ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

রাত পোহালেই ভোট, সুনাক নাকি স্টারমার লন্ডনের মসনদে বসবে কে?

প্রকাশ: ১০:০০ পিএম, ০৩ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

বর্তমানে নানা সমস্যায় জর্জরিত যুক্তরাজ্যের কাণ্ডারি কে ধরতে যাচ্ছেন সে বিষয়টি হতে চলেছে আগামীকাল বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনের মধ্যদিয়ে। এদিন ব্যালটের মাধ্যমে ব্রিটেনের জনগণ বেছে নিবেন কে হবেন পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী। ঋষি সুনাক নাকি কিয়ার স্টারমার এই আবর্তেই ঘুরপাক খাচ্ছে ভোটের মাঠ। দেড় মাসের নির্বাচনী প্রচারণা শেষে দেশজুড়ে বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত একটানা ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। আর এই নির্বাচনে কনজারভেটিভ পার্টি, লেবার পার্টি, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি, গ্রিন পার্টি, রিফর্ম পার্টি, স্কটিশ ন্যাশনালিস্ট পার্টিসহ ছোট–বড় অন্তত ৯৮টি রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করতে চলেছে।

তবে এবারের নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন রেকর্ড সংখ্যক প্রার্থীও। ইংল্যান্ড, ওয়েলস, স্কটল্যান্ড এবং উত্তর আয়ারল্যান্ডজুড়ে ৬৫০টি নির্বাচনী এলাকায় ৪ হাজার ৫০০ এরও বেশি প্রার্থী লড়াই করবেন। অথচ গত নির্বাচনে সবদল মিলিয়ে ছিল ৩৩২জন প্রার্থী। ফলে দেখা যাচ্ছে, ২০১৯ সালের তুলনায় আগামী ৪ জুলাইয়ের নির্বাচনে ৩৫.৭ শতাংশ প্রার্থী বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রাথমিকভাবে যুক্তরাজ্যের ডানপন্থী রাজনৈতিক দল রিফর্ম ইউকের প্রার্থী সংখ্যাও বেড়েছে বহুগুণ।

এদিকে জনমত জরিপে এখনও এগিয়ে রয়েছে লেবার পার্টি। হাউস অব কমন্সের ৬৫০টি আসনের বিপরীতে রাজনৈতিক দলগুলোর মনোনীত, স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ এই নির্বাচনে রেকর্ডসংখ্যক ৪ হাজার ৫১৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

২০১৯ সালে রিফর্ম ইউকে দলের নেতা নাইজেল ফারাজ বরিস জনসনের রক্ষণশীলদের জন্য ব্রেক্সিট (ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে যাবার প্রক্রিয়া) সুরক্ষিত করতে কৌশলগত সিদ্ধান্ত হিসেবে ৩০০ টিরও বেশি আসনে প্রার্থী না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তবে ফারাজ এই নির্বাচনে কনজারভেটিভ এবং ইউনিয়নিস্ট পার্টি সঙ্গে অনুরূপ চুক্তি বাতিল করেছেন। অন্যদিকে গ্রিন পার্টি থেকেও পূর্বের তুলনায় আরো বেশি প্রার্থী নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করতে যাচ্ছে। গত নির্বাচনের চেয়ে ১৩১ জন বেশি প্রার্থীকে নির্বাচনে দাঁড়ানোর সুযোগ দিয়েছে দলটি।

এদিকে জর্জ গ্যালোওয়ের নেতৃত্বে ব্রিটেনের ওয়ার্কার্স পার্টিও ১৫২ জন প্রার্থী নিয়ে প্রথমবারের মতো নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। এ ছাড়া স্বতন্ত্র ও ছোট দলের প্রার্থীর সংখ্যাও ব্যাপকভাবে বেড়েছে। মোট মিলিয়ে এবারের সাধারণ নির্বাচনে প্রার্থী সংখ্যা (৪৫১৫জন) ২০১০ সালের নির্বাচনের (৪১৫০ জন) প্রার্থীর রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে।

এবারের নির্বাচনে পার্লামেন্ট প্রার্থী হিসেবে বেশ কয়েকজন বিশিষ্ট ব্রিটিশ ফিলিস্তিনিও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে জানা গেছে। মূলত গাজায় চলমান যুদ্ধ, ইসরায়েলের প্রতি লেবার ও রক্ষণশীলদের সমর্থন তাদের নির্বাচনে দাঁড়ানোর প্রধান কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

বর্তমান সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার ছয় মাস আগে গত ২২ মে অনেকটা আকস্মিকভাবেই আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। যদিও ২ মে অনুষ্ঠিত স্থানীয় নির্বাচনের পর লেবার পার্টি জাতীয় নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছিল। নির্বাচন ঘিরে প্রধান দলগুলো জনমত নিজেদের দিকে টানতে চলমান সমস্যার সমাধানে ও সুসংহত যুক্তরাজ্য গড়ে তুলতে নির্বাচনী ইশতেহারে তুলে ধরেছে নানা প্রতিশ্রুতি।

ব্রেক্সিট–পরবর্তী সময় থেকে যুক্তরাজ্যের ভঙ্গুর অর্থনীতি, জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি, অভিবাসন সমস্যাসহ সাম্প্রতিক সময়ে অপরাধের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় দেশটির জনগণ বেশ বিরক্ত। তা ছাড়া টানা ১৪ বছর ক্ষমতায় থাকা কনজারভেটিভ পার্টির নেতৃত্বের প্রতিও আস্থা রাখতে পারছে না সাধারণ মানুষ।

এমন বাস্তবতায় পরিবর্তনের সমূহ সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি জনগণ ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে লেবার পার্টির কাছে আত্মসমর্পণ না করতে বলেছেন। বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ঋষি সুনাক বলেন, লেবার পার্টির বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতার কথা বলা হলেও নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে তিনি একদম হাল ছেড়ে দেননি।

২০১০ সাল থেকে টানা তিনবার ক্ষমতায় আছে ঋষি সুনাকের নেতৃত্বাধীন কনজারভেটিভ পার্টি। আর মে মাসে অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ভূমিধস বিজয়ের পর ফুরফুরে মেজাজে থাকা আত্মবিশ্বাসী লেবার পার্টি জাতীয় নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে বেশ আশাবাদী।

অন্যদিকে নির্বাচনী জনমত জরিপগুলোতেও এগিয়ে লেবার পার্টি। সবশেষ জনমত জরিপে ৪০ পয়েন্ট নিয়ে প্রথম অবস্থানে রয়েছে লেবার পার্টি। লেবার পার্টি থেকে ১৯ পয়েন্ট কম, অর্থাৎ ২১ পয়েন্টে নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে বর্তমান ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টি। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি ভালো ফলাফল করলেও নির্বাচনী জরিপে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে উঠে এসেছে রিফর্ম ইউকে।

অন্যদিকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার এই জয়জয়কারের যুগে এক এআই প্রার্থীও কিনা এমপি হিসেবে লড়বেন নির্বাচনে। আর নির্বাচনে জিতলে তিনিই বিশ্বের প্রথম ‘এআই আইনপ্রণেতা’ হবেন বলে দাবি করা হচ্ছে। যুক্তরাজ্যে এবারের সাধারণ নির্বাচনে সংসদ-সদস্য হওয়ার জন্য লড়তে চলা কয়েকশ প্রার্থীর মধ্যে একজন হলেন স্টিভ এন্ডাকট। তার প্রচারণার ধরন অন্যদের থেকে একেবারেই আলাদা। তিনি নির্বাচনি প্রচারাভিযানের লিফলেটে নিজের মুখচ্ছবির পরিবর্তে ব্যবহার করছেন এআই তৈরি করা একটি অবতার।

৫৯ বছর বয়সি এ ব্যবসায়ী বলেছন, আমরা একটি দল গঠন করছি। এ নির্বাচনের পরে আমরা সারা দেশে আরও এআই প্রার্থী নিয়োগ করব। আমরা বড় এবং গণতান্ত্রিক কিছু ব্লক তৈরিতে এটিকে উদ্বোধন হিসাবে দেখছি।

তবে এআই স্টিভ সম্পর্কে ব্রিটিশ নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, নির্বাচনে জিতলে এন্ডাকটই সংসদ সদস্য হবেন, তার এআই সংস্করণ নয়। অবশ্য এআই স্টিভের নির্বাচনে জেতার এখন পর্যন্ত খুব একটা সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। স্থানীয় বেশিরভাগ ভোটারই এআই প্রার্থীকে ভোট দিতে অনিচ্ছুক বলে মনে হয়েছে।

নির্বাচনী প্রচারণায় লেবার পার্টির নেতা স্যার কিয়ার স্টারমার বলেছেন, ক্ষমতায় গেলে অর্থনীতি পুনর্গঠন, স্বাস্থ্যসেবাকে গতিশীল করা, জনগণের জীবনযাত্রার ব্যয় কমানো, স্কুলগুলোতে আরও শিক্ষক নিয়োগসহ অবৈধ অভিবাসীদের রুয়ান্ডা না পাঠিয়ে নিজ নিজ দেশে পাঠাবেন। স্টারমার কনজারভেটিভ পার্টির টানা ১৪ বছরের ‘বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি’ থেকে দেশকে পুনর্গঠনের জন্য ৪ জুলাই লেবার পার্টিকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

নির্বাচন ঘোষণার পর থেকে অংশগ্রহণকারী সব রাজনৈতিক দল ও তাদের মনোনীত প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সভা–সমাবেশ, লিফলেট বিতরণের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নির্বাচনী প্রচার–প্রচারণা চালিয়েছেন। রাজনৈতিক দলগুলোর শীর্ষ নেতৃত্ব বিভিন্ন গণমাধ্যমের নির্বাচনী বিতর্কে অংশ নিয়ে মুখোমুখিও হয়েছেন নানা প্রশ্নের।

গত ২৭ জুন ডেইলি সানের এক বিতর্কে অংশ নিয়ে লেবার নেতা স্যার কিয়ার স্টারমার অবৈধ অভিবাসন বিষয়ে প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে অযাচিতভাবে বাংলাদেশের নাম উচ্চারণ করে কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েন। পরবর্তীকালে লেবার পার্টির ব্যাখ্যায়ও প্রশমিত হয়নি বাংলাদেশি কমিউনিটির ক্ষোভ। পরে অবশ্য যুক্তরাজ্যের একটি বাংলা গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে স্টারমার বাংলাদেশি কমিউনিটিকে আঘাত করা তার উদ্দেশ্য ছিল না এবং এই ঘটনায় তিনি অনুতপ্ত বলে জানান।

উল্লেখ্য, ৯ নারীসহ মোট ৩৪ জন ব্রিটিশ বাংলাদেশি যুক্তরাজ্যের জাতীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে বর্তমান এমপি রুশনারা আলী, রুপা হক, টিউলিপ সিদ্দিক, আপসানা বেগমসহ লেবার পার্টি মনোনীত প্রার্থী রয়েছেন আটজন। তাদের প্রত্যেকের জয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। লেবার পার্টি সরকার গঠন করলে প্রথমবার মন্ত্রিসভায়ও স্থান পেতে পারেন কোনো কোনো ব্রিটিশ বাংলাদেশি এমপি।

এদিকে যুক্তরাজ্যের প্রধান দলগুলো ৪ জুলাই সাধারণ নির্বাচনের আগে তাদের প্রচারণার প্রতিশ্রুতি ঘোষণা করছে। কিন্তু দেশটির জনগণের কাছে এবারে প্রশ্ন উঠেছে আসলেই কাকে ভোট দেবেন তারা? অন্যদিকে মনোলোভা পসার সাজিয়ে ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখে চলেছে যুক্তরাজ্যের রাজনৈতিক দলগুলো। বিবিসি এ নিয়ে একটি বিশেষ প্রতিবেদনে নির্বাচনে অংশ নেওয়া দলগুলোকে নিয়ে ছোটখাটো একটি গবেষণাও করে ফেলেছে। আর সেই আলোকে দলগুলোর ইশতেহার নিয়েও রয়েছে নানা আকর্ষণীয় তথ্য। রাজনৈতিক দলগুলো মূলত ভোটারদের স্বার্থরক্ষায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো তুলে ধরেই তাদের প্রচার চালিয়েছে।

ইশতেহার হলো নির্বাচনের আগে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিশ্রুতি যা কিনা ভোটারদের কাছে প্রার্থীরা নির্বাচনে বিজয়ী হলে কি কি করবে তার ব্যাখ্যার এক ফিরিস্তি। আর এবিষয়ে বিবিসির ভিজ্যুয়াল জার্নালিজমের একটি টিম ও লন্ডনে বিবিসির রাজনৈতিক গবেষণা ইউনিট এবং বেলফাস্ট, কার্ডিফ এবং গ্লাসগোতে অবস্থিত গণমাধ্যমটির বিবিসি সাংবাদিকরা গবেষণা চালায়।

ব্যালট বাক্সে ভোটারদের সিদ্ধান্ত কোনদিকে যেতে পারে তার একটি সম্ভাব্যতা যাচাই ও দলগুলোর মূল বিষয়গুলিতে কতটা জনকল্যাণমুখী প্রভাব রয়েছে তা নিয়েই একটা রিপোর্ট প্রকাশ করেছে বিবিসি।

নীতি নির্বাচনের পদ্ধতি
মূলত এটি বিবিসি সাংবাদিকদের তত্ত্বাবধানে একটি সম্পাদকীয় প্রক্রিয়া। ইশতেহারে লিপিবদ্ধ বিষয়গুলো জানতে বিবিসি রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে যোগাযোগ করে তাদের মূল নীতিগুলি চিহ্নিত করেছে।

যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট থেকে গৃহীত বিষয়সমূহ:  
ব্রিটেনের পার্লামেন্টের নীতি অনুযায়ী ইশতেহারে দেওয়া সব বিষয় নিয়েই বাস্তবে দলগুলো কাজ করতে পারবে না তথাপি তারা জেনারেল ইলেকশনকে সামনে রেখে এসব বিষয়ে প্রচারণা চালিয়ে থাকে। উদাহরণ স্বরূপ, "স্বাস্থ্য" খাতের বিষয়সমূহ উত্তর আয়ারল্যান্ড, স্কটল্যান্ড এবং ওয়েলসের জন্য অধিক প্রযোজ্য। তা স্বত্বেও জেনারেল ইলেকশনের জন্য নির্বাচনে অংশ নেওয়া দলগুলো দলগুলো স্থানীয়ভাবে এ বিষয়ে মনকাড়া প্রচারণা চালায়।

আর এ কারণেই নির্দেশনা অনুযায়ী এমন বিষয়গুলোকে তারা হাইলাইট করে  ওয়েস্টমিনস্টারে পাস করা হলেও এসব নীতি সেই দেশে আইন হয়ে উঠতে পারে না। বাকিংহাম প্যালেসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে রাজা চার্লস তার সকল অনুষ্ঠান পিছিয়ে দিয়েছেন নির্বাচন ঘিরে যাতে করে জনসাধারণের মনোযোগ নির্বাচন থেকে সরে না যায়।

২০১৯ সালের নির্বাচনে একই দলের পক্ষ থেকে নির্বাচনে অংশ নিয়ে বরিস জনসন জয়লাভ করলেও পরবর্তীতে ব্রেক্সিট ইস্যু ও কোভিড পেন্ডামিকের নানা বিতর্কে জড়িয়ে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হোন। তার পরবর্তী উত্তরসূরী লিজ ট্রাসও খুব একটা সুবিধা করতে না পেরে মাত্র ৪৯ দিনের মাথায় প্রধানমন্ত্রীত্ব ছেড়ে দিয়েছিলেন মিনি বাজেট প্রণয়নের জন্য।
নির্বাচন প্রসঙ্গে শেফিল্ড ইউনিভার্সিটির রাজনীতির অধ্যাপক ম্যাথিউ ফ্লিন্ডার্স বলেছেন, ‘নির্বাচনে প্রার্থী বৃদ্ধির অর্থ, পরবর্তী সরকারের পার্লামেন্টে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকার সম্ভবনা কম এবং নির্বাচনের মধ্যবর্তী সমযে ঘন ঘন রাজনৈতিক পরিবর্তন দেখতে পাবে।


যুক্তরাজ্য নির্বাচন   ঋষি সুনাক   স্টারমার  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

যুক্তরাজ্যের যে সাবেক প্রধানমন্ত্রীরা এখনো জীবিত আছেন

প্রকাশ: ০৯:৪২ এএম, ০৬ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

গতকাল বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে কনজারভেটিভ পার্টির চূড়ান্ত পরাজয়ের পর প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক পদত্যাগ করেছেন। ফলে সুনাক এখন সাবেক প্রধানমন্ত্রী। তার সঙ্গে যুক্তরাজ্যে বর্তমানে জীবিত সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল আটজনে।

সুনাক ছাড়াও জীবিত সাত সাবেক প্রধানমন্ত্রী হলেন লিজ ট্রাস, বরিস জনসন, থেরেসা মে, ডেভিড ক্যামেরন, গর্ডন ব্রাউন, স্যার টনি ব্লেয়ার ও স্যার জন মেজর। গত ১৪ বছরে যুক্তরাজ্যে জীবিত সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। ২০০৭ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত গর্ডন ব্রাউনের প্রধানমন্ত্রিত্বকালে জীবিত সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সংখ্যা ছিল মাত্র তিন। তারা হলেন স্যার টনি ব্লেয়ার, স্যার জন মেজর ও মার্গারেট থ্যাচার।

জীবিত সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সংখ্যা বৃদ্ধির দুটি ইঙ্গিত পাওয়া যায়। প্রথমত, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুক্তরাজ্যে সরকারের প্রধানমন্ত্রীরা দ্রুত পদত্যাগ করেছেন। দ্বিতীয়ত, তুলনামূলক কম বয়সী ব্যক্তিরা প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন।

বর্তমানে যুক্তরাজ্যে জীবিত আট সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে তিনজনের বয়স ৬০ বছরের নিচে। ডেভিড ক্যামেরনের বয়স ৫৭, লিজ ট্রাসের ৪৮ এবং ঋষি সুনাকের বয়স ৪৪। এছাড়া, দুইজনের বয়স এখনও ৭০ বছরের কম। তারা হলেন বরিস জনসন (৬০) ও থেরেসা মে (৬৭)।

সত্তরের বেশি বয়সী তিন সাবেক প্রধানমন্ত্রী হলেন টনি ব্লেয়ার (৭১), গর্ডন ব্রাউন (৭৩) ও জন মেজর (৮১)।


যুক্তরাজ্য   প্রধানমন্ত্রী   সাবেক   কনজারভেটিভ পার্টি   নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

একমাত্র ঈশ্বর আদেশ দিলেই প্রার্থিতা প্রত্যাহার করব: বাইডেন

প্রকাশ: ০৯:৩১ এএম, ০৬ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে বিতর্কে হারার পর থেকেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য চাপ বাড়ছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ওপর। তবে বাইডেন জানিয়েছেন, এসব চাপকে তিনি গ্রাহ্য করছেন না এবং একমাত্র সর্বশক্তিমান ঈশ্বর আদেশ দিলেই তিনি প্রার্থিতা প্রত্যাহার করবেন।

শুক্রবার (৫ জুলাই) মার্কিন সংবাদমাধ্যম এবিটি নিউজকে একটিআনস্ক্রিপটেডসাক্ষাৎকার দেন বাইডেন। সেখানে তাকে প্রশ্ন করা হয়-ট্রাম্পের সঙ্গে বিতর্কের পর থেকে তার রাজনৈতিক দল ডেমোক্রেটিক পার্টির বেশ কয়েক জন সদস্য মনেপ্রাণে চাইছেন যে বাইডেন যেন আগামী নভেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দৌড় থেকে নিজের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেন। প্রসঙ্গে তার সিদ্ধান্ত বা প্রতিক্রিয়া কী?

উত্তরে বাইডেন বলেন, “যদি সর্বশক্তিমান ঈশ্বর আমার সামনে এসে আমাকে (প্রার্থিতা প্রত্যাহারের) আদেশ দেন, তাহলে আমি তা করতে পারি।

শুক্রবার (৫ জুলাই) নিজের শহর উইসকনসিনে ডেমোক্রেটিক পার্টির ভোটারদের একটি মিছিল-সমাবেশে যোগ দেন বাইডেন। সে সময়ই কর্মসূচির অবসরে এবিসিকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন তিনি।

সাক্ষাৎকারটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের জন্য বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল। কারণ, সম্পূর্ণ আলোচনা হয়েছে আনস্ক্রিপটেড প্রশ্নভিত্তিক। শুক্রবার এবিসি রেডিওকে যে সাক্ষাৎকার বাইডেনের দিয়েছেন, সেটির কোনো প্রশ্ন আগে থেকে বাইডেনকে সরবরাহ করা হয়নি। 

ট্রাম্পের সঙ্গে বিতর্ক বিপর্যয়ের পর থেকে যে পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন বাইডেন, তাতে এবিসির এই সাক্ষাৎকারটিকে ৮১ বছর বয়সী এই রাজনীতিকের জন্যবড় পরীক্ষাবলে উল্লেখ করেছেন অনেকেই।

এর আগে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের আয়োজনে গত ২৮ জুন প্রথমবারের মতো নির্বাচনী বিতর্ক হয় ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং জো বাইডেনের মধ্যে। বিতর্কে দেশের অর্থনীতি সামলানো, পররাষ্ট্রনীতির রেকর্ড ব্যাপক সংখ্যক অভিবাসী আগমণ ইস্যুতে বাইডেনের তীব্র সমালোচনা করেন ট্রাম্প; কিন্তু স্পষ্ট আত্মবিশ্বাসপূর্ণ যুক্তি দিয়ে সেসব সমালোচনা খণ্ডন করতে অনেকাংশে ব্যর্থ হন বাইডেন। তাকে বেশ ক্লান্তও দেখা যাচ্ছিল সে সময়।

বিতর্কের পর তাৎক্ষণিক এক জরিপে জানা গেছে, বিতর্ক অনুষ্ঠানটি দেখেছেন-এমন দর্শকদের মধ্যে ৬৭ শতাংশেই যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে দেখতে চান।


একমাত্র   ঈশ্বর   আদেশ   প্রার্থীতা   প্রত্যাহার   বাইডেন  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

প্রথম নারী অর্থমন্ত্রী পেল যুক্তরাজ্য

প্রকাশ: ০৮:৫১ এএম, ০৬ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

পার্লামেন্ট নির্বাচনে লেবার পার্টির নিরঙ্কুশ জয়ের পর যুক্তরাজ্যের নতুন অর্থমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ্যাচেল রিভস। দেশটির নতুন মন্ত্রিসভার সদস্য হিসেবে শুক্রবার তাঁর নাম ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার।

এর মধ্য দিয়ে ইতিহাস গড়েছেন ্যাচেল। যুক্তরাজ্যের ইতিহাসে প্রথম নারী অর্থমন্ত্রী হয়েছেন তিনি।

নতুন সরকারে অ্যাঞ্জেলা রায়নারকে উপপ্রধানমন্ত্রী পদে নিয়োগ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। পররাষ্ট্রমন্ত্রী পদে নিয়োগ পেয়েছেন কৃষ্ণাঙ্গ ডেভিড ল্যামি।

যুক্তরাজ্যের নতুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হয়েছেন ইভেত্তে কুপার। জন হ্যালি প্রতিরক্ষামন্ত্রী, ব্রিজেত ফিলিপসন শিক্ষামন্ত্রী, এড মিলিব্যান্ড জ্বালানিমন্ত্রী, শাবানা মাহমুদ বিচারমন্ত্রী, জোনাথন রেনল্ড বাণিজ্যমন্ত্রী, লিজ কেন্ডাল শ্রম কারামন্ত্রী, স্টিভ রিড পরিবেশমন্ত্রী, পিটার কাইলি বিজ্ঞান, উদ্ভাবন প্রযুক্তিবিষয়কমন্ত্রী, লিসা নন্দী সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন।

যুক্তরাজ্যে বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত পার্লামেন্ট নির্বাচনে ৪১২টি আসনে জয় পেয়েছে লেবার পার্টি। কনজারভেটিভ পার্টি পেয়েছে ১২১টি আসন। সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য কোনো দলের প্রয়োজন হয় ৩২৬ আসন। এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যুক্তরাজ্যে টানা ১৪ বছর পর ক্ষমতা থেকে সরে গেল কনজারভেটিভ পার্টি।

এরপর শুক্রবার (৫ জুলাই)  রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে বাকিংহাম প্রাসাদে গিয়ে দেখা করেন কিয়ার স্টারমার। ব্রিটেনের রাষ্ট্রপ্রধান রাজা তৃতীয় চার্লস তাঁকে যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন।


প্রথম   নারী   অর্থমন্ত্রী   যুক্তরাজ্য  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পেলেন বারাক ওবামার বন্ধু ডেভিড ল্যামি

প্রকাশ: ০৮:৪০ এএম, ০৬ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট নির্বাচনে বড় জয় পাওয়ার পর কেয়ার স্টারমার নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের কাজ শুরু করেছেন। শুক্রবার (৫ জুলাই) ডেভিড ল্যামিকে নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ৫১ বছর বয়সী এই কৃষ্ণাঙ্গ লেবার পার্টির নেতা যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার বন্ধু হিসেবে পরিচিত। ডেভিড ল্যামির পূর্বপুরুষ গায়ানার ক্রীতদাস ছিলেন। তার পরিবার থেকেই তিনি যুক্তরাজ্যের নীতিনির্ধারক হয়ে উঠেছেন।

ডেভিড ল্যামি লেবার পার্টির আন্তর্জাতিক বিষয়সংক্রান্ত মুখপাত্র হিসেবে দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে দায়িত্ব পালন করেছেন। এ সময়ে তিনি ৪০ বারেরও বেশি বিদেশ সফর করেছেন।

ল্যামির জন্ম ১৯৭২ সালে লন্ডনে। তার মা-বাবা গায়ানা থেকে যুক্তরাজ্যে অভিবাসী হিসেবে এসেছিলেন। ল্যামি ১২ বছর বয়সে তার বাবাকে হারান, যিনি স্ত্রী ও পাঁচ সন্তানকে ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। ল্যামির বেড়ে ওঠা উত্তর লন্ডনের টটেনহামে, যেখানে তিনি ২০০০ সাল থেকে পার্লামেন্ট সদস্য হিসেবে প্রতিনিধিত্ব করছেন। ২৭ বছর বয়সে তিনি পার্লামেন্টের সবচেয়ে কম বয়সী সদস্য নির্বাচিত হন এবং প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার ও গর্ডন ব্রাউনের মন্ত্রিসভায় দায়িত্ব পালন করেন। 

ডেভিড ল্যামি নব্বইয়ের দশকে প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড ল স্কুলে ভর্তি হন। সেখানে বারাক ওবামার সঙ্গে তার বন্ধুত্ব হয়। তার স্ত্রী নিকোলা গ্রিন ২০০৮ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ওবামার প্রচার-প্রচারণা নিয়ে ছবি আঁকেন।

ডেভিড ল্যামি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সহযোগিতামূলক সম্পর্ক গভীর করার পক্ষে। তিনি রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইউক্রেনকে সমর্থন দিয়ে আসছেন এবং ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে।

সূত্র: দ্য নিউইয়র্ক টাইমস


যুক্তরাজ্য   পার্লামেন্ট   স্টারমার   পররাষ্ট্রমন্ত্রী  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

সাধারণ পরিবার থেকে উঠে আসা স্টারমার হাল ধরলেন যুক্তরাজ্যের

প্রকাশ: ০৮:২৯ এএম, ০৬ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

যুক্তরাজ্যের ইতিহাসে লেবার পার্টির পক্ষ থেকে পঞ্চম ব্যক্তি হিসেবে কিয়ার স্টারমার দলকে বিরোধী দলের আসন থেকে ক্ষমতায় নিলেন। ২০১৯ সালের সাধারণ নির্বাচনে বড় ধরনের ধাক্কা খাওয়া লেবার পার্টি ২০২৪ সালে নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করল। তবে ডাউনিং স্ট্রিটের পথে স্টারমারের যাত্রা যে সহজ ছিল না, তা হার্টলপুল উপনির্বাচনের ফলাফল মনে করিয়ে দেয়।

প্রকৃতপক্ষে দীর্ঘকাল তাঁর জীবন কাজ ছিল একেবারে ভিন্ন ধারায়। বাবা-মায়ের চার সন্তানের একজন কিয়ার স্টারমার। কেন্ট সারের সীমান্তবর্তী অক্সটেড শহরে বড় হয়েছেন তিনি। তাঁর বাবা ছিলেন যন্ত্রাংশ নির্মাতা, মা ছিলেন নার্স। ১৯৭০এর দশকে উচ্চ মূল্যস্ফীতির কালে বেড়ে ওঠার সময়কার চ্যালেঞ্জগুলো নিজেই বলেছেন কিয়ার স্টারমার। এক নির্বাচনী প্রচারে তিনি বলেছিলেন, ‘আপনি যদি শ্রমজীবী ​​হন, আপনি ঋণকে ভয় পাবেন। আমার মাবাবাও ঋণ ভয় পেতেন।

কিয়ার স্টারমার তাঁর ছোটবেলা থেকে অনেক কিছুর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি ফুটবল খেলতে পছন্দ করতেন। তিনি মাঝমাঠেসেন্টার লেফটহিসেবে খেলতেন। ছাড়া তিনি মেধাবী সংগীতশিল্পী ছিলেন। ভায়োলিন বাজানোও শিখেছিলেন।

কিয়ার স্টারমারের মধ্যে বিদ্রোহের প্রবণতা আগে থেকেই ছিল। তিনি তাঁর বন্ধুরা একবার নগদ অর্থ সংগ্রহের জন্য ফ্রান্সের সমুদ্রসৈকতে অবৈধভাবে আইসক্রিম বিক্রি করতে গিয়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়েছিলেন।

কিন্তু সময় তাঁর জীবনে রাজনীতি কই? কিন্তু সব সময় এর একটি সূত্র তাঁর সঙ্গেই ছিল। আর সেটি হলো তাঁর নাম। লেবার পার্টির প্রথম নেতা কিয়ার হার্ডির নাম অনুসারে তাঁর নাম রাখা হয়েছিল। কিয়ার স্টারমার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার আগে বামপন্থী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

এটা শুরু হয়েছিল স্টারমারের স্কুলজীবন থেকে। তখন তিনি লেবার পার্টির তরুণদের শাখাইয়াং সোশ্যালিস্ট’– যোগ দেন। পরিবারের প্রথম সদস্য হিসেবে স্কুলজীবন পার করে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার সৌভাগ্য হয় তাঁর। তিনি প্রথমে লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন নিয়ে পড়াশোনা করেন। পরে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন।

লিডসে পড়ার সময় তিনি আশির দশকেরইন্ডি মিউজিক’– প্রভাবিত হন। তাঁর জীবনী লেখক টম বাল্ডউইন লিখেছেন, স্কুলজীবন থেকে তাঁর প্রিয় পানীয় ছিল বিয়ার সাইডারের মিশ্রণ বা স্নেকবাইট। ছাড়া তিনি তরকারি চিপস পছন্দ করতেন।

স্নাতক শেষ করার পর কিয়ার স্টারমার উত্তর লন্ডনের একটি পতিতালয়ের ওপরে বাসা নিয়ে থাকতেন। আরও গুরুত্বপূর্ণ, তিনি একজন কাজের প্রতি নিষ্ঠাবান (ওয়ার্কহোলিক) হিসেবে খ্যাতি অর্জন করছিলেন, যা তাঁকে সফল একজন খ্যাতিমান মানবাধিকারবিষয়ক আইনজীবী হয়ে উঠতে সাহায্য করে। সময় রাজনীতি তাঁর আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল না। পরবর্তী দুই দশক তিনি আইন পেশায় সবচেয়ে বেশি মনোযোগ দেন। ২০০৮ সালে তিনি পাবলিক প্রসিকিউশনের পরিচালক হন। পদটি ছিল ইংল্যান্ড ওয়েলসের প্রধান কৌঁসুলির। জীবনের পর্বকে জনগণের সেবায় নিজের নিবেদনের দৃষ্টান্ত হিসেবে তুলে ধরেন কিয়ার স্টারমার। সময় সন্ত্রাসী গ্যাংগুলোকে শাস্তির আওতায় আনতে তাঁর ভূমিকার কথা তিনি প্রায়ই বলে থাকেন।

২০১০ থেকে ২০১৫ সালের জোট সরকারের সময় ক্রাউন প্রসিকিউশন সার্ভিসের বাজেট একচতুর্থাংশ কমানো হয়। এতে কিয়ার স্টারমার তাঁর বিভাগের খরচ কমাতে বাধ্য হন। ২০০৯ সালের কেলেঙ্কারির জেরে এমপিদের পার্লামেন্টারি ব্যয় নিয়ে তাঁদের বিচারের মুখোমুখি করাসহ নানা গুরুত্ব সিদ্ধান্ত তাঁর তত্ত্বাবধানে হয়ে থাকে।

আইনি কার্যক্রমে ভূমিকার পুরস্কার হিসেবে ২০১৪ সালে নাইটহুড উপাধি পান কিয়ার স্টারমার। কিন্তু তাঁর নেতৃত্ব কতটা সফল? তাঁর মেয়াদের শেষের দিকে বিবিসিকে দেওয়া একটি সাক্ষাত্কারে স্টারমার স্বীকার করেছিলেন, অসহায় ভুক্তভোগীরা এখনো বিচারব্যবস্থার অবজ্ঞার শিকার হয়ে থাকেন।

 

কিয়ার স্টারমারের বয়স ৫২ বছর হওয়ার পর তাঁর পেশাগত জীবনে পরিবর্তন আসে। তিনি উত্তর লন্ডনে লেবার পার্টির একটি নিরাপদ আসনে মনোনয়ন পান। সেখানে সহজে জয় পান। তিনি সদ্য বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী কনজারভেটিভ পার্টির ঋষি সুনাক একই দিনে সংসদ সদস্য হয়েছিলেন। কিন্তু সময়টা লেবার পার্টির জন্য সুখকর ছিল না। কারণ, তখন কনজারভেটিভরা মাত্রই নির্বাচনে জিতেছিল এবং জেরেমি করবিন লেবার পার্টির নেতা নির্বাচিত হওয়ার পর দলের ভেতরে দ্বন্দ্বের উপক্রম শুরু হয়।

একজনব্যাকবেঞ্চারথেকে লেবার পার্টির নেতৃত্বে এবং এখন ডাউনিং স্ট্রিটে কিয়ার স্টারমারের যাত্রা সম্পর্কে অনেক কিছু বলা লেখা হয়েছে। তবে কিছু বিষয় রয়েছে উল্লেখ করার মতো।

জেরেমি করবিন লেবার পার্টির নেতা হওয়ার পর কিয়ার স্টারমারকে ছায়া অভিবাসন মন্ত্রী বানান। কিন্তু তা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। ব্রেক্সিট গণভোটের পর করবিনকে লেবার পার্টির নেতৃত্ব থেকে সরাতে দলের সামনের সারির একদল নেতা পদত্যাগ করেন। সেই দলে স্টারমারও ছিলেন। সময় তাঁর ছায়া মন্ত্রী হিসেবে এক বছরও হয়নি। কিন্তু তাঁদের ওই চেষ্টা তখন সফল হয়নি। করবিন তখন তাঁর বিপক্ষে অবস্থান নেওয়া নেতাদের সঙ্গে আপসরফা করেন এবং কিয়ার স্টারমার ছায়া ব্রেক্সিট মন্ত্রী পদে ফেরেন।

এরপর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দলে কিয়ার স্টারমারের দায়িত্ব বদলেছে। ২০১৯ সালে বিবিসির ব্রেকফাস্ট অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, জেরেমি করবিন দুর্দান্ত একজন প্রধানমন্ত্রী হবেন। তিনি সময় করবিনকে শতভাগ সমর্থন দিয়ে তাঁর সঙ্গে কাজ করার সাধারণ নির্বাচনে জয়ী হওয়ার কথা বলেন। অন্যরা যখন করবিনের সঙ্গে কাজ করতে অনীহা জানান, তখন তিনি করবিনের সঙ্গে থাকেন। কিন্তু ২০১৯ সালের নির্বাচন লেবার পার্টির জন্য বিপর্যয়কর হয়। এরপর করবিন দলের নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়ালে তাঁর জায়গায় আসেন স্টারমার।

কিয়ার স্টারমার যখন লেবার পার্টির নেতা হন, তখন অনেকেই ভেবেছিলেন কনজারভেটিভ নেতা বরিস জনসন আরও বেশ কিছুদিন ক্ষমতায় থাকবেন। অনেকে স্টারমারকে লেবার পার্টিকে ঘুরে দাঁড়াতে সাহায্য করতে পারেন, এমন নেতা হিসেবে দেখেছিলেন। তখন গুটিকয়েক মানুষই মনে করেছিলেন যে তিনি আবার লেবার পার্টিকে ক্ষমতায় নিতে পারেন।

কিন্তু সেই পরিবর্তন কবে আসবে? জনমত জরিপগুলোয় এর ইঙ্গিত পাওয়া যায়। ২০২০ ২০২১ সালের জনমত জরিপে জনসনের কনজারভেটিভদের পেছনে ছিল লেবার পার্টি। ওই সময় হার্টলপুল উপনির্বাচন হয়েছিল। কিন্তু ওই সময়ের পর করোনা মহামারিতে বরিস জনসনের ডাউনিং স্ট্রিটে অনুষ্ঠান আয়োজনের কেলেঙ্কারির খবর বাইরে আসতেই সব বদলে যায়।

ওই সময় জরিপে দেখা যায়, ২০২১ সালের নভেম্বরের নির্বাচনে কনজারভেটিভদের চেয়ে স্পষ্ট এগিয়ে লেবার। এরপর লিজ ট্রাসের বাজেট ঘোষণার পর থেকে ক্রমেই লেবার পার্টির জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে।

কিয়ার স্টারমারের বয়স এখন ৬১ বছর। তিনি ২০০৭ সালে ভিক্টোরিয়াকে বিয়ে করেন। এই দম্পতির এক ছেলে এক মেয়ে রয়েছে।

(তথ্যসূত্র: বিবিসি)


সাধারণ   পরিবার   স্টারমার   হাল   ধরলেন   যুক্তরাজ্যের  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন