ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

গাজায় ২৪ ঘণ্টায় নিহত আরও ২৮, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩৭,৯৫৩

প্রকাশ: ০৯:৩৫ এএম, ০৪ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বর্বর হামলায় আরও ২৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে করে উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা পৌঁছেছে প্রায় ৩৮ হাজারে। এছাড়া গত বছরের অক্টোবর থেকে চলা এই হামলায় আহত হয়েছেন আরও ৮৭ হাজারের বেশি। সারাদিনই ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বিমান হামলার পাশাপাশি নুসেইরাত শরণার্থী ক্যাম্প ও গাজা সিটিতে স্থল অভিযান চালিয়ে গেছে। খবর আল জাজিরা ও বিবিসির।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বুধবার সন্ধ্যায় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ২৮ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১২৫ জন আহত হয়েছে। এছাড়া আরও বেশ কিছু মানুষ বিধ্বস্ত বাড়িঘরের ধ্বংসস্তুপের নিচে চাপা পড়েছে।

গাজা উপত্যকাজুড়েই গত কয়েকদিন ধরে হামলার মাত্রা বাড়িয়েছে ইসরায়েলি সেনারা। গাজা সিটির দুটি আবাসিক বাড়ি লক্ষ্য করে বুধবার দিনের বেলায় দুটি পৃথক হামলায় আট ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। শুজাইয়া পাড়ায় হামলা অব্যাহত রয়েছে। সেখানে হামলায় চার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং কমপক্ষে ১৭ জন আহত হয়েছেন।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ৩৭ হাজার ৯৫৩ জনের মৃত্যু ঘটেছে। এছাড়া আহত হয়েছে ৮৭ হাজার ২৬৬ জন। এসব হতাহতদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু।

সর্বশেষ বুধবার নিহতদের মধ্যে গাজার খান ইউনিস ছেড়ে আসা উদ্বাস্তু রয়েছে। কথিত নিরাপদ এলাকায় আশ্রয় নেওয়া সত্ত্বেও তাদের ওপর বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। তাতে অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছে। এরমধ্যে শিশুসহ এক পরিবারের ৯ জন রয়েছে।

জাতিসংঘ বলছে, ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী খান ইউনিস শহরের পূর্বাঞ্চল ও রাফাহ শহর খালি করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়ার আনুমানিক আড়াই লাখ মানুষ দুইদিনে শহর দুটি ছেড়েছে। তাদের নিয়ে গাজায় মোট বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা এখন ছাড়িয়েছে ২০ লাখ।


গাজা   মৃত্যু   আহত   ফিলিস্তিনি   ইসরায়েলি বাহিনী  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ভারতে ৬ তলা ভবন ধসে আহত অন্তত ১৫, অনেকে আটকে পড়ার শঙ্কা

প্রকাশ: ১০:৩৩ পিএম, ০৬ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য গুজরাটে ছয়তলা একটি ভবন ধসে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। এছাড়া আরও বেশ কয়েকজন ভেতরে আটকে আছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

শনিবার (৬ জুলাই) সুরাটের শচীন পালি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি। ঘটনার পরপরই উদ্ধার অভিযান শুরু করে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা।

ঘটনাস্থলের ছবি ও ভিডিওতে দেখা যায় উদ্ধারকর্মীরা বড় বড় ভবনের ধ্বংসাবশেষ সরিয়ে নিয়ে কেউ আটকে আছে কিনা তার খোঁজ করছেন।

স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বরাতে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, শেষ কয়েকদিন ধরে সুরাটে টানা বৃষ্টি হচ্ছিলো। এর ফলে ওই ভবনটি ধসে পড়তে পারে।

সুরাটের কালেক্টর সৌরভ পারধি পিটিআইকে বলেছেন, স্থানীয় এক নারী তাদের জানিয়েছেন, ভবনের নিচে আরও তিন থেকে চারজন চাপা পড়েছে।

এ অবস্থায় উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে ভারতীয় বিশেষায়িত বাহিনী ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স (এনডিআরএফ) ও রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এসডিআরএফ)।

সুরাটের পুলিশ কমিশনার অনুপম সিং গাহলৌত বলেন, ধসে পড়া ভবনটি ২০১৬-১৭ সালের দিকে বানানো হয়েছে। আশা করি দুই থেকে তিন ঘণ্টার মধ্যে উদ্ধার অভিযান শেষ হবে।

চলতি বছরের মার্চে মরবি শহরে একটি নির্মাণাধীন মেডিকেল কলেজ ভবনের একটি অংশ ধসে চার শ্রমিক আহত হন। সাত ঘণ্টা ধ্বংসস্তূপে আটকে থাকার পর আরো এক শ্রমিককে উদ্ধার করা হয় সে সময়।



আহত   ভারত   গুজরাট   উদ্ধারকর্মী  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

অবৈধ অভিবাসীদের স্বস্তির খবর দিলেন যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ: ১০:১৮ পিএম, ০৬ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রথমদিনেই অবৈধ অভিবাসীদের জন্য স্বস্তি এনে দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার।

সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফের বরাতে শনিবার (০৬ জুলাই) বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অবৈধ অভিবাসীদের রুয়ান্ডা পাঠানোর পরিকল্পনা বাতিল করেছেন স্টারমার। সদ্য বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের নেতৃত্বাধীন অবৈধ অভিবাসীদের রুয়ান্ডা পাঠানোর পরিকল্পনা করেছিলেন।

ছোট ছোট নৌকায় করে অবৈধভাবে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের যুক্তরাজ্যে প্রবেশ ঠেকাতে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। তবে স্টারমার জানিয়েছেন, এটি কোনো কার্যকরী ব্যবস্থা হবে না।

তিনি বলেন, শুরু হওয়ার আগেই রুয়ান্ডা পরিকল্পনার মৃত্যু ও সমাধি হয়েছে। এটি কখনো অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ঠেকাতে কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা ছিল না। আমি কাজে দেয় না এমন কোনো ধরনের প্রতারণার কৌশল অব্যাহত রাখব না।

স্টারমার বলেন, ছোট নৌকায় করে আসা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের রুয়ান্ডায় পাঠানোর সম্ভাবনা মাত্র এক শতাংশ। গ্যাং সদস্যদের এটি খুব ভালো করে জানা। ফলে ঝুঁকিপূর্ণ উপায়ে ইউরোপে আসা অব্যাহত রেখেছে তারা।

রুয়ান্ডার পাঠানোর এ বিতর্কিত বিলটি চলতি বছরে এপ্রিলে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে পাস হয়। এ সময় বলা হয়েছিল, রুয়ান্ডা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের জন্য নিরাপদ ঠিকানা হবে।

এর আগে মানবিক দিক বিবেচনা করে রুয়ান্ডা পরিকল্পনাকে অবৈধ পরিকল্পনা বলে রায় দেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। তবে আদালতের রায়কে উপেক্ষা করে এটি পাস করেন ঋষি সুনাক। এরপর মে মাস থেকে এটি কার্যকর করতে ব্যাপক ধরপাকড় শুরু হয়।


যুক্তরাজ্য   অবৈধ অভিবাসী   প্রধানমন্ত্রী  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

কী আছে লেবার পার্টির অভিবাসন নীতিতে?

প্রকাশ: ০৯:০৫ পিএম, ০৬ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

যুক্তরাজ্যের সদ্যসমাপ্ত নির্বাচনে যে সব ইস্যু নিয়ে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো প্রচারণা চালিয়েছিল, তার মধ্যে সম্ভবত সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল অভিবাসন।

কনজারভেটিভ পার্টি অবশ্য বরাবরই তাদের প্রচারে অভিবাসনের প্রশ্নটিকে খুবই গুরুত্ব দিয়ে থাকে, তবে এবারে লেবার পার্টিও ঠিক সেই একই রাস্তায় হেঁটেছে। 

বিদেশ থেকে যত লোক ব্রিটেনে আসছেন এবং যত লোক ব্রিটেন ছাড়ছেন, এই দুয়ের মধ্যে যে ব্যবধান- সেই ‘নেট মাইগ্রেশন লেভেল’টা অবশ্য উভয় দলই কমিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। 

ভোটের আগে একটি প্রথম সারির বেসরকারি সংস্থার করা জরিপেও দেখা গিয়েছিল, দেশের ৪৩ শতাংশ লোক মনে করেন অভিবাসন ব্রিটিশ সমাজে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। আর অভিবাসন ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে বলে জানিয়েছিলেন ৩৭ শতাংশ লোক।

কিন্তু নির্বাচনে জয়ী লেবার পার্টির অভিবাসন নীতিতে ঠিক কী কী জিনিস ছিল? কনজারভেটিভ পার্টি বা টোরিদের অভিবাসন নীতির সাথে সেগুলোর পার্থক্যই বা কী?

ডিঙি নৌকায় অবৈধ অভিবাসন

প্রতি বছর হাজার হাজার লোক ইউরোপের মূল ভূখণ্ড থেকে ডিঙি বা ছোট নৌকায় চেপে ইংলিশ চ্যানেল পেরিয়ে ভিসা ছাড়াই যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করার চেষ্টা করে থাকেন।

সাগর পেরিয়ে আসা এই নৌকাগুলোকে ব্রিটেনের উপকূলে ভেড়ার আগেই আটকে দেয়া হবে, যেটাকে বলা হয় ‘স্টপ দ্য বোটস’- তা কিন্তু দুই প্রধান দলেরই প্রতিশ্রতিতে অন্তভু‍র্ক্ত ছিল।

চলতি বছরের প্রথম কয়েক মাসে (৭ জুন পর্যন্ত) চ্যানেল পেরিয়ে মোট ১১ হাজার ৯৫ জন অভিবাসী ব্রিটেনে প্রবেশ করেছে।

গত বছর (২০২৩) ও তার আগের বছরের (২০২২) একই সময় পর্যন্ত যতজন অবৈধ অভিবাসী ব্রিটেনের সাগরতটে এসে নামে, এবারের সংখ্যাটি তার তুলনায় যথাক্রমে ৪৬ শতাংশ ও ১১ শতাংশ বেশি।

এই রুটে অবৈধ অভিবাসন আটকানোর জন্য টোরি সরকার ফ্রান্সের সাথে সহযোগিতা বৃদ্ধি করেছিল, যাতে ওই নৌকাগুলোকে ব্রিটেনের পানিসীমায় প্রবেশ করার আগেই আটকে দেয়া যায়। তাছাড়া মানব পাচারকারীদের চক্রগুলোর মোকাবেলা করতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে সমঝোতাও সই করেছির তারা।

তবে এ ব্যাপারে ঋষি সুনাক সরকারের সবচেয়ে কঠোর ও বিতর্কিত পদক্ষেপ ছিল ‘রোয়ান্ডা নীতি’ ঘোষণা করা- যার আওতায় অবৈধ অভিবাসীদের ব্রিটেনে না রেখে সোজা আফ্রিকার দেশ রোয়ান্ডায় পাঠিয়ে দেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছিল।

কনজারভেটিভ পার্টির বক্তব্য ছিল, এই রোয়ান্ডা নীতি অবৈধ অভিবাসীদের ব্রিটেনে আসতেই নিরুত্সাহিত করবে।

আর লেবার পার্টির অবস্থান হলো, রোয়ান্ডা নীতি বাস্তবায়নের নামে যে অর্থ খরচ করা হচ্ছে তারা সেটা অভিবাসন রোখার জন্য আইন প্রয়োগের (‘এনফোর্সসেন্ট’) কর্মকাণ্ডে খরচ করবে।

নির্বাচনি প্রচারণার শুরুতেই তারা যে নীতিগুলো ঘোষণা করে, তার অন্যতম ছিল যে সব অপরাধী চক্র এই ডিঙি নৌকাগুলোতে মানুষ পাঠায় তাদের বিচারের আওতায় আনতে একটি নতুন ‘বর্ডার সিকিওরিটি কমান্ড’ গঠন করা হবে।

নির্বাচিত হলে লেবার পার্টি ‘পরিবর্তনের প্রথম যে সব পদক্ষেপ’ নেবে বলে ঘোষণা করেছিল, তার তিন নম্বরেই ছিল ‘শত শত নতুন বিশেষজ্ঞ তদন্তকারী’ নিয়োগ করার কথা। বলা হয়েছিল, এরা উগ্রবাদী দমনের বিশেষ ক্ষমতা ব্যবহার করে এই ‘বোট গ্যাং’গুলোকে নির্মূল করার কাজ চালাবে।

এছাড়াও লেবার পার্টি জানিয়েছে, তারা অবৈধ অভিবাসন রুখতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে নিরাপত্তা সহযোগিতা বাড়াবে, সন্দেহভাজন পাচারকারীদের তল্লাশি ও তাদের আর্থিক লেনদেন মনিটর করার জন্য পুলিশকে অতিরিক্ত ক্ষমতা দেবে এবং ইউভুক্ত দেশগুলো যাতে অবৈধ অভিবাসীদের ফিরিয়ে নেয় সে জন্য ইইউ-এর সাথে নতুন সমঝোতা করার আলোচনা করবে।

রোয়ান্ডা নীতিতে ভিন্ন অবস্থান

অভিবাসনের ইস্যুতে যে প্রশ্নটিতে কনজার্ভেটিভ ও লেবারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভিন্নতা- তা অবশ্যই বিতর্কিত রোয়ান্ডা নীতি।

গত এপ্রিল মাসেই ঋষি সুনাক সরকারের আনা ‘সেফটি অব রোয়ান্ডা বিল’ পার্লামেন্টে পাস হওয়ার পর আইনে পরিণত হয়েছে।

এর ফলে যদি কেউ বিশ্বের কোনও ‘নিরাপদ দেশ’ থেকে এসে অবৈধভাবে ব্রিটেনে প্রবেশ করেন তাহলে তাকে আফ্রিকার ওই দেশটিতে পাঠিয়ে দেয়া যাবে এবং তিনি সেখান থেকে অ্যাসাইলামের (আশ্রয়) আবেদন করতে পারবেন।

লেবারের নির্বাচনি ইশতেহারে পরিষ্কার বলা হয়েছে, তারা ক্ষমতায় এলে রোয়ান্ডা পরিকল্পনা পুরোপুরি বাতিল করা হবে। সুতরাং সেক্ষেত্রে অবৈধ অভিবাসীদের নিয়ে কোনো বিমান রোয়ান্ডার উদ্দেশে রওনা দেবে না।

তবে এতদিন যিনি লেবার পার্টির শ্যাডো হোম সেক্রেটারি (ছায়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী) ছিলেন, সেই ইয়িভেট কুপার কিন্তু অবৈধ অভিবাসীদের অ্যাসাইলামের আবেদন বাইরের কোনো দেশে প্রসেস করার সম্ভাবনা নাকচ করে দেননি।

লেবার পার্টির নেতা স্যার কিয়ের স্টারমারও গত বছর জানিয়েছিলেন, অভিবাসীদের আবেদন তৃতীয় কোনো দেশে প্রসেস করার লক্ষ্যে একটি ‘অফশোর স্কিম’ তারাও বিবেচনা করবেন- তবে সেই তৃতীয় দেশটি ওই অভিবাসীকে শেষ পর্যন্ত যেখানে ফেরত পাঠানোর কথা ভাবা হচ্ছে সাধারণত সেই রুটেই হবে।

তবে আন্তর্জাতিক আইনি সনদগুলোর প্রতি ব্রিটেনের অঙ্গীকার রক্ষিত হবে বলে লেবার পার্টি কথা দিয়েছে। তাদের ইশতেহারেও পরিষ্কার জানানো হয়েছে, ‘দ্ব্যর্থহীনভাবে আমরা বলতে চাই ব্রিটেন অবশ্যই ইসিএইচআরের (ইউরোপীয়ান কমিশন অন হিউম্যান রাইটস) সদস্য থাকবে।’

তবে যে অভিবাসীরা ইংলিশ চ্যানেল পেরিয়ে এরপরেও ঢুকবেন, তাদের ব্রিটেনে থেকেই অ্যাসাইলামের আবেদন করতে দেয়ার পুরনো ব্যবস্থায় ফিরে যাওয়া হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েই যাচ্ছে।

‘অ্যাসাইলাম ব্যাকলগ’

২০১৮ থেকে ২০২২ সালের ভেতরে ব্রিটেনে অ্যাসাইলাম সিকার বা আশ্রয়প্রার্থীদের আবেদনের পাহাড় জমতে শুরু করে, যেগুলো প্রসেসই করা যায়নি। ২০২৩ থেকে অবশ্য ‘ব্যাকলগে’র সেই সংখ্যাটা কিছুটা হলেও কমতে শুরু করেছে।

এ বছরের মার্চ মাসের শেষে হোম অফিসের (স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়) পরিসংখ্যান বলছে, তখন পর্যন্ত মোট ১ লাখ ১৮ হাজার ৩২৯ জন আবেদনকারী যুক্তরাজ্যে তাদের অ্যাসাইলামের ব্যাপারে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত জানার অপেক্ষায় রয়েছেন।

বস্তুত ২০১০ সালের তুলনায় ব্রিটেনে ‘অ্যাসাইলাম রিমুভালে’র সংখ্যাও (অর্থাৎ আবেদনকারীদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর সংখ্যা) প্রায় ৪০ শতাংশ কমে গেছে।

লেবার পার্টি প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, এই পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে তারা নতুন এক হাজার ‘কেসওয়ার্কার’ নিয়োগ করে একটি ‘রিটার্নস অ্যান্ড এনফোর্সমেন্ট ইউনিট’ গঠন করবে।

তাদের ইশতেহারে বলা হয়েছে, নিরাপদ দেশ থেকে আসা যে সব লোকের এখানে থাকার অধিকার নেই, তাদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া ‘ফাস্ট-ট্র্যাক’ বা ত্বরান্বিত করতে এই ইউনিট কাজ করবে। ফেরত পাঠানোর আরো নতুন নতুন ব্যবস্থা চালু করতেও আলোচনা চালানো হবে বলে তারা জানিয়েছে।

লেবার পার্টি আরো বলেছে, এই কাজের জন্য তারা দেশের ভেতরে ও বাইরে সিভিল সার্ভেন্টদের নিয়োগ করবে। বিদেশে নিযুক্ত কর্মকর্তারা সেই সব দেশের অভিবাসীদের ফেরানো নিয়ে ওই দেশের সঙ্গে সমঝোতা আলোচনা করবেন।

আর এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে অর্থ আসবে অ্যাসাইলম আবেদনের ‘ব্যাকলগ ক্লিয়ার করে’- কারণ এখন আশ্রয়প্রার্থীদের হোটেলে রাখতে যে অর্থ খরচ হচ্ছে তার অনেকটাই তখন সাশ্রয় করা সম্ভব হবে।

‘বৈধ অভিবাসন’ নিয়ে লেবার কী বলছে?

বৈধ পথে ব্রিটেনে সবচেয়ে বেশি অভিবাসন হয়ে থাকে মূলত দুটো পদ্ধতিতে- ওয়ার্ক মাইগ্রেশন ও স্টুডেন্ট মাইগ্রেশন। প্রথমটা বিশেষভাবে দক্ষ কর্মীদের জন্য, দ্বিতীয়টা শিক্ষার্থীদের জন্য।

ওয়ার্ক মাইগ্রেশনের আওতায় ব্রিটেনে সবচেয়ে বেশি লোক আসেন ‘স্কিলড ওয়ার্কার ভিসা’য়।

এখানে প্রার্থীকে কোনো সংস্থায় চাকরি নিয়ে আসতে হয়- সেই নিয়োগকর্তার তাকে ‘স্পনসর’ করতে হয়, এছাড়া প্রার্থীর দক্ষতা ও বেতনের ক্ষেত্রেও পূরণ করতে হয় বিশেষ কয়েকটি শর্ত।

গত ২ জুন স্যার কিয়ের স্টারমার ঘোষণা করেছিলেন যে যুক্তরাজ্যে আরো বেশি বেশি সংখ্যক কর্মীকে প্রশিক্ষণ দিয়ে এবং কাজের উপযুক্ত পরিবেশ রক্ষা করে তারা ‘নেট মাইগ্রেশনে’র সংখ্যা কমিয়ে আনবেন।

তিনি আরো জানান, যে সব নিয়োগকর্তা ব্যবসা চালানোর জন্য বিদেশ থেকে দক্ষ কর্মী আনার ওপরই নির্ভরশীল, তাদের সেই প্রবণতা বন্ধ করার জন্য আইন আনা হবে।

তাছাড়া লেবার পার্টি ব্রিটেনের নিজস্ব কর্মীদের বেশি করে প্রশিক্ষণ দেয়ার জন্যও আইন আনবে, যাতে করে কোম্পানিগুলোকে বিদেশ থেকে কর্মী নিয়োগ করতে না হয়।

তবে স্বাস্থ্য খাতের কর্মী ও সেবা প্রদানকারীদের (কেয়ার ওয়ার্কার) বিদেশ থেকে নিজের পরিবারের সদস্যদের ব্রিটেনে আনার ক্ষেত্রে যে নিষেধাজ্ঞা আছে, তা পরিবর্তন করার কোনো ‘পরিকল্পনা নেই’ বলেও লেবার পার্টি জানিয়েছে।

লেবারের ইশতেহারেও ‘নেট মাইগ্রেশন’ (যতজন ব্রিটেনে আসছেন আর যতজন ব্রিটেন ছেড়ে চলে যাচ্ছেন, তার ব্যবধান) কমিয়ে আনার কথা বলা হয়েছে- তবে তারা এর জন্য কোনো নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেনি।

২০১৯ সাল থেকে ব্রিটেনের ‘নেট মাইগ্রেশনে’ এককভাবে সবচেয়ে বড় ভূমিকা ছিল আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের।

বিদেশ থেকে আসা ছাত্রছাত্রীরা ব্রিটেনে তাদের গ্র্যাজুয়েশন (স্নাতক স্তরের পড়াশুনো) শেষ করার পর দু’বছর সে দেশে বসবাস ও কাজ করতে পারেন। যদি ওই শিক্ষার্থী পিএইডি ডিগ্রিধারী স্নাতক হন, তাহলে তার ক্ষেত্রে এই সময়সীমাটা হলো তিন বছর।

তবে তখন ওই ছাত্রছাত্রীদের স্টুডেন্ট ভিসাকে ‘গ্র্যাজুয়েট ভিসা’য় বদলে নিতে হয়।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে কনজারভেটিভ সরকার বেশির ভাগ বিদেশী শিক্ষার্থীর ব্রিটেনে তাদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আসার নিয়মটি বাতিল করে দিয়েছে।

শুধু পোস্টগ্র্যাজুয়েট (স্নাতকোত্তর) রিসার্চ কোর্সের ছাত্রছাত্রীরা এই নিষেধাজ্ঞা থেকে ছাড় পেয়েছেন।

লেবারের এতদিন যিনি শ্যাডো হোম মিনিস্টার ছিলেন, সেই ইয়িভেট কুপার আগেই জানিয়েছেন তারা জিতে ক্ষমতায় এলে এই পরিবারের সদস্যদের আনার নিষেধাজ্ঞাটি বহাল রাখা হবে।

তবে যে ‘গ্র্যাজুয়েট ভিসা’ পদ্ধতিতে পড়াশুনো শেষ করার পরও ছাত্রছাত্রীরা দু’বছর বা তিন বছর আরও থাকা বা কাজ করার সুযোগ পান, সেই পদ্ধতি পুনর্বিবেচনা করা হবে কি না তা নিয়ে লেবার পার্টি কিছু জানায়নি।


লেবার পার্টি   অভিবাসন নীতি  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

মন্ত্রী হচ্ছেন টিউলিপ

প্রকাশ: ০৮:২৬ পিএম, ০৬ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

যুক্তরাজ্যের নির্বাচনে জয় পেয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত চার নারী। এরমধ্যে রয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৌহিত্র টিউলিপ সিদ্দিক। নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছেন। এ নিয়ে টানা চারবার পার্লামেন্ট সদস্য হয়েছেন তিনি। অনেকের মনে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে টানা চারবার জয় পাওয়া এ বাংলাদেশি প্রার্থী যুক্তরাজ্যের মন্ত্রিসভায় জায়গা পাবেন কিনা।

শুক্রবার (৫ জুলাই) সকালে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ফলাফলে দেখা গেছে, টিউলিপ সিদ্দিকের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তার ধারেকাছেও আসতে পারেননি। নির্বাচনে তিনি ৪৮ দশমিক ৩ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। আর নির্বাচনে মোট ৬০ দশমিক ৭ শতাংশ ভোটগ্রহণ হয়েছে।

বিবিসি জানিয়েছে, হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড হাইগেট আসনে নির্বাচন করা টিউলিপ সিদ্দিক ২৩ হাজার ৪৩২ ভোট পেয়ে চতুর্থবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভ অ্যান্ড ইউনিয়নিস্ট পার্টির ডন উইলিয়ামস পেয়েছেন মাত্র ৮ হাজার ৪৬২ ভোট। তৃতীয় অবস্থানে আছেন গ্রিন পার্টি থেকে লরনা জেন রাসেল। তার প্রাপ্ত ভোট ৬ হাজার ৬৩০।

এ ছাড়া রিফর্ম ইউকে থেকে ক্যাথরিন বেকার ২ হাজার ৯৪০ ভোট পেয়েছেন। বাকি রিজয়েন ইইউ থেকে ক্রিস্টি এলান-কেন, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি থেকে স্কট এমেরি, জোনাথন লুই লিভিংস্টোন (স্বতন্ত্র) উল্লেখযোগ্য ভোট অর্জন করতে পারেননি।

এবারের পার্লামেন্ট নির্বাচনে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আটজন ব্রিটিশ নাগরিক লেবার পার্টি থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন। বর্তমানে এমপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এবং আবার মনোনয়ন পেয়েছেন—এমন চারজনের একজন হলেন টিউলিপ সিদ্দিক।

টিউলিপ বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ রেহানার জ্যেষ্ঠ মেয়ে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি। তিনি ১৯৮২ সালে লন্ডনের মিচামে সেন্ট হেলিয়ার হাসপাতালে জন্মগ্রহণ করেন। তার শৈশব ছিল বৈচিত্র্যময়। শৈশবে তিনি বাংলাদেশ, ভারত ও সিঙ্গাপুরে থেকেছেন। পরে কিশোর বয়সে লন্ডনে স্থিত হন এবং সেখানেই পড়াশোনা করেন। লন্ডনের কিংস কলেজ থেকে পলিটিকস, পলিসি ও গভর্নমেন্ট বিষয়ে তার স্নাতকোত্তর ডিগ্রি রয়েছে।

যুক্তরাজ্য সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন টিউলিপ সিদ্দিক। তিনি দেশটিতে শিশু এবং প্রাথমিক বিভাগ এবং প্রথমিক শিক্ষার ছায়ামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেনে। এছাড়া ট্রেজারি বিভাগের ছায়া অর্থনৈতিক সচিবও ছিলেন তিনি।

অতীতে ব্রিটিশ সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করলেও নতুন মন্ত্রিসভায় তাকে দেখা যাবে কিনা সেসব বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে দেশটিতে বিভিন্ন পদে মন্ত্রীদের নাম ইতোমধ্যে ঘোষণা করা শুরু হয়েছে।


টিউলিপ সিদ্দিক   যুক্তরাজ্য   নির্বাচন  


মন্তব্য করুন


ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

পশ্চিমবঙ্গে জব্দ ৩ কোটি ২৭ লাখ রুপির স্বর্ণের বার

প্রকাশ: ০৬:৪২ পিএম, ০৬ জুলাই, ২০২৪


Thumbnail

ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্তে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ উদ্ধার করেছে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। সীমান্ত থেকে ৩ কোটি ২৭ লাখ রুপির মূল্যের ৪.৭ কেজি স্বর্ণের বারসহ এক চোরাকারবারীকে গ্রেফতার করেছে বিএসএফ জওয়ানরা। 

বিএসএফ এক বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, শুক্রবার স্বর্ণের সম্ভাব্য চোরাচালানের তথ্য পেয়ে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলায় বিএসএফ দক্ষিণবঙ্গ সীমান্তের ৮ ব্যাটালিয়নের সীমান্ত চৌকির পুট্টিখালিতে অবস্থান নেয় বিএসএফ। এসময় ওই এলাকা থেকে বিভিন্ন আকৃতির ২২ টি স্বর্ণের বার জব্দ করা হয়। 

এই চোরাকারবারি স্বর্ণের চালানটি নিয়ে যাচ্ছিল তখনই হাতেনাতে ধরা পড়ে। জব্দ করা স্বর্ণের বারের মোট ওজন ৪.৭ কেজি এবং আনুমানিক মূল্য ৩ কোটি ২৭ লাখ ৫৯ হাজার রুপি।

বিএসএফ জওয়ানরা মথুরাপুর গ্রামের গভীর এলাকায় অতর্কিত অভিযান চালায়। তারা লক্ষ্য করে এক সন্দেহভাজন ব্যক্তি ঠাকুরী গ্রাম থেকে একটি স্কুটিতে করে মথুরাপুর গ্রামের দিকে আসছে। সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে শনাক্ত করার পর তাকে আটক করে সীমান্ত ফাঁড়িতে নিয়ে আসা হয়।  তল্লাশি চালিয়ে স্কুটির সিটের নিচে রাখা লাগেজ থেকে ২০টি স্বর্ণের ছোট বার এবং দুইটি বড় আকৃতির বার উদ্ধার করা হয়। 

গ্রেফতার ব্যক্তির নাম মাথুর দাস (নাম পরিবর্তিত)। তিনি পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার বাসিন্দা। জিজ্ঞাসাবাদে, ওই ব্যক্তি জানান, স্বর্ণের চালান নেওয়ার পরে সেটি তিনি বনগাঁয় পৌঁছে দিতে যাচ্ছিলেন। এ কাজের জন্য তিনি বেশ ভালো পারিশ্রমিক পেতেন। জব্দ করা স্বর্ণ পরবর্তী আইনি ব্যবস্থার জন্য 'ডিরেক্টরেট অফ রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্স' (ডিআরআই) কলকাতার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার, ৪ জুলাই নদীয়া জেলাতেই বিএসএফ এবং ডিআরআই একটি যৌথ অভিযানে ৬ কোটি ৮৬ লাখ রুপি মূল্যের ৯ কেজি ৬০০ গ্রাম স্বর্ণ বাজেয়াপ্ত করেছিল। 


পশ্চিমবঙ্গ   স্বর্ণের বার   বিএসএফ  


মন্তব্য করুন


বিজ্ঞাপন