করার সময়ই আধ্যাত্মিকতার দিকে ঝুঁকে পড়েন এবং ১৯৯০ সালে চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন। সাধারণ কৃষক পরিবার থেকে উঠে আসা সুরাজ একসময় উত্তরপ্রদেশ পুলিশের গোয়েন্দা শাখার হেড কনস্টেবল ছিলেন। পরে ১৯৯৯ সালে চাকরি ছেড়ে দিয়ে ধর্মীয় বাণী প্রচারে মন দেন এবং নিজের নাম পরিবর্তন করে নারয়ণ সাকার হরি রাখেন।

পুলিশের চাকরি ছাড়ার পর সুরজ নিজের নামও বদলে ফেলেন। নতুন নাম নারায়ণ সাকার হরি। এই নামেই এখন তিনি পরিচিত। ভক্তরা তাকে এই নামে অথবা ভোলে বাবা বলে সম্বোধন করেন।

ভারতে ছড়িয়ে থাকা হাজার হাজার বাবাজির থেকে কিছু কিছু ক্ষেত্রে আলাদা এই এই ব্য়ক্তি। তার সঙ্গে থাকেন স্ত্রী প্রেমবতী।

ভক্তদের অবশ্য বাবাজি বলেন, তিনি এখনো মাটির ঘরে থাকেন। পায়ে হেঁটে গোটা উত্তরপ্রদেশ ঘুরে প্রচার করেন তিনি।

গণমাধ্য়মের সামনে খুব বেশি আসতে দেখা যায় না এই বাবাজিকে। তবে ২০২২ সালে কোভিডের সময় বিতর্কে জড়িয়ে ছিলেন এই ব্য়ক্তি। উত্তরপ্রদেশের ফারুকাবাদে একটি সৎসঙ্গ সভা করতে চেয়েছিলেন তিনি। তখন কোভিডের ভরা সময়।

সংবাদমাধ্যমটি আরও জানিয়েছে, ভোলে বাবা উত্তরপ্রদেশের ইতাহ বিভাগের বাহাদুর নগরী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন এবং সেখানেই প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করেন। তিনি দাবি করেন, কলেজের গণ্ডি পেরিয়ে গোয়েন্দা বিভাগে কাজ শুরু করেন।

ভোলে বাবার অন্যতম একটি আলাদা দিক হলো তিনি ভারতের অন্যান্য ধর্মগুরুর মতো জাফরান রঙের পোশাক পরেন না। এর বদলে সাদা স্যুট এবং টাই পরেন। আর তার পছন্দের তালিকায় রয়েছে কুর্তা-পায়জামা।

ভক্তদের কাছে কথিত এই ধর্মগুরু বলে থাকেন, তারা তাকে যেসব অর্থ দেয় তার কিছুই নিজের জন্য রাখেন না। এসব জমাকৃত অর্থ ভক্তদের পেছনেই সব ব্যয় করে থাকেন।

তিনি জানিয়েছেন, কাজ করতে করতেই আধ্য়াত্মিক জীবনে ঢুকে পড়েন তিনি। এবং সে কারণেই পুলিশের চাকরি ছেড়ে দেন। বস্তুত, ভক্তদের তিনি বলেন, হরি অর্থাৎ, ঈশ্বরের সন্তান তিনি।

অন্যদিকে হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, যেখানে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল সেখানকার আবহাওয়া প্রচণ্ড গরম ও আদ্র ছিল। এরমধ্যে অস্থায়ী তাঁবু গেড়ে সেখানে অনুষ্ঠানটি করা হয়েছিল। ওই তাঁবুর ভেতর থাকা মানুষ একটা সময় দমবন্ধকর পরিস্থিতিতে পড়েন। এরপর অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর দ্রুত বের হয়ে গেলে অনেকে পদদলিত হয়ে নিহত হন।

এদিকে তার খোঁজে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের একটি দল সিকান্দাররাউয়ের ঘটনাস্থলে গিয়েছে এবং অপর একটি দল গিয়েছে বাবা নারায়ণ হরির মূল আশ্রম ফুলর রাম কুটির চ্যারিটেবল ট্রাস্ট ভবনে। তবে তিনি সেখানে ছিলেন না।

পুলিশ জানায়, ‘আমরা তার সার্বক্ষণিক গতিবিধি সম্পর্কে খোঁজ-খবর রাখছি। বর্তমানে তিনি তিনি মাইনপুরি গ্রামের একটি আশ্রমে অবস্থান করছেন। এই আশ্রমটির সিকান্দাররাউ থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।’

উল্লেখ্য গত মঙ্গলবার সিকান্দাররাউয়ের ফুলরাই গ্রামে বাবা নারায়ণ হরির ‘সৎসঙ্গ’ বা ধর্মীয় সভা ছিল। লক্ষাধিক ভক্ত তার বাণী শুনতে সেই সভায় উপস্থিত হয়েছিলেন। সভা শেষে লোকজন বেরিয়ে যাওয়ার সময় পদদলিত হয়ে নিহত হন অন্তত ১১৬ জন।

এ ঘটনায় ইতোমধ্যে সভার আয়োজক সংস্থা মানব মঙ্গল সদ্ভাবনা অনুষ্ঠানের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করেছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। ঘটনার তদন্তে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটিও গঠন করা হয়েছে।


ধর্মগুরু   পলাতক   ধর্মীয় আচার   পুণ্যার্থীর মৃত্যু  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন